বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

বিরাগভাজন হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ২০ নভেম্বর ২০২১  

# সামনের দিকে তাকাতে চান সবাই
# এমন সিদ্ধান্তে সবাই হতবাক



ত্রিশ বছর পর নির্বাচন দেয়ার আনন্দ ফিকে হতে খুব বেশি সময় লাগেনি ফতুল্লার বাঘা বাঘা সব আওয়ামী লীগ নেতাদের। চেয়ারম্যান হতে ইচ্ছুক আট প্রার্থীর একজনকেই বেঁছে কেন্দ্রে নাম পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন এমপি শামীম ওসমান। প্রকাশ্যে নেতার সামনে কিছু না বললেও গত কয়েকদিন যাবৎ মন খারাপ আওয়ামী লীগ তৃণমূলের। ফতুল্লা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান স্বপন ভারমুক্ত হচ্ছেন হয়তো সামনেই। তবে এমপি শামীম ওসমানের দুর্গ হিসেবে পরিচিত ফতুল্লায় এই নির্বাচনের প্রার্থীতা নিয়ে বিভক্তির মাত্রাটা বাড়ল বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। সূত্র জানিয়েছে, অনেক নেতাই আক্ষেপ করে বলেন, এতোদিনের লালিত স্বপ্ন মুহুর্ত্বেই শেষ হয়ে গেল। আবার অনেক নেতার কর্মী সমর্থকরা আক্ষেপ করে বলেন, কেন্দ্রে অন্তত নামটি জমা পড়লেও আক্ষেপটি কম হতো। এদিকে দীর্ঘদিন এমপি শামীম ওসমানের ছায়াতলে রাজনীতি করার কারণে মনে মনে অনেকে বিদ্রোহী হয়ে উঠলেও সেই বিষ উগলে দিচ্ছেননা।

 

 সূত্র জানায়, প্রার্থী হতে চাওয়া অনেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াবেন কি না এনিয়েও আলোচনা হচ্ছে। আর তা হলে তাদের সামনে বড় ধরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে এটিও তারা জানেন। তাদের ভাষ্য, দীর্ঘদিন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হয়েও ফতুল্লার চিত্র বদলাতে পারেননি লুৎফর রহমান স্বপন। সামনের দিকে যে তিনি ভারমুক্ত হলে আহামরি কোন  পরিবর্তন ঘটাতে পারবেন সেটিও তারা মনে করেননা। সূত্র জানায়, স্বপনকে চূড়ান্ত করার কারণ হিসেবে অন্যান্য প্রার্থীদের বোঝানো হয়েছে, তাদের কারো একজনের নাম প্রস্তাব করলে ফাটল তৈরি হবে, অনেকে বিরাগভাজন হবেন। কিন্তু এখনও তেমনটিই হয়েছে। বরংচ নির্বাচনে সবাইকে অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়ে এলাকার মানুষের কাছেই তাদের ভবিষ্যত জনপ্রতিনিধি নির্ধারণের দায়িত্ব দিলে কারো কোন ধরণের আক্ষেপ থাকতো না। তবে ক্ষোভ-অভিমান থাকলেও সেটি প্রার্থীদের কেউই সামনে আনছেননা। তারা বলছেন, এমপি শামীম ওসমানের রাজনীতির মাধ্যমেই তারা বাকিটা পথ অতিক্রম করবেন।  


ফতুল্লা থানা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ফাইজুল ইসলাম যুুগের চিন্তাকে বলেন, ‘এমপি শামীম ওসমানের হাত ধরে রাজনীতির এতোখানি পথ আসা। তিনিই ভালো করে জানেন, আমি কোথায় থাকলে সেটি আমার রাজনীতির জন্য ভালো হবে। আমি তার সকল সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছি। তিনি যেভাবে বলবেন, আমি সেই অনুযায়ীই কাজ করবো। তৃণমূল কর্মীদেরও আমি বুঝিয়েছি বর্তমান প্রেক্ষাপট। আগামীতে রাজনীতিতে কী করতে হবে সেটি শামীম ওসমানের নির্দেশনা মোতাবেক এগিয়ে যাবো।’


ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক ফরিদ আহম্মেদ লিটন যুগের চিন্তাকে বলেন, যুবলীগের রাজনীতিতে এমপি শামীম ওসমান আমাকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। সামনের পথচলাতেও তিনিই দিকনির্দেশনা দিবেন।


ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু মোহাম্মদ শরীফুল হক যুগের চিন্তা বলেন, ‘এমপি শামীম ওসমানের দিকনির্দেশনা পথ চলাতেই আমি ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের ১নং সদস্য হিসেবে স্থান পেয়েছি। চাওয়া-পাওয়া থাকবে, মন খারাপও হবে, তবে এরপরেও এমপি সাহেবের নির্দেশনা মোতাবেক আমি রাজনীতির সামনের পথগুলো পাড়ি দিবো।’


যুব লীগ নেতা জানে আলম বিপ্লব যুগের চিন্তাকে বলেন, যুব লীগের রাজনীতি ধরেই সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই। চেয়ারম্যান প্রার্থী হতে চেয়েছিলাম। এমপি সাহেবের নির্দেশনায় আমরা সকলে স্বপন ভাইকে সাপোর্ট করেছি। তাকে বিজয়ী করে আনবো। সামনের রাজনীতি আমি যুবলীগের হয়েই করতে চাই।


এদিকেএকাধিক সূত্র জানিয়েছে, ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে আওযামী লীগের প্রার্থী হিসেবে লুৎফর রহমান স্বপনকে বেঁছে নেওয়ায় এই ইউনিয়নের অধিকাংশ আওয়ামী লীগ নেতাই নাখোশ। তবে সেটি খুব নিকটের ব্যক্তি ব্যতিত সকলেই চেপে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।

এই বিভাগের আরো খবর