শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ফাঁটা ডিমে আগ্রহ দেখাচ্ছেন সীমিত আয়ের মানুষ

আবু সুফিয়ান

প্রকাশিত: ১৬ মার্চ ২০২৩  



# হালি প্রতি ৫ টাকা কমে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে

 প্রাণিজ আমিসের অন্যতম উৎস ধরা হয় ডিমকে। কিন্তু বাজরে ডিমের যে পরিমান দাম তাতে এই পণ্যটি এখন আর নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে কোন সাশ্রয়ী পণ্য নয়। সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়ায় বাজার ব্যয় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। তার উপর বাড়তি দামে এই পণ্য কিনে খাওয়া যেন তাদের কাছে স্বপ্নের মত।

 

 

তাই তো কিছুটা কম দামে সীমিত আয়ের এই মানুষ গুলো ডিমের দোকানে গিয়ে ফাঁটা ডিম কিনে স্বস্তি বোধ করছেন। যুদ্ধ, ডলার সংকট, আমদানি না হওয়া সহ নানা অজুহাতে প্রতিনিয়ত বাড়ছে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম।

 

 

যার কারণে নিম্ন আয়ের মানুষ জীবনের জন্য অতি প্রয়োজনীয় পণ্য গুলো কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন। রমজানকে সামনে রেখে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কৃত্তিম ভাবে এই সংকটকে আরো সংকটাপন্ন করছে বলে দাবি করছেন ক্রেতারা।

 

 


বাজারের ডিমের দোকান গুলো ঘুরে দেখা যায়, ডজন প্রতি ব্রয়লার লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায়। নারায়ণগঞ্জের কয়েকটি ডিমের দোকানের বিক্রেতার সাথে কথা বলে জানা যায়, এক হালি ডিম (৪ টি) বিক্র হয় ৪৫ টাকায়। তবে শহরের বাইরে প্রশাসনের সঠিক তদারকি না থাকায় কোন কোন ডিম বিক্রেতাকে ব্রয়লার লাল ডিম সর্বোচ্চ ৪৮ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে দেখা যায়।

 

 

আর অতিরিক্ত দামে সবার পক্ষে এই ডিম কেনার সামর্থ হয়ে ওঠে না। শহরের দ্বিগু বাবুর বাজারের একটি মুদি দোকানে ব্রয়লার লাল ডিম কিনতে এসেছেন নার্গিস আক্তার (ছদ্মনাম)। তিনি যুগের চিন্তার সাথে আলাপ কালে বলেন, শেষ কবে ডিম কিনেছি সত্যিই মনে পরছে না। আজ দোকানে ডিম কিনতে এসেছি।

 

 

এক হালি ডিম ৪৫ টাকা। তিনি বলেন, দোকানির কাছ থেকে জানতে পারি ফাঁটা ডিম ৫ টাকা কমে ৪০ টাকায় বিক্রি হয়। সব কিছুর দাম যে ভাবে বাড়ছে তাতে আমাদের মত গরিব মানুষের বেঁচে থাকা দায়। দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধগতির বাজারে কিছুটা কম দামে ফাঁটা ডিম কিনে কিছুটা আমিষের চাহিদা পূরণ হবে ভেবে স্বস্তি বোধ করেন এই নার্গিস আক্তার।

 

 

তবে শেষে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধগতির জোয়ার যদি এভাবে চলতে থাকে তাহলে আমিষ তো দূরের কথা খেয়ে পরে বেঁচে থাকা মানুষের দায় হয়ে যাবে। এ সময় একই দোকানে ফাঁটা ডিমের খোঁজে আরোও দুই জন ক্রেতাকে দেখা যায়।

 

 


এ দিকে শিল্পাঞ্চল বিসিকের বারাকাত ডিমের আড়ৎ-এর পাইকারি ডিম বিক্রেতা জানান, হালি প্রতি ডিম এখন ৪৮ টাকা থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তার এই দোকানে কিছুক্ষণ দাড়িয়ে থেকে দেখা যায় কয়েকজন ক্রেতা মুগির ফাঁটা ডিমের খোঁজ করছেন। কেউ বা আবার দাম যাচাই করছেন।

 

 

বারাকাতের ডিমের দোকানে এই প্রতিবেদক দীর্ঘ সময় থেকে দেখলেন পর পর কয়েজন ক্রেতা এসে বিক্রতার কাছ থেকে মুরগির ফাঁটা ডিমের দাম জানতে চাইলেন। দোকানি দাম বললে, ক্রেতারা ৪৫ টাকা দিয়ে ফাঁটা ডিম নিয়ে যায়। তাদের সাথে এই প্রতিবেদক কথা বলতে চেষ্টা করলে কেউ কথা বলতে রাজি হয় নি।

 

 

কিছু সময় পর ঐ দোকানে আরেক মুরগির ফাঁটা ডিমের ক্রেতা আসলে তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে যুগের চিন্তাকে বলেন, ভাই কি করবো ডিমের দাম বেশি। তাই ফাঁটা ডিম কিনছি। বারাকাত ডিমের আড়ৎ এর দোকানির কাছ থেকে ফাঁটা ডিমের ব্যপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, এগুলো খারাপ কোন ডিম না।

 

 

আমাদের পরিবহনে ডিম আনার সময় কিছু ডিম হালকা ফেটে যায়। এগুলোই আমরা কিছুটা কম দামে বিক্রি করে থাকি। তিনি আরোও জানান, আগে ফাঁটা ডিমের এতো চাহিদা না থাকলেও বর্তমান এর ব্যাপক চাহিদা আছে। এই বিক্রেতা জানান, এখন নিম্ন আয়ের মানুষের সাথে সব ধরনের মানুষকেই এই ডিম কিনতে দেখা যায়। এন.হুসেইন/জেসি
 

এই বিভাগের আরো খবর