মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১০ ১৪৩১

বদলা নিতেই খুন 

শুভ্র কুমুদ

প্রকাশিত: ২৪ মে ২০২২  

# এক রাতেই বদলে গেল মনিরের নাম, জানেনা বাদী
# ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপেক্ষায় শফিউদ্দিন প্রধান

 

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৪নং ওয়ার্ডে শুভ্রত মণ্ডল জয় (২২) হত্যাকাণ্ড নিয়ে সাবেক কাউন্সিলর শফিউদ্দিন প্রধান, বর্তমান কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান মনির ও পুলিশের ত্রিমুখী অবস্থানে জটিলতা তৈরি হয়েছে। সদ্য সমাপ্ত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কাউন্সিলরের পক্ষে-বিপক্ষে কাজ করা নিয়ে এই হত্যাকাণ্ড হলেও এখন ঘটনা ভিন্নখাতে নেয়ার চেষ্টা চলছে।

 

যদিও এখন অসহায় অবস্থার মধ্যে পড়েছে নিহতের পরিবার। ফায়দা লুটার পায়তারা করছে সাবেক কাউন্সিলর সফিউদ্দিন প্রধান। আর বর্তমান কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান মনির ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে। দুই কাউন্সিলরের পক্ষেই ঊর্ধ্বতন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ মাঠে নেমেছে বলেও সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে।

 

এদিকে শ্রভ্রত মারা যাওয়ার রাতেই নিহতের পরিবারের অভিযোগপত্র বদলের অভিযোগও পাওয়া যাচ্ছে প্রশাসনের বিরুদ্ধে। সূত্র জানিয়েছে, গত ১১ এপ্রিল রাতে জিউজ পুকুরের পশ্চিম পার্শ্বে সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর আধিপত্য নিয়ে একটি মারামারির ঘটনা ঘটে। যেই ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয় কাউন্সিলর সফিউদ্দিন সফির ভাই ও ছেলের বিরুদ্ধে। সেই মামলায় সর্বশেষ নিহত শুভ্রত চন্দ্রও ছিল ৫নং আসামী।

 

সূত্র জানায়, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন ১৪নং ওয়ার্ডে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ভূইয়ারবাগ ও জিউস পুকুরপাড় এলাকায় কয়েক দফায় হামলা চালায় সাবেক কাউন্সিলর সফিউদ্দিন প্রধান এর বাহিনীরা। গত ১১ এপ্রিলসন্ধ্যা থেকে রাত ১২ পর্যন্ত নগরীর ভূইয়ারবাগ ও জিউস পুকুরপাড় এলাকায় হিন্দু পরিবারের কয়েকটি বাড়ি ঘরে হামলা,

 

ভাংচুর ও লুটপাট চালায় সাবেক কাউন্সিলর সফিউদ্দিন প্রধানের ভাই,ভাতিজা, ছেলেসহ ২০-২৫ জনের সন্ত্রাসী বাহিনী। এসময় সন্ত্রাসী বাহিনীরা মুখে কাপড় পেচিয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জিউস পুকুরপাড়ের অসহায় হিন্দু পরিবারের ১০-১২টি বসতঘরে ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। এতে পুরো এলাকা জুড়ে সন্ত্রাসীদের ভয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে।

 

এ সময় সন্ত্রাসীরা গীতা রানী ও অর্চনা নামে হিন্দু সম্প্রদায়ের দুটি পরিবারের বাড়ি-ঘরে ব্যাপক ভাংচুর করেন। সন্ত্রসীরা অর্চনার বাড়ির ঠাকুর ঘর ভাংচুর করে। পরে এলাকাবাসী ৯৯৯ ফোন করে পুলিশ এর সহায়তা নেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। কিছুক্ষণ পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে যাওয়ার পরে আবারও তান্ডব চালায় সফিউদ্দিনের বাহিনীরা।

 

এসময় দোলন (২২) নামে এক কিশোরকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে আহত করেন সন্ত্রাসী বাহিনী।  এই দোলনকেই আবার নিহত শুভ্রত হত্যা মামলার আসামী করা হয়েছে। এ বিষয়ে আহত দোলনের চাচাত ভাই নাঈম বাদী হয়ে ফতুল্লা থানায় একটি অভিযোগ করেন। অভিযোগে আহত দোলনের চাচাত ভাই নাঈম জানান, আমার চাচাত ভাই দোলন দেওভোগ সোহরাওয়ার্দী মার্কেট থেকে কাজ শেষে বাড়ির ফেরার পথে রাত সাড়ে ৮টার দিকে জিউস পুকুরপাড় সংলগ্ন

 

গোয়ালবাড়ি সামনে সাবেক কাউন্সিলর সফিউদ্দিনের ভাই সোহেল প্রধান, মহিউদ্দিন প্রধানের ছেলে অর্পণ প্রধান, সফিউদ্দিন প্রধানের ছেলে পবন প্রধান, মফিজ মিয়ার ছেলে প্রিজম, সুব্রত, হারুন, জামিল, জুবায়েল সহ অজ্ঞাত আরও ১০-১৫ জন আমার ভাইয়ের উপর হামলা চালায়। এসময় হামলাকারীরা পূর্ব শক্রতা জের দরে দেশীয় অস্ত্র রাম দা, চাপাতি, সুইচ গিয়ার চাকু,

 

লোহার রড ও হকিষ্টিক দিয়ে এলোপাথারি ভাবে আমার ভাই এ উপর হামলা চালায়। এ সময় আমার ভাই দোলন এর ডাক চিৎকারে বাচাতে এলে আমিন ও শান্ত কর্মকার নামে আরও দু’জনকে হামলাকারীরা মারধর করেন। এসময় আমি সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি আমার ভাই ও তার সাথে থাকা দু জন আহত অবস্থায় পরে আছে। পরে আমি তাদের ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নিয়ে যাই।


এ বিষয়ে তখন এলাকাবাসী জানায়, সিটি নির্বাচনের পর থেকেই আধিপত্য বিস্তার টিকিয়ে রাখার জন্য সফিউদ্দিনের বাহিনীরা কয়েকদিন পর পর জায়গা জায়গাই হামলা চালায়।


সূত্র জানিয়েছে, এই মারধরেরর প্রতিশোধ নিতেই মরিয়া হয় বর্তমান কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান মনির বাহিনী। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বর্তমান কাউন্সিলর মনির হোসেনের পক্ষে কাজ না করায় নগরীর পশ্চিম দেওভোগ ইউসুফ আলীর বাড়ির সামনে শুভ্রত মণ্ডল জয় (২২) নামের এক যুবককে ডেকে নিয়ে সারা রাত নির্যাতন করা হয়।

 

ইতিমধ্যে এই নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। একই সাথে  মৃত্যুর আগে শুভ্রত একটি ভিডিওতে তাকে যারা রাতভর নির্যাতন করেছে সেই সকল ব্যক্তিদের নাম ও তাকে নির্যাতনের বলে গেছেন। রোববার সকালে মারা যায় সুভ্রত। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় নিহতের বড় বোন শম্পা মন্ডল বাদী হয়ে  যে অভিযোগ করেছে সেটিতে কাউন্সিলর মনিরসহ ১১ জনের নাম উল্লেখসহ

 

১০-১২ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। কিন্তু একরাতের মধ্যেই কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান মনিরের নাম প্রধান আসামির খাতা থেকে বাদ যায়। তাছাড়া সুদেব, অনিক, রাজিব, মানিকসহ কয়েকটি নাম সংযোজন করা হয়। অজ্ঞাত কারণে বাদ পড়ে যায় বাকেশ, রিঙ্কু, তন্ময়সহ কয়েকটি নাম। তবে এসব বিষয়ে জানেনা খোদ বাদী।

 

আর তাই দেওভোগ শুভ্রত হত্যার ১ নম্বর আসামী কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান মনিরের নাম এজহার কপি থেকে বাদ দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করে নিহতের পরিবারের। একই সাথে নিহতের বোন অভিযোগ করে বলেন, আমার ভাইকে নির্যাতনের পর ঘটনা স্থল থেকে কেউ একজন কাউন্সিলর মনিরকে ফোন দিয়ে বলে ভাই মেরেছি।

 

তখন মনির তাকে বলে ছিনতাইকারী বলে রাস্তায় ফেলে দিয়ে আয়। আমরা মনে করি মনিরের হুকুমে এই হত্যা হয়েছে। অপর দিকে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশ জানান, বাদী এজহার কপিতে যা উল্লেখ্য করেছে তাই মামলা রুজু হয়েছে। এখানে কাউকে বাদ বা নতুন করে কোন তথ্য সংযোজন করা হয় নাই।

 

তবে ভিকটিম মারা যাওয়ার আগেই এই ঘটনার মামলা রুজু হয় বলে জানান পুলিশ প্রশাসন। ভিকটিম যেহেতু মারা যাওয়ার আগে মামলা রুজু হয় সেক্ষেত্রে নতুন করে কোন তথ্য সংযোগ করা হয় নাই। আমরা ইতিমধ্যে মামলা হত্যার ধারা যুক্ত করার জন্য আদালতে আবেদন করেছি। এদিকে শুভ্রত হত্যার ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ১৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান মনিরকে ফাঁসানোর জন্য একই ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সফিউদ্দিন ও

 

তার ভাতিজা দর্পণ এবং ভাই মিলে নকশা তৈরী করে মাঠে নেমেছে বলে মনিরের অভিযোগ। এলাকাবাসী বলছে, বর্তমান কাউন্সিলর নিজেকে রক্ষা করার জন্য প্রশাসন থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় দৌড়ঝাঁপ করছে। এই মামলার মূল আসামী নিয়ে নারায়ণগঞ্জ শহরে এখন টক অব দ্যা টাউনে রূপান্তরিত হয়েছে। শুভ্রত হত্যার ঘটনা নিয়ে এখন পুলিশের তদন্তের দিকে তাকিয়ে আছে ভুক্তভোগীসহ নগরাবাসী। তবে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকাও রহস্যজনক তৈরি হয়েছে। 


নিহতের বোন সম্পা মন্ডল যুগের চিন্তাকে বলেন, অভিযোগে মনিরুজ্জামান এর নাম দিয়েছিলাম কিভাবে তার নাম সওে গেছে তা আমরা জানি না। আমার প্রথমেই নাম দিছিলাম মনিরুজ্জামান মনির এবং তার লোক তারা গ্যাং স্টার ওদেরকে বলছে আমার ভাইকে হত্যা করতে আমার ভাই যখন মৃত্যু শয্যায় তখন আমার ভাই নিজের মুখে  জবানবন্দী দিয়েছে।

 

সেখানে ভাই ভিডিওতে বলছে তাকে মারার পর কাউন্সিলর মনিরকে ফোন দিয়ে বলছে নাম লক্ষ্য করে মনির ভাই ওকে (শুভ্রত) মারছি এখন কি করব তখন ওই পাশ থেকে নাকি মনির বলছে ওরে ছিনতাইকারী বলে রাস্তায় ফেলে যা। একই সাথে এটাও বলছে ওদের বাড়ির সামনে ওকে ফেলে যা। আমরা পুলিশ এর কাছে এই কথাটি বলছি পুলিশ যদি তার নাম না রেখে কাগজটা যদি উল্টায় ফেলে নামটা যদি কাইটা ফেলে আমাদের কিছু করার নাই। আমার ভাইকে যখন মারছে তার পরের দিন আমরা থানায় গিয়ে অভিযোগ করছি। পরে তা মামলা হয়। যার মামলা নম্বর ২৪।


এদিকে পরিবর্তিত দেওভোগের শুভ্র হত্যার ঘটনা মামলার এজহার কপিতে যাদের নাম উল্লেখ্য করা হয় তারা হলেন, ১।সায়েম ওরফে ইয়াবা সায়েম (৩০ ),২।সাজিদ ভূইয়া, (৩৬ ) ,উভয় পিতা সাদরুল আলম ভূইয়া ,উভয় সাং ৬৭ নং পশ্চিম দেওভোগ , ৩।নাঈম উদ্দিন বাবু, (৩০), পিতা নাছির উদ্দিন, সাং ১১৬  নং  পশ্চিম দেওভোগ,

 

৪। দোলন (২৫,পিতা মৃত :বাইজিদ,সাং ১১৬ নং পশ্চিম দেওভোগ ৫।আলআমিন (২৫),পিতা মৃত : সহিদ মিয়া,সাং পালবাড়ী ,৬।নোমান (২২),পিতা নিজাম ,সাং মুন্সিবাড়ী দিঘির পশ্চিমপাড় ,৭।প্রনয় (২২),পিতা নারায়ন চন্দ্র ,সাং – সাদিক মিয়ার বাড়ীর ভারাটিয়া ,৬ষ্ঠ তলা দিঘির পশ্চিমপাড় , ৮। রাকেশ (২০)পিতা রবি চাঁন, সাং জুলহাস ভবন, সর্ব দিঘিরপাড়, থানা ও জেলা নারায়নগঞ্জ, ৯। লক্ষী নারায়ণ আখড়ার বাসুদেবের ছেলে সুদেব, ১০।  নগরীর এল এন রোড এলাকার সেন্টু সাহার ছেলে অনিক রাজিব, ১১। মানিক।


আগের দেওয়া অভিযোগে যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছিল, নাসিক ১৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান মনির,  পশ্চিম দেওভোগের সাদেরুল আলম ভূইয়ার দুই ছেলে সায়েম ওরফে ইয়াবা সায়েম (৩০), সাজিদ ভূইয়া, (৩৬), পশ্চিম দেওভোগের বাসিন্দা নাছির উদ্দিনের ছেলে নাঈম উদ্দিন বাবু (৩০), বাইজিদের ছেলে দোলন (২৫), মুন্সিবাড়ী দিঘির পশ্চিমপাড় নিজামের ছেলে  নোমান (২২), নারায়ণ চন্দ্রের ছেলে প্রণয় (২২), রিংকু (৩০), তন্ময় (২২), দোলন (২৫), আল-আমিন (২৫), নোমান (২২), রাকেশ (২০), সুদেব (৩২), অনিক রাজিব (২৬) ও মানিককে (২৫)।


 এব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ আনিচুর রহমান জানান, দেওভোগের শুভ্রত হত্যার ঘটনা জানার সাথে সাথে একজন আসামী গ্রেপ্তার করি। একই সাথে এই ঘটনায় মামলা রুজু হয়। ভিকটিমের বোন মামলার বাদী যে অভিযোগের কপি আমাদের কাছে দিয়েছে সেই কপিই মামলা রুজু হয়েছে। তবে কাউন্সিলর মনিরের নাম উল্লেখ্যের বিষয় নিয়ে আমরা গভীর ভাবে তদন্ত করছি। যারা দূষি হবে কেউ ছাড় পাবে না। আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্য আমরা সর্বাত্বক ভাবে তৎপর হয়ে কাজ করছি। আশাকরি আসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।


এজহার কপিতে উল্লেখ্য করা হয় গত সপ্তাহের ১৬ তারিখ ১ নম্বর আসামি সায়েম শুভ্রত বাসা থেকে ঢেকে নিয়ে যায়। তখন সে যেতে না চাইলে তাকে বাসা থেকে বের হতে বলে। আর বাসা তেকে বের হওয়া মাত্র তাকে তুলে নিয়ে যায় সায়েমের সাঙ্গপাঙ্গরা। শুভ্রত হত্যার ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে নিহতের বোন

 

লিপি মন্ডল বলেন, সাায়েম ওরফে ইয়াবা সায়েম আমার ছোট ভাইকে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাথারীভাবে মারপিট করিয়া তাহার কিডনী বিকল করিয়া দেওয়ার উদ্দেশ্যে কিডনির দুই দিকে এলোপাথারী আঘাত করে। এবং তাহার হাতে থাকা ধাড়ালো চাপাতি দিয়া আমার ভাই এর বুকে আঘাত করে। তখন আমার ভাই উক্ত আঘাত হাত দিয়া প্রতিহত করিলে তার আঘাত আমার ভাইয়ের তর্জুনি আঙ্গুল ২ টুকরা হইয়া যায় ।

 

নাইম উদ্দিনের হাতে থাকা চাপাতি দিয়া আমার ভাইয়ের বাম পায়ের হাটুতে স্বজোরে কোপ মারিয়া মারাত্নক কাঁটা জখম করে। ৪নং আসামী আমার ভাইকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধাড়ালো অস্ত্র দিয়া বাম হাতে কোপ মারিলে আমার ভাইয়ের বাম হাতের তিনটি আঙ্গুলের নোখ সহ আঙ্গুলের উপরিভাগ কাঁটিয়া যায়।৫নং বিবাদীর হাতে থাকা লোহার রড দিয়া বাদির চোখে আঘাত করিয়া চোঁখ নষ্ট করিয়া দেওয়ার উদ্দেশ্যে বাম চোঁখে আঘাত করে।

 

দার রডের আঘাতে চোঁখে লাগিয়া আমার ভাইয়ের চোখের ভ্রু এর উপরে মারাত্নক জখম হয়।৬নং আসামীর হাতে থাকা লোহার রড দ্বারা আমার ভাইয়ের বাম পায়ে আঘাত করলে বাম পায়ে হাড় ভাঙ্গা জখম হয়। ৭নং আসামীর হাতে থাকা সুইচ গিয়ার দিয়া বাম পায়ের জখমের মধ্যে আঘাত মাংস খুলিয়া নিয়া গভির ক্ষত বিশিষ্ট রক্তাক্ত জখম করে , ১০ ও ১১ নং আসামীগন আমার ভাইকে এলোপাথারীভাবে মারধর করিয়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম করে । এক পর্যায়ে ১০ নং আসামী ,ভিকটিমের হাতে থাকা মোবাইল ফোনটি ছিনাইয়া নিয়া যায় ।

 

যার আনুমানিক মূল্যে ২০, ০০০ টাকা হইবে । ১০ নং আসামী ,আমার ভাইয়ের পকেটে থাকা ৪,৫০০ টাকা নিয়া যায়। আমরা আমার ভাইয়ের হত্যাকারীদের ফাসি চাই। তাদের যেন কঠোর শাস্তি দেয়া হয়।


তবে আগের অভিযোগপত্রে ঘটনা ছিল উল্টো। মৃত্যূর আগে শুভ্র এক ভিডিওতে বলেন, নাসিক নির্বাচনে কাউন্সিলের মনিরের পক্ষে কাজ করার জন্য তার কাছের লোক সায়েম আমাকে কাজ করতে বলেন। কিন্তু ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সফিউদ্দিন করোনার সময় আমাদের পরিবারকে সহযোগিতা করে। তাই আমি নির্বাচনে সফিউদ্দিন কাকার পক্ষে কাজ করি। মনিরের পক্ষে কাজ না করায় সেই জের ধরে তারা আমাকে ধরে নিয়ে রাতভর নির্যাতন করে তারা আমাকে বাসার সামনে ফেলে রেখে যায়। তখন আমি সেন্সলেস ছিলাম।  


নিহত শুভ্রতর আরেক বোন লিপি মন্ডল বলেন, আমরা আমাদের ভাইয়ের হত্যাকারীদের সকল আসামীদের গ্রেপ্তারের মাধ্যমে সঠিক বিচার চাই। সেই সাথে হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই। তাদের কারণে আর কোন মাকে যেন সন্তান হারা হতে না হয়। আমাদের পরিবারে একমাত্র উপার্জন কারি ব্যক্তি ছিলেন আমার আদরের ছোট ভাই শুভ্রত। তার রোজগারে  আমাদের আমাদের সংসার চলত।

 

আমাদের ভাই চলে যাওয়া আমার মা এখন কিভাবে চলবে, আমাদের সব শেষ । পুলিশ প্রশাসনের প্রতি ক্ষোভ করে বলেন, এই পর্যন্ত কোন আসামী গ্রেফতার করা হয়নি, পুলিশ তো আমাদের পিছনে ঘুরছে শুধু তারা কোন এ্যাকশন নিচ্ছে না ,তারা চায় মামলাটা ধামাচাপা দিতে, আমরা যেন মামলা তুলে নেই এই জন্যে একটু পর পর টাকা সাধে, আমরা কোন টাকা নিব না । আমরা খুনিদের গ্রেফতার চাই। ভাই হত্যারবিচার চাই ।


এদিকে এলাকাবাসী বলছে, সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর আধিপত্য বিস্তার নিয়ে  সাবেক কাউন্সিলর শফিউদ্দিন প্রধান ও বতর্মান কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান মনিরের দুই গ্যাংয়ের মারামারির ঘটনার পর প্রশাসন শক্ত অবস্থান নিলে এই হত্যাকাণ্ড হতোনা। তাদের দুই গ্রুপেই কিশোরগ্যাংসহ সন্ত্রাসীবাহিনী লালনপালন করে। তাছাড়া সনাতন ধর্মালম্বীদের আধিক্য থাকায় এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে জল ঘোলা করতে নেমেছে একাধিক সনাতন ধর্মালম্বী নেতা।

এই বিভাগের আরো খবর