শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ফতুল্লায় নৌকা ঠেকাতে মাঠে ছয় প্রার্থী

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ২৬ নভেম্বর ২০২১  

# ১০ বছর চেয়ারম্যান থেকেও জলাবদ্ধাতার সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ স্বপন  
 

দীর্ঘ ৩০ বছর পরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ফতুল্লা ইউনিয়নের নির্বাচন। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে সকল জল্পনা কল্পনাকে অবসান করে ফতুল্লা ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী খন্দকার লুৎফর রহমান স্বপন সহ সাতজন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছে। সাত জনের মাঝে দলীয় ভাবে ইসলামী আন্দোলন থেকে মনোনয়ন জমা দিয়েছে শাহ জাহান আলী। এছাড়া বাকি ৫ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছে।

 

 রাজনীতিবিদদের মতে, ৩০ বছর পর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাওয়ায় এখানে একাধিক প্রার্থী হয়েছে। তবে ফতুল্লার পাশের ইউনিয়ন কুতুবপুরে বিনা ভোটে নৌকা নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছে বিএনপি থেকে আসা মনিরুল আলম সেন্টু। ওই ইউনিয়নে এককভাবে পার পেলেও ফতুল্লায় নৌকার প্রার্থী স্বপন এককভাবে পার পাচ্ছে না। কেননা ইতিমধ্যে তার বিপক্ষে ৬ প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছে। আর এনিয়ে অনেকটা চিন্তায় আছেন লুৎফর রহমান স্বপন। দল থেকে বিদ্রোহী প্রার্থী না হলেও স্বতন্ত্র থেকে একাধিক প্রার্থী হয়েছে। তারা সকলেই নৌকা ঠেকাতে মাঠে নেমেছে বলে জানান ফতুল্লাবাসি।


সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসের তথ্য অনুযায়ী ফতুল্লা ইউনিয়ন নির্বাচনে সাতজন চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন জমা দিয়েছে। তার মাঝে আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতীক নিয়ে মনোনয়ন জমা দিয়েছে লুৎফর রহমান স্বপন। তার বিপরীতে ইসলামী আন্দোলন মনোনীত হাত পাখা প্রতীক নিয়ে মনোনয়ন দাখিল করেছে শাহ জাহান আলী। এছাড়াও স্বতন্ত্র থেকে পরেশ চন্দ্র দাস, আলী আজম, কাজী দেলোয়ার হোসেন, মো. মহসিন মিয়া, মোহাম্মদ রিপন মনোনয়ন জমা  দেন। তারা প্রত্যেকেই নৌকার বিপক্ষে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে প্রার্থী হয়েছে। প্রার্থীদের বক্তব্য অনুযায়ী তারা নির্বাচ পর্যন্ত মাঠে থাকবে। তাদের হুমকি-ধমকি দিয়ে কেউ বসাতে পারবে না। একই সাথে প্রত্যেকেই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদি। তাদের কাউকে কোন ধরণের হুমকি-ধমকি দিয়ে সরাতে পারবে না। তবে নির্বাচনে ভোটের মাধ্যমে যে জয়ী হবে প্রত্যেক প্রার্থীই তা মেনে নিবে বলে জানান। অন্যদিকে সংরক্ষিত এবং সাধারণ সদস্য পদে ১৩৪ জন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছে। চেয়ারম্যান এবং মেম্বার নিয়ে ফতুল্লা ইউনিয়ন নির্বাচনে মোট ১৪১ জন ব্যক্তির মনোনয়ন জমা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানাযায়, ৩০ বছর যাবৎ ফতুল্লার নির্বাচন না হওয়ায় এখানকার উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছে মানুষ। এই এলাকার বিভিন্ন রাস্তাঘাটে ভোগান্তিতে পরে মানুষকে চলাচল করতে হচ্ছে। একই সাথে অনেক জায়গায় এখনো ভোগান্তি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। 

 

এছাড়া স্থানীয়দের অভিযোগ স্বপন মেম্বার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হওয়ার পর তেমন একটা উন্নয়ন করতে পারে নাই। তিনি ফতুল্লা এলাকার বাসিন্দা হয়েও এখানকার জলাবদ্ধাতার সমস্যার কোন সমাধান দিতে পারে নাই। এখানকার বিভিন্ন এলাকায় সারা বছর জুড়ে রাস্তায় পানি উঠে থাকে। আর এই পানি মাড়িয়ে ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে এলাকার শিশু-কিশোর আবাল-বৃদ্ধদের ভোগান্তি নিয়ে চলাচল করতে হয়। অপরদিকে লুৎফর রহমান স্বপন জানান, এবারের নির্বাচনে তিনি জয়ী হতে পারলে জলাবদ্ধতার সমস্যার সমাধন সবার আগে করবেন। কিন্তু তার এই প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন নিয়ে ধোঁয়াশায় আছেন এলাকার ভোটাররা।


স্থানীয়র জানান, আমার ফতুল্লায় সুষ্ঠুভাবে নিজেদের পছন্দের ব্যক্তিকে ভোট দিতে চাই। সঠিকভাবে ভোট প্রয়োগ করে যোগ্যব্যক্তিকে জনপ্রতিনিধি বানাতে চাই। যাকে দিয়ে এলাকার উন্নয়ন হবে তাকেই আমরা বেছে নিবো। সেই সাথে মানুষ যাকে কাছে পাবে এবং যার সাথে মন খুলে কথা বলতে পারবে তাকেই ভোট দিবে। বর্তমানে যে আছে তিনি ক্ষমতাসীন দলের নেতা হওয়ায় তার সাথে মানুষ মন খুলে কথা বলতে পারেন না। তার কাছে গত ১০ বছরে তেমন কোন উন্নয়ন এলাকাবাসি পায় নাই। তাই তার থেকে ভোটাররা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। ফতুল্লার মানুষ পরির্বতন চায়। এখানকার মানুষ সৎ ক্লিন ইমেজের ব্যক্তিকে বেছে নিবেন বলে জানাযায়।


ফতুল্লা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী কাজী দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমাকে ফতুল্লার মুরব্বিরা অনুরোধ করায় আমি নির্বাচনে দাঁড়িয়েছি। আশা করি সকলের দোয়ায় ভোটের মাধ্যমে জয়ী হয়ে মানুষের সেবা করতে পারবো। নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত থাকবো।


নৌকার প্রার্থী লুৎফর রহমান স্বপন বলেন, আমি এবারের নির্বাচন জয়ী হতে পারলে সবার আগে আমাদের প্রধান সমস্যা জলাবদ্ধাতা তার সমাধান করবো। আমি বিশ্বাস করি মানুষের ভোটের মাধ্যমে জয়ী হতে পারবো।  

এই বিভাগের আরো খবর