বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

ফলাফলে আত্মতুষ্টি নয়, প্রয়োজন ভর্তির জন্য কঠিন প্রস্তুতি

লতিফ রানা 

প্রকাশিত: ১৬ অক্টোবর ২০২০  

এইচএসসি’র এবারের ফলাফলের পদ্ধতিতে আত্মতুষ্টিতে না ভূগে সামনে আসন্ন ভর্তি পরীক্ষার জন্য কঠিন প্রস্তুতি নিতে হবে বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন নারায়ণগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) রুমন রেজা ও মর্গ্যান গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ অশোক কুমার সাহা (অশোক তরু)।
 
বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) যুগের চিন্তা আয়োজিত এবং ক্যামব্রিয়ান স্কুল এন্ড কলেজ এর শিক্ষিকা উম্মে সালমা স্বর্ণা’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত শিক্ষা বিষয়ক ফেসবুক লাইভ টকশো ‘শিক্ষাঙ্গন’ এ অতিথি হিসেবে আলাপকালে এধরণের মতামত প্রকাশ করেন তারা। 


এই সার্টিফিকেটের গুরুত্বের অবমূল্যায়নের কোন সুযোগ নেই বলে তারা সহমত পোষণ করেন। অনুষ্ঠানের অলোচ্য বিষয় ছিল ‘এবারের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়ন ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি চিন্তা’।

 
এসময় অধ্যক্ষ রুমন রেজা বলেন, জীবনে যদি কোন সাফল্য অর্জণ করতে হয় তাহলে তাদের বহুদুর পর্যন্ত হাটতে হবে। কোন শিক্ষার্থীর যদি প্রস্তুতি ভাল না হয় তাহলে পরবর্তীতে প্রতিযোগিতায় সে টিকবে না। 

 

যারা এভাবে পাস করলো তাদের দায়িত্ব আরো বেড়ে গেল। সে এখন প্রশ্নের সম্মুখীন হলো তাই পরবর্তীতে সে যদি তার যোগ্যতা প্রমান করতে না পারে, সে বিষয় মাথা রেখেই নিজের মর্যাদা রক্ষার জন্য তাকে যোগ্যতা অর্জন করতে হবে।
 
তিনি মনে করেন, এই ফলাফলে আত্মতুষ্টিটে না ভুগে পরবর্তী জীবনে নিজেকে যৌক্তিক একটা জায়গায় দাঁড় করাতে তাদের কঠিন প্রস্তুতি নিতে হবে। তা নাহলে তার এই ফলাফলটা হাস্যকর ও প্রশ্নের মুখোমুখি হবে। 

তার মতে, ভর্তির সময় প্রবল প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে শিক্ষার্থীকে মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে টিকে থাকতে হবে।
 
উচ্চমাধ্যমিকের সময় ইচ্ছা করলেই কেন্দ্র বাড়ানো সম্ভব না হলেও ভর্তি পরীক্ষার সময় সেটা সম্ভব উল্লেক করে তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষ সেটা মাথায় রেখেই বিষয়টি বিবেচনা করবে। আশাকরি তখন স্বাস্থ্যগত কোন সমস্যা হবেনা।
 
সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, যে কোনভাবেই পরীক্ষা নেয়ার পক্ষেই ছিল সরকার। তাই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে এবং পরীক্ষা নেয়ার অনুকুল পরিবেশের অপেক্ষায়ই সরকার এত সময় নিয়েছে। কিন্তু যখন কোনভাবেই সম্ভব হয়নি তখন সরকার বাধ্য হয়েছে এইভাবে পাসের সিদ্ধান্ত নিতে।
 
তবে সৃজনশীল বা বহুনির্বাচনী পরীক্ষা যে উদ্দেশ্যে শুরু করা হয়েছে সে উদ্দেশ্য সফল হচেছনা বলে তিনি মত প্রকাশ করেন। তাই যে উদ্দেশ্যে এই প্রক্রিয়া করা হয়েছে তা কতটুকু বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে সেটাই প্রশ্ন।
 
তবে এই সার্টিফিকেটের অবমূল্যায়নের বিষয়ে তিনি একমত না। তার মতে একজন শিক্ষার্থীকে প্রতিমুহুর্তেই প্রতিযোগিতা করতে হবে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিসহ কর্মক্ষেত্রেও প্রতিযোগিতা করতে হবে। এখন এই প্রশ্নর না তুলে শিক্ষার্থী কোন্ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন্ বিষয়ে ভর্তি হবে সেটার জন্য তাদের নিজেদেরকে তৈরী করতে হবে।
 
এই বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে অধ্যক্ষ অশোক কুমার সাহা বলেন, এইচএসসি পাসের এইবারের পদ্ধতি বাংলাদেশে প্রথম। সরকার বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেছে। 

কিন্তু কোনভাবেই পরীক্ষা নেয়ার সেই পরিবেশ তারা পায়নি। তাই সরকার শিক্ষার্থীদের তাদের সন্তান মনে করেই তাদের স্বাস্থ্য রক্ষা করার স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
 
যারা এসএসসিতে খারাপ রেজাল্ট করেছে এবং এই পরীক্ষার জন্য ভাল প্রস্তুতি নিয়েছে এই ধরণের শিক্ষার্থীর সংখ্যা খুবই কম উল্লেখ করে তিনি বলেন, কিন্তু ভর্তি পরীক্ষায় কিন্তু তাদের যোগ্যতার পরিচয় দিয়ে সেখানে তাদের ভর্তি হতে হবে। সেখানেই তার মেধার চুড়ান্ত প্রকাশ হবে। সামনের ভর্তি যুদ্ধে এই রেজাল্ট এর তেমন গুরুত্ব নেই।
 
ভর্তি পরীক্ষার সময়ের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে তিনি বলেন, সামনে করোনা পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে সেটা এখনো বলা যায়না। তবে সরকার ভর্তি পরীক্ষার সময় নিশ্চয়ই সে বিষয়টা লক্ষ্য রাখবে। যেন সংক্রমনের মাত্রাটা নিয়ন্ত্রনে থাকে।
 
তিনি বলেন, ১লা এপ্রিল শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে প্রস্তুতি নিয়েছে। সুতরাং যারা পরীক্ষার সঠিকভাবে লেখাপড়া করেছে এবং প্রস্তুতি নিয়েছে তাদের ভর্তিযুদ্ধে তাদের কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
 
ডিসেম্বরে এই পরীক্ষার ফলাফল পেয়ে যাবে। সুতরাং শিক্ষার্থীদেরকে ভর্তি পরীক্ষার জন্য তাদের প্রস্তুতিটা চলমান রাখতে হবে। তাদের মেধাকে কাজে লাগিয়ে একটা লক্ষ্যে এবং উদ্দেশ্যে পৌছাবে এটাই তিনি প্রত্যাশা করেন।
 

এই বিভাগের আরো খবর