শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

নির্বাচনের আগাম ছক

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ২ সেপ্টেম্বর ২০২১  

# নির্বাচনকে টার্গেট করে পাল্লা ভারির চেষ্টা, অনুগামীদের পদায়নের ছক


# অনুগামীরা কমিটি পেলে তাদের পথ হবে মসৃন


# সিন্ডিকেটের কবলে পড়ায় দেখা দিয়েছে বিশৃঙ্খলা

   
 
আন্দোলন সংগ্রামে থাকেন লাপাত্তা। সারা বছর কাছিমের ন্যায় থাকেন খোলশ বন্দি। কেবল নির্বাচন এলেই তাদের কেউ কেউ উঁকি মারেন। তাই বলেকি তারা নিস্ক্রিয়? কর্মীদের উত্তর- ‘মোটেই না!’ কারণ, মাঠের রাজনীতিতে তারা কাছিমের চরিত্র ধারণ করলেও পর্দার আড়ালে থেকে বলয় তৈরীতে তারা বেশ পারদর্শী। প্রত্যেকের রয়েছে নিজ নিজ সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেট তারা বছরের পর বছর ধরে পুষে রাখেন। নিজ বলয় ভারি করার প্রশ্নে তারা সর্বদা সক্রিয় ও সচেষ্ট।

 

কারণ একটাই, জাতীয় নির্বাচন! মাঠের রাজনীতিতে নিস্ক্রিয় থাকলেও মনোনয়ন পাওয়ার লড়াইয়ে তারা অপ্রতিরোদ্ধ। সেই লক্ষ বাস্তবায়নে তারা নানা কৌশল অবলম্বন করে থাকেন। এক্ষেত্রে তাদের প্রধান কৌশল সিন্ডিকেট বৃদ্ধি ও পোক্ত রাখা। সেই কাজটিই নিরবে করে যাচ্ছেন বিএনপির আলোচিত-সমালোচিত কিছু নেতা। যারা কেবল নির্বাচন এলেই সরব হন। বাকিটা সময়ে থাকেন আড়ালে-আবডালে।

 


তাদের মধ্যে অন্যতম নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী মনির, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সাংসদ মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া দিপু, নজরুল ইসলাম আজাদ, শাহ-আলম, জেলা বিএনপির আহবায়ক এ্যাড. তৈমুর আলম খন্দকার ও সদস্য সচিব মামুন মাহমুদ।

 


অভিযোগ পাওয়া গেছে, জেলা বিএনপির আসন্ন ১০টি ইউনিট কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে তারা তাদের নিজ নিজ আসন কেন্দ্রিক কমিটিগুলোতে হস্তক্ষেপ করেছেন। অর্থাৎ যিনি যেই আসনের বাসিন্দা, সেই আসনের অধিনস্থ থানা কমিটিতে তাদের বলয়ের লোকদের পদস্থ করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ফলে ফতুল্লা, সিদ্ধিরগঞ্জ, রূপগঞ্জ, সোনারগাঁ ও আড়াইহাজারের কমিটিগুলোতে একাধিক সিন্ডিকেটের হস্তক্ষেপ পড়েছে। জেলা বিএনপির বর্তমান শীর্ষ দুই নেতা তৈমুর আলম খন্দকার ও মামুন মাহমুদও এসব সিন্ডিকেটের জালে জড়িয়ে পরস্পর দ্বিমত পোষন করছেন। এতেই নারায়ণগঞ্জে বিএনপির চলমান কমিটি গঠন কার্যক্রমে দেখা দিয়েছে বিরোধ, বিভাজন ও বিশৃঙ্খলা।

 


দলের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, ফতুল্লা থানা বিএনপির কমিটি গঠনে পৃথক ভাবে হস্তক্ষেপ করছেন নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহ-আলম ও গিয়াস উদ্দিন। সিদ্ধিরগঞ্জের কমিটি গঠনেও তাদের উভয়ের পৃথক হস্তক্ষেপ রয়েছে। একই ভাবে সিদ্ধিরগঞ্জের কমিটি গঠনে শাহ-আলম ও গিয়াস উদ্দিন ও মামুন মাহমুদের আলাদা সিন্ডিকেট রয়েছে। তাছাড়া, রূপগঞ্জে তৈমুর আলম খন্দকার, মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া দিপু ও কাজী মনিরসহ নজরুল ইসলাম আজাদের সিন্ডিকেট তৎপর রয়েছে। এখানে মামুন মাহমুদও একটি পক্ষের হয়ে কাজ করছেন। আড়াইহাজারেও নজরুল ইসলাম আজাদ এবং সোনারগাঁয়ে মান্নানসহ অন্যান্যদের সিন্ডিকেট তৎপর রয়েছে। এতে প্রতিটি ইউনিট কমিটিতেই তৈমুর ও মামুন মাহমুদের পৃথক সিদ্ধান্ত দেখা দিয়েছে।

 


সূত্রের দাবি, মনোনয়নের বাসনায় থাকা নেতারা আগামী জাতীয় নির্বাচনকে টার্গেট করেই আগাম ছক কষছেন। কারণ, স্থানীয় থানা ও ইউনিট কমিটিগুলো নিজ অনুসারীদের দ্বারা সাজানো হলে মনোনয়ন পাওয়া এবং পরবর্তী কার্যক্রমে তাদের পথ মসৃণ হবে। কিন্তু এসব কমিটিতে যদি প্রতিপক্ষ বা প্রতিদ্বন্দ্বী শিবিরের অনুগামী নেতারা থাকেন, তাহলে আগামীতে নির্বাচনী পথ তাদের জন্য হবে পিচ্ছিল। এই ধারণা থেকেই বিভিন্ন সিন্ডিকেট পর্দার আড়ালে রয়েছেন তৎপর। শেষ পর্যন্ত এসব সিন্ডিকেটের জালে আটকা পড়ে যোগ্য নেতারা বঞ্চিত হন কিনা- সেই শঙ্কাই ভাবিয়ে তুলছে বিএনপির মাঠ পর্যায়ের নেতাদের।


 

এই বিভাগের আরো খবর