বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১১ ১৪৩১

বাজারে মোসুমী ফলে সয়লাব

মামুনুর রহমান

প্রকাশিত: ২৪ মে ২০২১  

মৌসুমী ফল মানেই জিহবায় জল চলে আসার অবস্থা। আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, তরমুজসহ আরও কতো ফল। এক আমের রয়েছে একাধিক নাম, নামে কমতি নেই লিচুর ক্ষেত্রেও। আর এসব ফলের দামে কম হওয়া মানেতো কথাই নেই। পরিবারের সঙ্গে বসে রসালো ফলের স্বাদ নেওয়া যেনো সাধ্যের মধ্যে চলে এসেছে।


নারায়ণগঞ্জ শহরের দ্বিগুবাবুর বাজারের ফলের আড়ত, চাষাঢ়া, কালিরবাজার ও ফলপট্টি  ফলের দোকানগুলো ঘুরে দেখা যায়, গ্রীষ্মের সুস্বাদু ফলে ভরে উঠেছে ফলের দোকান গুলো। জ্যৈষ্ঠ মাস পড়েছে। আম, জাম, লিচু, তরমুজ, জামরুলসহ মৌসুমি ফলগুলো পরিপক্ব হয়ে উঠেছে। দেশের বিভিন্ন  প্রান্ত থেকে এসব ফল ফলের আড়তে আসে। সেখান থেকে খুচরা বিক্রেতার হাত হয়ে আসছে ক্রেতার নাগালে।

 

আম, জাম, কাঠাঁল, লিচু, তরমুজ এখন পাড়া-মহল্লার মোড়েও বিক্রি হচ্ছে। শহরের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান গুলোতে ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতারা ফলের ঝুঁড়ি সাজিয়ে বসেছেন। বিক্রেতাদের দাবি, ফলে ফরমালিন নেই। আর এবার উৎপাদনও ভালো, তাই দামও গতবারের তুলনায় বাড়েনি। ক্রেতারা তাদের চাহিদা অনুযায়ী পছন্দের মৌসুমী সুস্বাদু ফল ক্রয় করছে।


শহরের চারারগোপ পাইকারি ফলের প্রধান বাজারসহ বেশ কয়েকটি খুচরা বাজারে গিয়ে দেখা গেল, ঈশ্বরদীর দেশি ও বোম্বাই জাতের লিচুতেই বাজার ভরা। বিক্রেতারা জানালেন, বাজারে প্রথম আসে সোনারগাঁয়ের লিচু। এখন আসছে ঈশ্বরদী ও দিনাজপুরের লিচু। পাবনার ঈশ্বরদী দেশের লিচু উৎপাদনের অন্যতম প্রধান এলাকা। এখানে দেশি ও বোম্বাই জাতের লিচুর চাষ হয়। তবে প্রচন্ড রোদ নেই বৃষ্টির দেখা তাই অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার লিচুর ফলন কম। অন্য দিকে রাজশাহী, সাতক্ষীরার গোবিন্দভোগ, হিমসাগর, ল্যাংড়া, গুটি আমসহ বিভিন্ন জাতের সুস্বাদু আমে ভরা বাজার। এছাড়াও বাজারে আছে জাতীয় ফল কাঁঠাল। আছে তালশাসও।


শহরের চাষাঢ়া জিয়া হলের সামনে বসে খুচরা লিচু বিক্রেতা আলম চাঁন জানান, ঈশ্বরদী ও দিনাজপুরের ১০০টি লিচু মানভেদে ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আর দু-চার দিনের মধ্যেই ঈশ্বরদী ও দিনাজপুরে ব্যাপকভাবে লিচুর বাগান ভাঙা শুরু হবে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার লিচুর ফলন তেমন ভালো না। এখন লিচুর দাম কম আছে ,তবে জ্যৈষ্ঠের শেষে দাম আরও বাড়তে পারে ।


 
দিগুবাবুর বাজারের আমের মহাজন হক মিয়া জানান, সাতক্ষীরার আমই প্রথম শহরের বাজারে আসে। এর মধ্যে সবচেয়ে আগে এসেছে গোবিন্দভোগ। এই আমগুলো আকারে একটু বড়, পুরো আমের রং সোনালি-হলুদ। সেরা গোবিন্দভোগ বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি। একটু ছোট আকারের গুলো ৭০ থেকে ৮০ টাকা। সে তুলনায় ল্যাংড়া আকারে ছোট হলেও স্বাদে ভালো। ল্যাংড়ার ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি। আম রুপালী ৭০ থেকে ৮০ টাকা, হিমসাগর ৭০ থেকে ৮০ টাকা, চোষা আম ৯০ থেকে ১০০ টাকা,  গুটি আম আছে অনেক রকমের। এগুলোর পাইকারি দাম ৭০ থেকে ৮০ টাকা।

 

এই মহাজন জানালেন, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, বাঘা, রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের জনপ্রিয় আম বাজারে আসতে আসতে জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ দিকে ।
ফলপট্টিতে  ফল ক্রয় করতে আসা এক ক্রেতা বলেন, এবার আমি, লিচু ফলের দাম মোটামুটি কম হওয়ায় বেশ ভালো লাগছে। যদিও বিক্রেতারা দাম বেশি চাইছে তবে দরদাম করলে কম দামে পাওয়া যাচ্ছে। করোনাকালে আম, জাম,কাঁঠাল, লিচু কম দামে পাওয়া ভাগ্যের বিষয়।


শহরের ফুটপাতে বসে খুচরা ফল বিক্রেতা আনোয়ার জানালেন, জাম সবে উঠতে শুরু করেছে, দাম ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি, জামরুলের কেজি মানভেদে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। পাহাড়ি এলাকার ছোট আকৃতির আনারস প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে আকারভেদে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। আর তালশাস প্রতি পিছ ৮ থেকে ১০ টাকা।


চারারগোপের কাঠাঁল বিক্রেতা মমতাজ উদ্দিন জানালেন, কাঁঠাল বাজারে আসবে মূলত জ্যৈষ্ঠের শেষ দিকে। গাজীপুরের কাপাসিয়ার অল্প কিছু কাঁঠাল বাজারে আসছে শুরু হয়েছে। আকারভেদে এর দাম ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা।
 

এই বিভাগের আরো খবর