বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১১ ১৪৩১

প্রতিশোধমূলক হামলার আশঙ্কায় অভিভাবকেরা উদ্বেগ উৎকণ্ঠায়

মুগ্ধ পাঠক

প্রকাশিত: ২৭ মে ২০২২  

# নিহত সুব্রতর পরিবারের বসবাসের জন্য শফি প্রধান একটি ফ্ল্যাট ছেড়ে দিয়েছে

 

দুটি কিশোর গ্যাংয়ের মধ্যে ধারালো অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে ধারাবাহিক হামলা ও পাল্টা হামলার ফলশ্রুতিতে  গত ২২ মে  (রোববার) সুব্রত মন্ডল জয় (২২) নামে এক তরুনের মৃত’্যর পর শহরের ডি এন রোড, নন্দীপাড়া, গোয়ালপাড়া, ভুইয়ারবাগ ও দেওভোগ জিউস পুকুরপাড় এলাকায় কিশোর ছেলেমেয়ের অভিভাবকদের মাঝে এখন তীব্র আতঙ্ক ও উৎকন্ঠা বিরাজ করছে।

 

অভিভাবকদের ধারণা, সুব্রত যে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য ছিল (প্রধান গ্রুপ) সে গ্রুপ প্রতিশোধ স্পৃহায় এখন হন্যে হয়ে উঠেছে। যে কোন সময় এখন পাল্টা হামলা হতে পারে। এসব মহল্লার প্রতিটি গলিমুখে এখন সন্ধ্যার পর উদ্ধ্যত কিশোর গ্রুপ জটলা পাকিয়ে দাড়িয়ে থাকে।

 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, গত ১১ এপ্রিল সন্ধ্যা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত দেওভৈাগ জিউস পুকুরপাড়ে দুটি কিশোর গ্যাংয়ের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় কয়েকটি হিন্দু পরিবারের ঘর-বাড়িতে ভাঙ্গচুর ও লুটপাট চালানো হয় এবং দোলন (২২) নামে এক তরুনকে চাপাটি দিয়ে কুপিয়ে আহত করা হয়। এ ঘটনায় দোলনের চাচাতো ভাই নাঈম বাদী হয়ে এ ঘটনায় একটি মামলা করেন ।

 

সে মামলায় ১৪নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর  শফিউদ্দিন প্রধানের ভাই, ভাতিজা ও ছেলেকেও আসামী করা হয়। এ মামলায় ৫নং আসামী ছিল নিহত সুব্রত মন্ডল জয়। গত ১৫ মে রাতে প্রতিশোধমূলক হামলা চালিয়ে সুব্রত মন্ডল জয়কে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়।

 

৬দিন যমে-মানুষে টানাটানির পর গত ২২ মে সাইনবোর্ড এলাকার প্রো এ্যাকটিভ হাসপাতালে সুব্রতর হয়। মৃত্যুর পর সেদিন তার লাশ ডিএন রোড এলাকায় আনা হলে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। সে সময় বিগত নাসিক নির্বাচনে পরাজিত সাবেক কাউন্সিলর শফি প্রধান লাশের সামনে উস্কানীমূলক বক্তব্য রাখেন।

 

এলাকার একটি মহলের অভিযোগ, এ দুটি কিশোর গ্যাংয়ের পেছনে একজন বর্তমান ও একজন সাবেক কাউন্সিলর রয়েছেন। এসব গ্যাংয়ের কেউ মামলা খেলে বা আহত হলে এ দুজন তাদের মুশকিল আছান হয়ে মামলা খরচ ও চিকিৎসা খরচ যোগান দেন। বিগত নাসিক নির্বাচনে এ দুই কিশোর গ্যাং তাদের দুজনের হয়ে কাজ করেছে।

 

বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, এবারও আহত সুব্রতর চিকিৎসা খরচ যুগিয়েছেন সাবেক কাউন্সিলর শফি প্রধান। শুধু তাই নয়, গত মঙ্গলবার (২৪ মে) থেকে শফি প্রধান বসবাসের জন্য নিহত সুব্রতর মাকে ডি এন রোডে তার নবনির্মিত বহুতল ভবনের একাট ফ্ল্যাট ছেড়ে দিয়েছেন। সুব্রতর দুই বিবাহিত বোন শিপ্রা মন্ডল (ভ্রাতৃ হত্যা মামলার বাদী) ও লিপি মন্ডলকেও এ ফ্ল্যাটে এনে তোলা হয়েছে।

 

জানা গেছে, এদের খাওয়া দাওয়ার জন্য শফি প্রধান ইতিমধ্যে এক বস্ত্া চাল, পাঁচ কেজি পোলাউয়ের চাল সহ তেল ডাল পিয়াঁজও সরবরাহ করেছেন। সুব্রত হত্যা মামলার অন্যতম আসামী কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান যেন টাকা পয়সা দিয়ে বাদীকে কুক্ষিগত করতে না পারে সে জন্যই শফি প্রধানের এতো আয়োজন।

 

এলাকার নেতৃস্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের এক মুরুব্বী বলেন, এখানে সাবেক বর্তমান দুজন কাউন্সিলরই সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়কে পক্ষে রাখার একটি অশুভ প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। তবে তাদের পরষ্পর বিরোধিতায় হিন্দুরাই বলি হচ্ছে।

 

দু’দলের সংঘর্ষকালে হিন্দুদের বাড়িঘর ও ঠাকুর ঘরই ভাঙ্গচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। সংঘর্ষৈ সুব্রত খুনের মামলায় মানিক নামে যে তরুন গ্রেফতার হয়েছে সেও হিন্দু। অর্থাৎ ১৬নং ওয়ার্ডে হিন্দুরা এখন শাঁখের করাতের নীছে। এ করাত আসতেও কাটে, যেতেও কাটে।
 

এই বিভাগের আরো খবর