শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ফতুল্লা ইউনিয়নের প্রতি ওয়ার্ডে ২৫ প্রার্থী

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ২২ নভেম্বর ২০২১  

# এতো প্রার্থীর হিড়িকে এলাকার মানুষও উৎসুক
 

 সদর উপজেলায় ৭টি ইউনিয়নের ৬টি নির্বাচন হওয়া  সত্ত্বেও সীমানা সংক্রান্ত মামলা জটিলতার কারণে ৩০ বছর ফতুল্লা ইউনিয়নে নিবার্চন হয়নি। আর এতে করে ভোটররা এলাকার উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত ছিলেন। কিন্তু তফসিল অনুযায়ী আগামী ২৩ ডিসেম্বর ফতুল্লা ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সর্বশেষ ১৯৯২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত এ ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছাড়াও মারা গেছেন ৬ জন মেম্বার। একজন পদত্যাগ করেছেন আর জীবিত আছেন মাত্র ৫ জন মেম্বার।


খোঁজ নিয়ে জানাযায়, এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দের শতাধিক প্রার্থী মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ জন্য এক একটি ওয়ার্ড থেকে প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন করে মেম্বার পদে প্রার্থী হচ্ছে। যা নিয়ে রীতিমত এলাকার ভোটারদের মাঝে ব্যাপক আলোচনা তৈরী হয়েছে। একই সাথে প্রার্থীরা মনোনয়ন ফরম ক্রয় করতে এসে জানান, ত্রিশ বছর পর ফতুল্লা ইউপির নির্বাচন হচ্ছে তাই তারা সকলে এলাকার সেবা করার সুযোগ চান। কিন্তু প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে সুযোগ পাবেন একজন করে। আর তা ২৩ ডিসেম্বর ভোটারদের ভোটের মাধ্যমে নির্ধারণ হবে।
জানা যায়, সর্বশেষ ১৯৯২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন হয়। ওই নির্বাচনে জয়ী চেয়ারম্যান নুর হোসেন বহু আগেই মারা গেছেন। মারা গেছেন ৫ জন সদস্যও (মেম্বার)। সংরক্ষিত আসনের একজন নারী সদস্য স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে চলে গেছেন অনেক আগেই। লুৎফর রহমান স্বপন নামে একজন (মেম্বার) সদস্য দীর্ঘদিন ধরে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন। 

 

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে ফতুল্লা ইউনিয়নের নির্বাচন ঠেকাতে সীমানা সংক্রান্ত জটিলতা দেখিয়ে একটি মামলা করা হয়। মামলার বাদী ছিলেন ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের কুতুবআইল এলাকার বাসিন্দা কদর আলী। এছাড়াও এ ইউনিয়নকে ঘিরে ২০০২ সালে হানিফ মাতবর নামে এলাকার আরও এক ব্যক্তি হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন করেন। ২০০৬ সালে মামলাটি খারিজ করে দেন আদালত। তবে উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন চলমান থাকায় ফতুল্লা ইউনিয়নে নির্বাচন করা সম্ভব হয়নি। অবশেষে সম্প্রতি রিট পিটিশন মামলাটিও খারিজ করেন হাইকোর্ট। ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় রয়েছে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, জেলা ও দায়রা জজ আদালত, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়, জেলা পরিষদ কার্যালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক সরকারি-বেসরকারি কার্যালয়।


এদিকে উপজেলা নির্বাচন অফিসের তথ্যানুযায়ী, ইতিমধ্যে ফতুল্লা ইউনিয়ন নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৭ জন প্রার্থী মনোনয়ন ফরম ক্রয় করেছে। একই সাথে সংরক্ষিত এবং সাধারণ সদস্য পদে দেড় শতাধিক প্রার্থী মনোনয়ন ফরম ক্রয় করে। বাকী ৪ দিনে আরো অর্ধশতাধিক প্রার্থী মনোনয়ন ফরম ক্রয় করতে পারে বলে জানান এলাকাবাসি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, দীর্ঘদিন নির্বাচন না হওয়ায় এলাকার উন্নয়ন মূলক কাজ করার জন্য অনেক প্রার্থী আগ্রহী হয়ে মাঠে ময়দানে প্রচার প্রচারনা নেমেছে। সেই সাথে ফতুল্লার বিভিন্ন ওয়ার্ডের প্রার্থীরা ত্রিশ বছর পর ভোটারদের মনজয়ের চেষ্টা করে যাচ্ছে। আবার কেউ কেউ ঘরে ঘরে উন্নয়নের বার্তা নিয়ে যাচ্ছে।


রোববার বিকেলে সদর উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে ফতুল্লা ইউপির প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা নেয়ার সময় উপজেলা নির্বাচন অফিসার আফরোজা খাতুন বলেন, যে সকল প্রার্থী এখনই ব্যানার-ফেস্টুন টানিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। একই সাথে যারা নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘন করবে তাদের শোকজ করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ফতুল্লায় কোন অনিয়ম হতে দেয়া হবে না। এখানে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে।


ফতুল্লার একাধিক ভোটাররা জানান, ৩০ বছর পর ফতুল্লাবাসী নির্বাচন পেয়ে ভোট প্রয়োগ করতে যাচ্ছে। তাই আমরা বুঝে শুনে এবার যোগ্য ব্যক্তিকে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করবো। যেহেতু ইতিমধ্যে নারায়ণগেঞ্জর অন্যান্য ইউনিয়ন গুলোতে যেভাবে মানুষ ভোট প্রয়োগ করতে পেরেছ একইভাবে যদি ফতুল্লা ইউনিয়ন নির্বাচনে ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রর্থীকে ভোট দিতে পারে তাহলে যোগ্যব্যক্তি জনপ্রতিনিধি হতে পারবে।


ফতুল্লা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান স্বপন বলেন, এককভাবে দলীয় প্রতীক নৌকার জন্য কেন্দ্রে আমার নাম প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। যেহেতু বঙ্গবন্ধুর  আদর্শে রাজনীতি করে আসছি এবং আমার নেতা শামীম ওসমানের নেতৃত্বে দলের হয়ে অনেক আন্দোলন সংগ্রামে ত্যাগ স্বীকার করেছি তাই আশা করি আমিই নৌকা পাবো। আমি ১০ বছরে  মানুষের জন্য যেভাবে কাজ করেছি এই কাজের ধারাবাহিকতা রক্ষার্থে মানুষ আমাকে ভোটের মাধ্যমে জয়ী করবে। আমার সাথে একাধিক প্রার্থী হলেও তাদের  সাথে আমি লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত।
 

উল্লেখ্য,ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ২৫ নভেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ, ২৯ নভেম্বর মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই। ৩-৫ ডিসেম্বর আপিল নিষ্পত্তি, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ৬ ডিসেম্বর এবং প্রতীক বরাদ্দ করা হবে ৭ ডিসেম্বর। ভোটগ্রহণ করা হবে ২৩ ডিসেম্বর।

এই বিভাগের আরো খবর