বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ফতুল্লা ইউনিয়ন শ্রমিক পার্টিতে বিতর্কিতরা

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ৩১ জুলাই ২০২১  

# বিএনপি পরিবার, যুবলীগ কর্মী ও মাদক বিক্রেতা রয়েছে শ্রমিক পার্টিতে


 
চলতি বছরের শুরুর দিকে অনেকটা নিরবেই গঠিত হয় জাতীয় পার্টির অঙ্গ সংগঠন ফতুল্লা ইউনিয়ন শ্রমিক পার্টির আহবায়ক কমিটি। এই কমিটিতে গুরুত্বপূর্ন পদে এসেছে ফতুল্লার দাপা ইদ্রাকপুরের বেশ কয়েকজন বিতর্কিত ব্যক্তি। যাদের অনেকেই এলাকায় মাদককারবারি থেকে শুরু করে নানা অপকর্মে জড়িত। রয়েছে মাদকের মামলাও। শুধু কী তাই? বিতর্কিত এই ব্যক্তিরা শ্রমিক পার্টির কমিটিতে এসে কমিটি এবং প্রভাবশালী কিছু নেতার নাম ভাঙ্গিয়ে এলাকায় বিতর্কিত কর্মকান্ড করে বেড়াচ্ছে বলে একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে।

 

তাই ফতুল্লা ইউনিয়ন শ্রমিক পার্টির ওই কমিটি নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। জানা গেছে, কমিটির আহবায়ক দাপা খাঁ-বাড়ি এলাকার বিতর্কিত নাদিম। নাদিম মূলত চরমোনাই’র মুরিদ এবং এযাবৎ ফতুল্লায় চরমোনাইয়ের পক্ষে বেশ ভূমিকা রেখেছিলেন। ২০১৩ সালে ঢাকার শাপলা চত্বরের সমাবেশে এই নাদিমের নেতৃত্বেই ফতুল্লা থেকে বহু লোক শাপলা চত্বরে গিয়েছিলো। গত কয়েক বছর আগে এই চতুর নাদিম এলাকায় প্রভাব বিস্তার করতে যোগ দেয় ফতুল্লা থানা যুবলীগের সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর সোহেল আলীর বলয়ে। মীর সোহেল আলীর সাথে তাকে বেশ কয়েকটি কর্মসূচিতে দেখাও গিয়েছিলো। তখন এলাকায় নিজেকে যুবলীগের নেতা হিসেবেই পরিচয় দিতো এই নাদিম। কিন্তু মীর সোহেলের সাথে থেকে খুব একটা সুবিধা করতে না পাড়ায় রাতারাতি ভোল পাল্টে ফেলেন তিনি।

 

চাষাঢ়ার বিতর্কিত নেতা ও এক সময়ের ওসমান পরিবারের প্রভাবশালী এক নেতার সেকেন্ড ইন কমান্ডের দায়িত্বে থাকা তরিকুল ইসলাম লিমনের সাথে হাত মেলায় চতুর এই নাদিম। মূলত লিমনের সাথে সক্ষতা করেই নাদিম আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন যুবলীগের ছায়া থেকে বেড়িয়ে পাড়ি জমায় জাতীয় পার্টিতে। রাতারাতি তিনি হয়ে যান জাতীয় পার্টির অঙ্গ সংগঠন ফতুল্লা ইউনিয়ন শ্রমিক পার্টির আহবায়ক। এই কমিটিরই যুগ্ম আহবায়কের পদ লাভ করেছেন বিএনপি পরিবার থেকে উঠে আসা স্বপন।

 

জানা গেছে, স্বপন খোঁজপাড়া এলাকার করিম ড্রাইভারের ছেলে। করিম ড্রাইভার বিএনপির সহযোগি সংগঠন ফতুল্লা ইউনিয়ন শ্রমিক দলের  সহ-সভাপতি। তার ভাই মৃত নয়ন ছিলেন ফতুল্লা ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক। মূলত পারিবরিক ভাবে স্বপনও বিএনপির রাজনীতির সাথেই জড়িত ছিলেন। কিন্তু বিএনপি দীর্ঘ বছর ক্ষমতায় না থাকায় স্বপন ভোল পাল্টে যোগ দিয়েছেন জাতীয় পার্টিতে। এমনকি বিতর্কিত লিমনের হাত ধরে স্বপন বনে গেছেন ফতুল্লা ইউনিয়ন শ্রমিক পার্টির যুগ্ম আহবায়ক। অন্যদিকে, দাপা ইদ্রাকপুর ও খোঁজপাড়ার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী হাসানও রয়েছেন এই কমিটির ভাইটাল পদে।

 

অথচ, খোঁজপাড়ার এই হাসানই গত কয়েক বছর আগে ৫শ’ বোতল ফেন্সিডিল সহ ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে কারাবান্দি ছিলেন। মাদকের ওই মামলাটি এখনো চলমান আছে বলে জানা গেছে। সূত্র জানায়, মাদক ব্যবসায়ী হাসান মূলত মীর সোহেলের অধিনে রাজনীতি তথা মিটিং মিছিলে আদম সাপ্লাই করতো। এর মাধ্যমে এলাকায় নিজেকে যুবলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে গোপনে মাদক ব্যবসা চালাচ্ছিল এই হাসান। পরে পুলিশের হাতে ফেন্সিডিলসহ গ্রেফতার হওয়ার পর হাসানকে কাছে ভিরতে দেয়নি মীর সোহেল। মাদক ব্যবসা করায় মীর সোহেলের কাছ থেকে বিতারিত হয়ে হাসান যুবলীগের ভোল পাল্টে হাত মেলায় লিমনের সাথে। সেই সুবাধে হাসানও পেয়েছেন ফতুল্লা ইউনিয়ন শ্রমিক পার্টির ভাইটাল পদ।

 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হাসানের মাদক ব্যবসা এখনো চলমান আছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নাদিম, স্বপন ও হাসান ফতুল্লা ইউনিয়ন শ্রমিক পার্টির নাম ভাঙ্গিয়ে এলাকায় অধিপত্ব বিস্তার করতে ফতুল্লার দাপা ইদ্রাকপুর এলাকায় রেলওয়ের কিছু জায়গা অবৈধ ভাবে দখল করে মানসিক প্রতিবন্ধি ইয়াসিনের বাড়ির সামনের জায়গায় গড়ে তুলছেন কার্যালয়। বোদ্ধামহল বলছেন, রাতারাতি ভোল পাল্টে ফেলা এই বিতর্কিত ব্যক্তিরা মূলত বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক দলের সাইনবোর্ড লাগিয়ে অনৈতিক সুবিধা ভোগ করে থাকে। প্রভাবশালী নেতাদের নাম ভাঙ্গিয়ে এভাবেই মাদক ব্যবসাসহ নানা অপকর্ম করে বেড়ায় এই সুবিধা ভোগিরা।  
 

এই বিভাগের আরো খবর