বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

বাণিজ্যমেলায় ক্রেতা-দর্শণার্থীর ঢল; শামিল পাশের জেলার বাসিন্দরা

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২১ জানুয়ারি ২০২৩  



বাণিজ্যমেলার মূল প্রবেশ ফটকের বাইরে মেলায় ঢোকার জন্য দীর্ঘ লাইন। টিকিট সংগ্রহ করে মানুষ মেলার ঢুকছে। ভেতরে পা ফেলার জায়গা নেই। বিভিন্ন স্টলের সামনে, রেস্টুরেন্ট এবং শিশুদের পার্কের সবগুলো রাইডের সামনে মানুষের প্রচুর ভিড়। এই ভিড় ঠেলেই অনেকে কেনাকাটা এবং খাওয়া-দাওয়া করছেন।  

 

 

শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) সরেজমিনে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পূর্বাচলে ২৭তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। শুধু ঢাকা কিংবা রূপগঞ্জের মানুষই নয়, ঢাকার নিকটবর্তী আশেপাশের জেলাগুলো থেকেও অনেকে এসেছেন বাণিজ্যমেলায় ঘুরতে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মেলার স্থান পরিবর্তনের কারণে নগরবাসীর পাশাপাশি নিকটবর্তী জেলা থেকে উপস্থিতি বাড়ছে।

 

 

চলতি বছর ঢাকার উপ-শহর রূপগঞ্জের বাণিজ্যমেলার স্থায়ী এলাকায় মানুষের ঢল। এর পেছনে ঢাকা, গাজীপুর, নারয়ণগঞ্জ, নরসিংদী, কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার দর্শনার্থীদের বড় প্রভাব রয়েছে বলে মনে করছে আয়োজক প্রতিষ্ঠান রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)।  

 

 

মেলায় আসা অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যোগাযোগ সুবিধা ও মেলার পরিবেশ ভালো থাকায় পরিবার, আত্মীয় ও বন্ধু-বান্ধব নিয়ে বেড়াতে এসেছেন। সন্ধ্যার পরেই আবার ফিরে যাবেন বাড়িতে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন বলে অনেকে পরিবার নিয়ে এসেছেন। পাশাপাশি ছোট-বড় সব বয়সের ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ঢল নেমেছে মেলা প্রাঙ্গণে।

 

 

বিক্রি ভালো হওয়ায় ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ফুটেছে। শুরুর কয়েকদিন অগোছালো থাকলেও দ্রুত সামলে নিয়ে বর্ণিল রূপে সেজেছে রূপগঞ্জের স্থায়ী ঠিকানার ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা।

 

 

ক্রেতা আকৃষ্ট করতে পণ্যভেদে হরেক রকমের মূল্য ছাড় দিচ্ছেন তারা। অনেকে আবার দরদাম করে পছন্দের পণ্যটি কিনছেন। আর সঙ্গে আসা সোনামনিরা শিশু পার্কে কাটাচ্ছে আনন্দঘন মুহূর্ত। বন্ধুরা দল বেঁধে আড্ডা দিচ্ছে খোলা আকাশের নিচে সবুজ ঘাসের গালিচায়, আবার কেউবা সময় কাটাচ্ছে রেস্তোঁরায়।

 

 

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার এলাকা থেকে মেলায় পরিবার নিয়ে এসেছেন সোলাইমান সবুজ। তার সঙ্গে কথা হয় ইন্ডিয়ান ফরগেইন মসলার প্যাভিলিয়ানের সামনে।  তিনি বলেন, মেলায় পরিবার দিয়ে ঘোরাঘুরি করলাম। আজকে প্রচণ্ড ভিড়। মেলা থেকে কিছু মসলা কিনবো; সামনে বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান।

 

 

মেলায় চীনা বাদাম (বড়টা) প্রতিকেজি ২৫০ থেকে ৪০০ টাকায় বক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি মিক্সড ড্রাই ফ্রুট ১০০০ থেকে ১২০০ টাকায়, ইরানি জিরা ৮০০ টাকায়, প্রকার ভেদে কিশমিশ ৬০০-৮০০ টাকায়, কাজু বাদাম ১২০০-১৪০০ টাকায়, ধনিয়া ৩২০ টাকায়, কালোজিরা ৬০০ টাকায়, লবঙ্গ ২০০০ টাকায়, সাদা গোল মরিচ ১৬০০ টাকায়, জয়ফল ১২০০ টাকায়, মানভেদে এলাতি ৩-৪ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

 

 

ইন্ডিয়ান ফরগেইন মসলার প্যাভিলিয়ানের এক বিক্রয় প্রতিনিধি বলেন, মসলার আইটেমের বেশির ভাগই দেশের বাহির থেকে আনা হয়। ইরান, তুরস্ক, পাকিস্তান, ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আসে এই মসলা। বাইরের দেশের মসলার চাহিদা অনেক মেলায়।

 

 

ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান বলেন, নতুন পরিবেশে মেলার আয়োজন ও স্থাপনা দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করছে। এছাড়া মানুষ এখন বিনোদন প্রেমিক। পাশাপাশি যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকায় আশপাশের জেলা থেকেও লোকজন আসছেন।

 

 

এতে অন্যান্য দিনের তুলনায় ছুটির দিন লোক সমাগম বেড়েছে। আরেকটি বিষয় হলো- এবারের মেলায় ধুলাবালি সমস্যা অনেক কম। এতে দর্শনার্থীরা স্বাচ্ছন্দে ঘুরে বেড়াতে পারছেন। আড্ডা দিচ্ছেন। পছন্দের পণ্য কিনছেন।

 

 

মেলায় দেশি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ভারত, হংকং, পাকিস্তান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ ১০টি দেশের ১৭টি স্টলে দর্শনার্থীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।

 

 

মেলায় অংশ নেওয়া দেশি-বিদেশি ৫৭টি বড় প্যাভিলিয়নসহ ৩৩১ স্টলের প্রায় সবগুলোতে ছিল ক্রেতা দর্শণার্থীর উপচে পড়া ভিড়। বিক্রয়কর্মীরা কম-বেশি ক্রেতা সামলাতে ব্যস্ত। মেলার পরিচালক ও ইপিবি সচিব ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী জানান, ছুটির দিন সকাল ১০টা থেকে মেলা শুরু হয়েছে।

 

 

মেলার প্রবেশ পথের স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র বা আর্চওয়ের হিসেবে প্রতিদিন গড়ে ৪০ থেকে ৫০ হাজারের মতো লোকসমাগম হয়ে থাকে। আজ (শুক্রবার) সন্ধ্যার আগেই ২ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। এন.এইচ/জেসি

এই বিভাগের আরো খবর