শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৫ ১৪৩১

পোক্ত হচ্ছে বিটুর মাদকের সাম্রাজ্য!

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ১৭ জুন ২০২১  

তিনি একাধিক মাদক মামলার আসামী। মাদক বিক্রির দায়ে বিপুল পরিমাণ মাদকসহ আইশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তারও হয়েছেন বেশ কয়েকবার। তবে জামিনে মুক্তি পেয়ে আবারো সক্রিয় হন মাদক ব্যবসায়। বলছিলাম নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৮ নং ওয়ার্ডের মাদক বিক্রেতা সালাউদ্দিন বিটুর কথা। মূলত নগরীর তামাকপট্টি, শহীদনগর এবং সুকুমপট্টীর বিভিন্ন স্থানে মাদক বিক্রিতে এই বিটুর এখন একচ্ছত্র আধিপত্য।

 

সূত্র জানায়, ছোট থাকতেই পৈত্রিক বাড়ি মুন্সিগঞ্জ থেকে নারায়ণগঞ্জের তামাকপট্টি এলাকায় অবস্থিত তাঁর নানীর বাড়িতে চলে আসে বিটুর পরিবার। এরপর তাঁর বাবা মৃত আদিম উদ্দিন চৌধুরী হাবলু সেখানে জমি কিনে পরিবার নিয়ে স্থায়ী ভাবে বসবাস শুরু করেন। তবে বয়স বাড়ার সাথে সাথে নানান অপকর্মের সাথে জড়িয়ে পড়েন বিটু, সেইসঙ্গে তামাকপট্টি এলাকায় শুরু করেন মাদকের ব্যবসা। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিটুর মাদকের ব্যবসা এখন শুধু তামাকপট্টি এলাকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। ছড়িয়ে পড়েছে তামাকপট্টির দক্ষিণের জনপদ শহীদনগর, সুকুমপট্টি ও গোগনগরসহ এর আশেপাশের বিভিন্ন এলাকায়।

 

এছাড়া মাদকের পাশাপাশি এসব এলাকায় সম্প্রতি জমি দখল, মারপিট ও চাঁদাবাজীর মতো কাজেও লিপ্ত হয়েছেন বিটু। ১৮ নং ওয়ার্ডের শহীদনগর, সুকুমপট্টি ও মেম্বারপট্টিসহ বেশ কিছু এলাকার স্থানীয় ব্যক্তিরা জানায়, মাদক ব্যবসা পরিচালনার জন্য একাধিক কিশোর গ্যাং তৈরী করেছে বিটু। এরা দলে দলে ভাগ হয়ে এলাকা ভিত্তিক মাদক বিক্রি করেন। ফলে হাত বাড়ালেই ইয়াবা, গাঁজা, এমনকি ফেনসিডিলের মতো ভয়ানক মাদক পাওয়া যায় এখানে। তবে প্রশাসনের তেমন নজরদারী না থাকায় বিটু ও তার সহযোগীদের হাত ধরে, দিন দিন এখানে মাদকের বিক্রি বেড়েই চলছে। এতে করে এলাকাগুলোতে গত বেশ কয়েক বছরে অসংখ্য উঠতি বয়সী যুবক অতিমাত্রায় নেশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছে।

 

অথচ এ বিষয়ে জনপ্রতিনিধিদের কাছে অভিযোগ করেও বিটুকে প্রতিরোধ বা আইণেই আওতায় আনা সম্ভব হয়নি বলেও জানিয়েছে স্থানীয়রা। অন্যদিকে বিটুর প্রতিবেশীরা জানান, মাদক ব্যবসা, জমি দখল, চাঁদাবাজীসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে ইতিমধ্যেই অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন তিনি। তামাকপট্টি এলাকার সুলতান গিয়াসউদ্দিন রোডে একটি ৬ তলা বাড়িসহ ব্যাংকে নগদ অর্থ ও অন্যান্য স্থানে বিটুর আরো জমি-জমা আছে। তারা আরো জানান, সর্বশেষ ৫ থেকে ৭ মাস আগে, তামাকপট্টি এলাকায় তাঁর নিজ বাড়িতে তাকে ধরার জন্য আইশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত হন। কিন্তু এ সময় বাড়ির কুকুরদের ছেড়ে দিয়ে, সেখান থেকে পালিয়ে যায় বিটু।

 

এতে বেশ কয়েকজন আইশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য আহতও হয়েছেন। কিন্তু এর পরও তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ কবির হোসেন এ বিয়য়ে বলেন, নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় সর্বশেষ ওপেন ডে অন্ষ্ঠুানে আমি এই বিষয়টি তুলে ধরেছি। পাশাপাশি বেশ কয়েকজন মাদক বিক্রেতার নামও সেখানে উল্লেখ করেছি কিন্তু এরপরও দেখছি মাদক বিক্রেতারা এলাকায় প্রকাশ্যেই চলাফেরা করছে। তাই আমি প্রশাসনের কাছে একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে অনুরোধ করছি, মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হলে দ্রুতই এদের আইনের আওতায় নিয়ে আসুন।

 

তবে নারায়ণগঞ্জ সদর মাডেল থাকান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহজ্জামান জানান, আমি এখনো এইরকম কোন অভিযোগ পাইনি। কিন্তু এখন বিষয়টি আগে যাচাই করে দেখব। যদি সালাউদ্দিন বিটু অথবা অন্য কেউ মাদক বিক্রির সাথে জড়িত থাকে তাহলে, দ্রুতই তাদের আইনের আওতায় আনবো। 
 

এই বিভাগের আরো খবর