শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ফজর আলীর শেল্টারে গোগনগরে অবৈধ হাট

অর্ণব হাসান

প্রকাশিত: ৪ জুলাই ২০২২  

# প্রশাসন নীরব ভূমিকায়
# নারায়ণগঞ্জে কোন অবৈধ হাট থাকবে না : ডিসি
# ম্যাজিষ্ট্রেট গিয়ে উচ্ছেদ করুক : এসপি

 

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলায় এবার ১৩টি কোরবানির পশু হাটের ইজারার সিডিউল বিক্রি হয়েছে। এই তালিকায় সদর উপজেলার গোগনগর ইউনিয়নের কয়লা ঘাট হাট এবং ৩য় শীতলক্ষ্যা সেতু সংলগ্ন কোরবানি পশুর হাট এই তালিকায় নেই। কিন্তু ইতোমধ্যে গোগনগরে ৩য় শীতলক্ষ্যা সেতু সংলগ্ন হাটে কোরবানির পশু উঠেছে।

 

যেহেতু সদর উপজেলার অনুমোদিত তালিকায় এই হাটের নাম না থাকায় সে হিসেবে ৩য় শীতলক্ষ্যা ব্রীজ সংলগ্ন হাটটি অবৈধ তালিকায় রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ গোগনগর চেয়ারম্যান ফজর আলীর শেল্টারে কিছু ব্যক্তি প্রভাব বিস্তার করে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এই হাটে কোরবানি পশুর হাটের আয়োজন করে। তাই সচেতন মহল প্রশ্ন তুলেন ফজর আলীর কত ক্ষমতা।

 

তার শেল্টারে গোগনগরে কেউ হত্যা করতে কর্ণপাত করেন না। ইতোমধ্যে ফজর আলী জনপ্রতিনিধি নামে এক বিতির্কিত ব্যক্তি হিসেবে গোগনগর তথা শহরে পরিচিতি পাচ্ছে। সেই সাথে তার বিরুদ্ধে একের পর এক নির্যাতিত ভুক্তভোগি পরিবার মুখ খুলছে। আর এই বিতর্কিত ফজর আলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবী তুলছেন। কিন্তু প্রশ্ন উঠে এই ফজর আলীর বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। তার কি এমন ক্ষমতা যে এই বিতর্কিত জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।


এ দিকে খোজ নিয়ে জানা যায়, সদর উপজেলার গোগনগরে ৩য় শীতলক্ষ্যা সেতুর পাশে কোরবানির পশুর হাটের আয়োজনের মাধ্যমে পশু বেচা কেনা চলছে। অথচ এই হাটটি এখনো সদর উপজেলার বৈধ পশুর হাটের তালিকায় নেই। কিন্তু পশু বেচা কেনা ঠিকই আছে। এলাকাবাসি জানান ফজর আলীর লোকজন এই হাট চালু করেছেন। সেই সাথে এই হাট পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তারা জোর পূর্বক ভাবে বেপরীদের ট্রালার থেকে গরু নামিয়ে নেন। অবৈধ এই পশুর হাটের খুটির জোর কোথায়। এই হাট পরিচালনায় সম্রাট সহ ফজর আলীর কাছের কয়েকজন লোক রয়েছে।


অন্যদিকে কয়েকদিন আগে এই হাটটি ইজারারদার রুবেল মেম্বার লিখে গোগনগরের বিভিন্ন দেয়ালে ব্যানার লাগান। কিন্তু এই রুবেল হলেন ফজর আলীর প্রধান খাস লোক। সেই সাথে তিনি গোগনগরের দৌলত মেম্বার হত্যা মামলার প্রধান আসামী অভিযোগ রয়েছে বিতর্কিত ফজর আলীর শেল্টারে দৌলত মেম্বারকে খুন করা হয়। তাই এই হাট নিয়ে গোগনগরে উত্তেজনা চলছে বলে জানান এলাকাবাসি।

 

সেই সাথে সরকার বিশাল রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হবে। তাই স্থানীয়রা দাবী তুলেন প্রশাসনের উচিৎ এখনি এই হাটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া। অন্যথায় এই হাটকে কেন্দ্র করে আরও দুই একটা হত্যার ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে করেন এলাকাবাসি। তার জন্য দায়ী থাকবেন ফজর আলী এবং প্রশাসন। কেননা তারা ব্যবস্থা না নেয়ায় এই ঘটনা পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে । কিন্তু আগে থেকে ব্যবস্থা নেয়া হলে মানুষ ঠিক থাকতে পারবে। 

 

এ দিকে সদর উপজেলার গোগনগরের এলাকাগুলোতে ঘুরে দেখা যায় কয়েকটি হাটের ইজারা হওয়ার আগেই বাঁশ গেড়ে রেখেছে। তার মাঝে গোগনগর ইউনিয়নের ৩য় শীতলক্ষ্যা সেতু সংলগ্ন পশুর হাট, আল সাবাহ হাট, বাড়ীরটেক হাটের বাঁশ গেড়ে রেখেছে। সেই সাথে পাঠান নগর হাট পিছিয়ে নেই।


খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গোগনগরের বিভিন্ন হাটের ইজারাদাররা ব্যানার-ফেস্টুন করে তাদের হাটের বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। সেই সাথে পোষ্টারিং করেছে। গোগনগর ইউনিয়নের সৈয়দপুর এলাকায় ৩য় শীতলক্ষ্যা সেতু সংলগ্ন বালুর মাঠে হাট গরু ছাগলের বিরাট হাট লিখে ব্যানার করা হয়েছে। এই ব্যনারে লেখা হাটের ইজারাদার রুবেল আহম্মেদ।

 

ব্যানারে আরও লেখা আছে, হাটে বেপারী ভাইদের জন্য থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। গরু ছাগলের চিকিৎসার জন্য সার্বক্ষণিক ডাক্তার রয়েছে। জাল টাকা সনাক্তকরণ মেশিন ও গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। এই হাটের বেচা কেনা চলছে। অথচ আজ হাটের সিডিউল বিক্রির শেষ দিন। আগামী কাল সিডিউল জমা দেয়ার শেষ সময়। বুধাবার টৈন্ডার উমুক্ত করা হবে। তখন যারা টেন্ডার পাবে তারা পশু হাটের ইজারাদার হিসেবে নাম লেখাবেন। কিন্তু শীতলক্ষ্যা সেতুর এই হাটের তালিকায় এখনো অনুমোদনের তালিকায় নেই।


জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম জানান, তাদের হাট বৈধ তালিকায় না থাকলে তাহলে ম্যাজিষ্ট্রেট অভিযান পরিচালনা করে তা বন্ধ করে দেওয়া হোক। আর কেউ যদি জোর পূবর্ক ভাবে গরু নামায় আমরা এমন অভিযোগ পাই তাহলে গরুর রশি তার কোমরে পরবে।


জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ বলেন, নারায়ণগঞ্জে কোন অবৈধ হাট চলতে দিবনা। আমরা খোজ নিয়ে দেখি তা সত্যতা পাওয়া গেলে উচ্ছেদ করা হবে। কেননা অবৈধ ভাবে কেউ হাট করতে পারবে না। তার পরিবেশ নষ্ট করে। অবৈধ হাট থাকলে তা উচ্ছেদ করা হবে।
 

এই বিভাগের আরো খবর