মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৩ ১৪৩১

ফুটপাতের ব্যবসায়ে জড়িতদের তালিকা চেয়েছে হাইকোর্ট

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১ ডিসেম্বর ২০২২  

 

# বঙ্গবন্ধু সড়কের ফুটপাত নিয়ে অঘটনের নায়ক রহিম মুন্সী-আসাদ


ফুটপাত বিক্রি বা লিজদান ও ভাড়া উত্তোলনে জড়িতদের তালিকা প্রস্তুত করে আদালতে দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই তালিকা প্রস্তুতের জন্য পাঁচ সদস্যের অনুসন্ধান কমিটিও গঠন করতে বলা হয়েছে। এছাড়া ফুটপাত বিক্রি ও ভাড়া উত্তোলনের সঙ্গে জড়িতদের আইনি ব্যবস্থা গ্রহনেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

 

 

নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর ফুটপাতে চাঁদাবাজি ‘ওপেন সিক্রেট’। ফুটপাত দখলমুক্ত করার নামে পুলিশের সঙ্গে হকারদের ইঁদুর-বিড়াল খেলা চলে সারা বছর। নারায়ণগঞ্জ শহরে ফুটপাত দখল করে আছে প্রায় ৫ হাজার হকার। অভিযোগ রয়েছে, হকার নেতা রহিম মুন্সি ও হকার জোবায়ের হত্যা মামলার অন্যতম আসামী হকার আসাদ এর নেতৃত্বে রয়েছে বিশাল এক চাদাঁবাজ বাহিনী ।

 

 

নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রধান সড়ক বঙ্গবন্ধু রোডের চাষাড়া এলাকা থেকে ২ নাম্বার রেলগেট হয়ে ডিআইটি পর্যন্ত সড়কের উভয় পাশে অবস্থান করেন হাজার হাজার হকার। এর মধ্যে জামা কাপড়, জুতা, ক্রোকারিজ, মসলা আর শুঁটকির দোকান থেকে শুরু করে যৌনবর্ধক নিষিদ্ধ ওষুধের দোকান পর্যন্ত বসানো হয়েছিল ফুটপাত দোকান।

 

 

এছাড়া শহরের কালীর বাজার, ১ নাম্বার রেলগেট, ফলপট্টি, টানবাজার, ২ নাম্বার রেলগেট এলাকায় বসে প্রায় হাজার হকার। নগরীর সলিমুল্লাহ সড়কে হকারের এতটাই আধিক্য যে সড়কে বন্ধ করে রাস্তার উপরে ভ্যানগাড়ী ও বক্স গাড়ি দিয়ে হকারেরা দোকানদারী করেন।

 

 

কথিত হর্কাস সংগ্রাম পরিষদের নামে শহরের চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটে চালিয়ে যাচ্ছে, নামধারী সভাপতি রহিম মুন্সি শহরের চাষাড়াস্থ হকার্স মার্কেট থেকে বঙ্গবন্ধু সড়কের আমান ভবন পর্যন্ত ,হকার্স সংগ্রাম পরিষদের আহব্বায়ক আসাদুজ্জামান আসাদ নিয়ন্ত্রণ করেন।

 

 

বঙ্গবন্ধু সড়কের গলাচিপা থেকে চাষাড়া মার্ক টাওয়ার পর্যন্ত, আলমগীর হোসেন পলাশ নিয়ন্ত্রণ করেন ২ নং রেলগেইট থেকে ১ নং রেলগেইট পর্যন্ত, ভান্ডারী নিয়ন্ত্রণ করেন নারায়ণগঞ্জ উৎসব কাউন্টার থেকে বন্দর সেন্ট্রাল খেয়াঘাট পর্যন্ত।

 

 

২নং রেল গেইট সুরুজ মিয়া নিয়ন্ত্রণ করেন মন্ডলপাড়া থেকে নগর পাঠাগার পর্যন্ত, আরিফ নিয়ন্ত্রন করেন প্রেসক্লাবের গলি থেকে পপুলার হাসপাতালের গলি পর্যন্ত এবং সোহেল নিয়ন্ত্রণ করেন কালীবাজার ব্যাংক মোড় থেকে ফ্রেন্ডস মার্কেট, মীর জুমলা সড়কে নিয়ন্ত্রণ করে রুবেল হোসেন চাঁদা তোলেন।

 

 

তালিকার এ সকল ব্যক্তিরা নিরীহ হকারদের জিম্মি করে হাতিয়ে নিচ্ছেন প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা। ক্ষমতাসীন দলের পরিচয় দিয়ে এবং কিছু পুলিশ কর্মকর্তাকে মেনেজ করে চলছে চাঁদা তোলার মহা উৎসব। যে টাকার ভাগ নেন  থানা পুলিশ, ফাঁড়ির পুলিশ, কিছু আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগের নাম ধারী কিছু নেতা এবং বিশেষ পেশার নামধারী কিছু ব্যক্তিসহ অনেকে।

 

 

ক্ষমতাসীন দলের গুটিকয়েক নেতার সমন্নয়ে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে নারায়ণগঞ্জের হকারদের কর্মকাণ্ড। বর্তমানে যে সকল সেক্টরগুলোতে ব্যাপক চাঁদা বাণিজ্য হচ্ছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে হকারদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়। শহরের মাত্র দুই কিলোমিটারে ফুটপাত থেকে দৈনিক লক্ষাধিক টাকার বেশী চাঁদা আদায় করছে চাঁদাবাজরা।

 

 

বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দ সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার রুল জারিসহ এই আদেশ দেন। একই আদেশে রাজধানীর মূল ফুটপাতগুলো দখল করে যেন কোনো স্থায়ী/অস্থায়ী দোকান ও স্থাপনা আর যাতে বসতে না পারে সে ব্যাপারে ৭ দিনের মধ্যে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এস.এ/জেসি

এই বিভাগের আরো খবর