শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৭ ১৪৩১

পড়ে থেকেই নষ্ট কোটি টাকার অ্যাম্বুলেন্স

তানজিলা তিন্নি

প্রকাশিত: ১ আগস্ট ২০২২  

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ভারত সরকারের দেয়া উপহারের ১০৯ টি এম্বুলেন্সের ৭৮টি এসেছে বাংলাদেশে। বহু সুবিধা সংবলিত এসব এম্বুলেন্সের একটি রয়েছে নারায়ণঞ্জের খানপুর ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছরের মাঝামাঝি সময় এই এম্বুলেন্সটি আনা হলেও এখন পর্যন্ত এম্বুলেন্সটি ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না। রেজিস্ট্রেশনের জটিলতা, দক্ষ কারিগরের অভাব ও অতিরিক্ত জালানি খরচের ভয়ে এম্বুলেন্সটি চলানো হচ্ছে না বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়। 

 

ভারত সরকার বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে আরো উন্নত করার জন্য এ এম্বুলেন্স উপহার দেন। কিন্তু এ উন্নত মানের এম্বুলেন্স রোগীর সেবা না দিয়ে পরে আছে হাসপাতালের পিছনে । যার ফলে এম্বুলেন্সের যন্ত্রাংশ প্রায় নষ্ট হবার পালা। তাছাড়া বেসরকারি এম্বুলেন্স সেবা সরকারি এম্বুলেন্সের তুলোনায় ভালো হলেও অনেক রোগীর স্বজনরা আর্থিক সংকটের কারনে এম্বুলেন্স ব্যবহার না করেই নানা উপায় রোগীদের সুস্থ করার জন্য নিয়ে আসে। 

 

আবার অনেক সময় দেখা যায়, এম্বুলেন্সের অভাবে অনেক রোগী হাসপাতালের সেবা গ্রহণ করার আগেই মৃত্যুবরণ করেন। যেখানে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার অবস্থা এমন সেখানে একটি আধুনিক ও উন্নত মানের এম্বুলেন্স ফেলে রেখে নষ্ট করাটা মোটেই দেশের জন্য মঙ্গল নয়। এম্বুলেন্সের কারণে রোগী সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সেখানে এমন একটি বহু সুবিধা সংবলিত এম্বুলেন্স এভাবে ফেলে রাখার কোনো মানেই হয় না।

 

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে জানা যায় এম্বুলেন্সটিতে আইসিইউ ব্যবস্থা রয়েছে, লাইফ সার্পোটসহ আরো নানা সুযোগ সুবিধা রয়েছে। বেশিরভাগ এম্বুলেন্সে অক্সিজেন সিলিন্ডার ছাড়া তেমন কোনো সুবিধা থাকে না, কিন্তু এই এম্বুলেন্সটিতে রয়েছে আধুনিক ব্যবস্থা ও নানা রকম সুযোগ-সুবিধা। এরকম আধুনিক এম্বুলেন্স থাকা সত্ত্বেও এটি ব্যবহার না করে ফেলে রাখাটা মোটেও যুক্তিযুক্ত নয় বলে মনে করেন সচেতন মহল।

 

খানপুর তিনশ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার মো. আবুল বাশার যুগের চিন্তাকে জানান, এটার যে পরিমাণ তেল খরচ হবে তার একটা সরকারি অর্ডার আসবে। এবং এটা সেটিং এর ব্যাপার আছে, আইসিইউ এম্বুলেন্স। এর সেটিংও করে দিচ্ছে না, দক্ষ কারিগর নাই। চিঠি পাঠাচ্ছি । এটা নষ্ট হয়ে যাতে না যায় এ বিষয় আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমরা এই এম্বুলেন্সটির জন্য একটি স্পেশাল একটি গ্যারেজ করার জন্য ওটা নরমাল গ্যারেজে রাখা যাবেনা । তাছাড়া সরকারিভাবে এটার রেজিট্রেশন করতে হবে।

 

এ বিষয় নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি এড. মাহবুবুর রহমান মাসুম জানান, এমপি সাহেবের গাফলতির কারণে শুধু এম্বুলেন্স না তার পরিচালনার ত্রুটির জন্য হাসপাতালের এমন বেহাল দশা। তিনি আরো বলেন, এমন একটি আধুনিক এম্বুলেন্স ফেলে রাখা কোনো অবস্থাতেই যুক্তিযুক্ত নয়। এটি একটি গর্হিত অপরাধ বলে তিনি মনে করেন। যারা এই এম্বুলেন্সের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে আছে তাদের আইনের আওতায় আনা উচিত।এসএম/জেসি 

 

এই বিভাগের আরো খবর