শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৭ ১৪৩১

নির্বাচন ঘিরে মাঠে সেলিম ওসমান

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২৮ মে ২০২৩  

 

# শহর-বন্দরে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা দুইভাগে বিভক্ত

 

 

ঘনিয়ে এসেছে আগামী জাতীয় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচন ঘিরে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ইতোমধ্যে এই বছরকে প্রচারনা হিসেবে ঘোষনা করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন ইস্যুতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যরাও মাঠে রয়েছেন। কেননা বিভিন্ন সভায় নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বিএনপিকে নিয়ে হুঙ্কার দিয়েছেন। তার বিপরীতে বিএনপিও আওয়ামী লীগকে কোন ছাড় না দিয়ে রাজপথে আন্দোলন করে যাচ্ছেন।

 

কিন্তু এই দিকে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ ৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান নিরব থাকলেও বিদেশ থেকে এসেই মাঠে নেমেছেন তিনি। তিনিও তার নির্বচনী এলাকায় সম্প্রতি মিটিং সভা শুরু করেছেন। এছাড়া ব্যবসায়ীরা তাকে সংবর্ধনা দিয়েছেন সেখানেও তিনি অংশ গ্রহন করে আবারও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনার আহ্বান জানান তিনি। তবে শহর ও বন্দরে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক সাংসদ ও সেলিম ওসমানের বড় ভাই নাসিম ওসমানের পত্নী পারভীন ওসমানের পক্ষে জাতীয় পার্টির একটি ব্যাপক সমর্থন ভোগাতে পারে সেলিম ওসমানকে।

 

এদিকে ২০ মে সদর উপজেলার আলীরটেক ইউনিয়নের ডিক্রিরচর ফেরিঘাট পরিদর্শনে আসেন সাংসদ সেলিম ওসমান। সেখানে তিনি বলেছেন, তার আগের ডোবাই থেকে এসেই আলীরটেক ইউপির চেয়ারম্যান জাকির হোসেনের ডাকে তিনি ডিক্রিরচর ঘাট পরিদর্শনে ছুটে এসেছেন। কেননা জাকির চেয়ারম্যানের ডাকে তিনি সারা না দিতে পারেন নাই। সেখানে তিনি ডিক্রিরচর ঘাটের ফেরি দিয়ে গাড়ি দিয়ে আলীরটেক যাওয়ার আশা প্রকাশ করেছেন।

 

তার পর থেকে কখনো বন্দর কখনো গোগনগর আবার কখনো শহরে বিভিন্ন সভায় অংশ গ্রহন করছেন সাংসদ সেলিম ওসমান। তবে জাতীয় পার্টিকে সাংগঠনিক ভাবে শক্তিশালী করার জন্য কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় নাই এই সাংসদকে। তাছাড়া রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে প্রয়াত সাংসদ নাসিম ওসমান মারা যাওয়ার পর থেকে নারায়ণগঞ্জ জেলা মহাগর জাতীয় পার্টি দূর্বল হয়ে পরেছে। যা এখনো পর্যন্ত উঠে দাঁড়াতে পারে নাই।

 

সেলিম ওসমানকে জাতীয় পার্টির হয়ে তেমন একটা দলীয় অনুষ্ঠানে দেখা যায় না। সেই সাথে এখানে জাতীয় পার্টি কোনরকম ভাবে টিকে আছে। তাদের তেমন একটা কর্মসূচিও দেখা যায় না। তাই জাতীয় পার্টির তৃনমূলের নেতা কর্মীদের মাঝে বলা বলি হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য থাকলেও এখানে গত ৯ বছরের সাংগঠনিক ভাবে এই দলটি ঘুরে দাঁড়াতে ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে করেন খোদ দলীয় নেতারা। প্রয়াত এমপি নাসিম ওসমান জীবিত থাকাকালিন শহরে জাতীয় পার্টির অফিস থাকলেও তিনি মারা যাওয়ার পর তা শহরে ছেড়ে বন্দরে অফিস হয়েছে।

 

জানাযায়, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান শুক্রবার গোগনগর বঙ্গবন্ধু স্কুলের এক সভায় গিয়ে তার বক্তব্যে বলেন, এই গোগনগরে নাকি কিছু দিন আগে একটি হত্যা হয়েছে আবার শুনছি আরেকটি নাকি খুন হবে। আমি বলতে চাই তাদেরকে সাবধান হয়ে যান। ভালো হয়ে যান, ভালো না হলে এই গোগনগরে থাকতে পারবেন না। পিঠের চামড়া তুলে নেওয়া হবে।

 

ভোট প্রসঙ্গে এই সংসদ বলেন, এখানে একদলের দুইটি গ্রুপ হয়েছে। তোরা বলবি কিভাবে পাশ করেন দেখবো তোদের ভোট আমার লাগবে না। তোদের ভোট তোরাই পকেটে গুজে রাখ। আমি চাই আমার মা বোনেরা শান্তি থাকবে, তারা ভয় পাবে না। পরে তিনি গোগনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফজর আলীকেও প্রতিরোধ কমিটি গঠন করার নির্দেশ প্রদান করেন।

 

উল্লেখ্য এর আগে গোগনগরে ওয়েস্টের মালামাল আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ফজর আলীর বিচ্ছুবাহিনীর মাঝে মারামারি ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনার রেশধরেই সাবেক মেম্বার দৌলত নিহত হন এবং রবিন আহত হন। এই দুই বাহিনীর মাঝে কাশেম সম্রাট, রানা, ফয়সালের নেতৃত্বে রয়েছে দৌলত মেম্বারের লোকজন। তাদের বিপরীতে রয়েছে রবিনের ভাই রুবেল মেম্বারের বাহিনী। এই দুই বাহিনীর লোকজনই বর্তমান গোগনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফজর আলীর লোকজন। এই সকল কিছুর মাস্টার মাইন্ড হিসেবে রয়েছে এই জনপ্রতিনিধি এমন অভিযোগ রয়েছে ফজর আলীর বিরুদ্ধে।

 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে আগামী নির্বাচনে সাংসদ সেলিম ওসমান নির্বাচন করার ঘোষনা না দিলেও তিনি ইতোমধ্যে মাঠে নেমেছেন। তার মাঠে নামার মাধ্যমে বুঝা যাচ্ছে তিনি হয়তো আগামী নির্বাচনেও এই সদর বন্দর এলাকা থেকে অংশ গ্রহন করবেন। তারই চিত্র ফুঠে উঠেছে  বিভিন্ন এলাকার সভায় অংশ গ্রহনের মাধ্যমে।এস.এ/জেসি

এই বিভাগের আরো খবর