বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

বেকায়দায় সেন্টু, কুতুবপুরে আ’লীগের হানা

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১  

কুতুবপুরের জনপ্রিয় চেয়ারম্যান মনিরুল আলম সেন্টু কি এবার নির্বাচন করতে পারবেন? নির্বাচন যদি অবাধ ও সুষ্ঠু হয় তাহলে এবারও তিনি যে জয়ী হবেন এমন সন্দেহের যথেষ্ট কারণ আছে। সূত্র জানিয়েছে, আওয়ামী লীগের একাধিক মহল চাইছে এবার কুতুবপুরে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিত্ব থাকুক।

 

বর্তমান চেয়ারম্যান মনিরুল আলম সেন্টুও জানেন এবার তাকে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পড়তে হবে। এমপি শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠ একাধিক পক্ষ এবার  আঁটঘাট বেধে নেমেছে কুতুবপুর ইউনিয়নে। এতোদিন শামীম ওসমান ঘেঁষা সেন্টু  এবার তাই সহজে পার পেয়ে যাবেন এমনটা ভাবার কোন কারণ নেই। সূত্র জানিয়েছে, কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেন্টুর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হিসেবে অনেকেই প্রকাশ্যে প্রচার প্রচারণা না চালালেও ইতিমধ্যে তোড়জোড় (ইউপি) নির্বাচনীয় প্রচার প্রচারণায় এগিয়ে আছেন, কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী সেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী মীর হোসেন মীরু।

 

তিনি আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে অনেক আগে থেকেই কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল আলম সেন্টুর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হিসেবে প্রকাশ্যে প্রচার প্রচারণায় সরগরম করে তুলেছেন। আসলে কে হবে এই ইউনিয়নের অভিভাবক কিংবা চেয়ারম্যান এই নিয়ে সাধারণ ভোটারদের মাঝে চলছে নানা গুঞ্জন।



আওয়ামী লীগের অন্যান্য সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীরা প্রকাশ্যে নির্বাচনীয় প্রচার প্রচারণা না চালালেও ইতিমধ্যে উপজেলা থেকে জেলা ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছেন। আসছে (ইউপি) নির্বাচনে কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হিসেবে লবিং তদবিরে এগিয়ে রয়েছে, এমপি শামীম ওসমানের বন্ধু হিসেবে পরিচিত, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ও পাগলা বাজার ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব শাহ আলম গাজী টেনু। সাধারণ ভোটারদের মতে নারায়ণগঞ্জ ৪-আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের অত্যন্ত আস্থাভাজন ব্যক্তি হিসেবে তাকেই চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হিসেবে দেখতে চায়।

 

তবে কে পাচ্ছেন কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন এখানো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কিন্তু সংসদ সদস্য শামীম ওসমান এবার কি করবেন সেটাই এখন দেখার বিষয়। মনিরুল আলম সেন্টুর একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে গত নির্বাচনে শামীম ওসমান এক প্রকার সরাসরিই মনিরুল আলম সেন্টুকে সমর্থন করেছিলেন। যার ফলে কুতুবপুর ইউনিয়নে নির্বাচন হয়েছিলো অবাধ ও সুষ্ঠু। আর এতে বিপুল ভোটে জিতে যান চেয়ারম্যান সেন্টু। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থী গোলাম রসুল ভোট পেয়েছিলেন মাত্র দশ হাজার।

 

তাই এলাকাবাসী জানায় এখনো সেন্টুর বিপরিতে নির্বাচন করে কেউ তেমন সুবিধা করতে পারবে না। তবে এখন বিভিন্ন ইউনিয়নে বাস্তবে কোনো নির্বাচন হচ্ছে না। আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মানেই হলো বিজয়ী। নৌকা যার বিজয় তার। তাই এখন আর জনপ্রিয়তার কোনো মূল্য নেই। তাই বিগত নির্বাচনে এই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর ভরাডুবি হওয়ায় সংসদ সদস্য শামীম ওসমানকে অনেক কথা শুনতে হয়েছে।

 

তাই শামীম ওসমান এবার মনিরুল আলম সেন্টুকে সমর্থন নাও দিতে পারেন। তিনি এবার আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়ে তাকে সমর্থন দিতে পারেন বলে খোদ মনিরুল আলম সেন্টুই মনে করছেন। গতকাল মনিরুল আলম সেন্টুর একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে। সূত্রটি আরো জানায় সম্প্রতি সেন্টু নিজেই তার ঘনিষ্ঠ জনদের সাথে এমন মন্তব্য করেছেন। তবে এবারও তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন।



এদিকে কুতুবপুরের বিভিন্ন এলাকার সাধারণ মানুষের সাথে আলাপ করে জানা যায়, অনেকে মনে করেন মনিরুল আলম সেন্টু এবারও নির্বাচন করবেন এবং তিনিই চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন। তারা আরো মনে করেন সংসদ সদস্য শামীম ওসমানও তাকে মাইনাস করার কোনো কারণ নেই। কারণ বিগত পাঁচ বছর মনিরুল আলম সেন্টু এমপি শামীম ওসমানের বিশেষ অনুগত ছিলেন। এছাড়া কুতুবপুর ইউনিয়ন একটি জনবহুল বিশাল ইউনিয়ন। তাই এই ইউনিয়নে একজন যোগ্য চেয়ারম্যান থাকার কোনো বিকল্প নেই। আর মনিরুল আলম সেন্টুর চেয়ে দক্ষ এবং যোগ্য অন্য কেউ নেই।

 

তাই কুতুবপুরের বিভিন্ন এলাকার ভোটাররা মনে করেন সংসদ সদস্য শামীম ওসমান এবারও মনিরুল আলম সেন্টুকে ধরে রাখার চেষ্টা করবেন।  কুতুবপুর ইউনিয়নে শেষ পর্যন্ত কি ঘটে সেটাই এখন দেখার বিষয়। সেন্টুকে মাইনাস করা হলে কুতুবপুর হবে সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য এমনটি প্রচার করা হচ্ছে। আর এমন চিন্তায় নাকি এখন এলাকার বাসিন্দারা অস্বস্তিতে ভুগছেন বলে জানা গেছে। তবে আওয়ামী লীগ নেতাদের ভাষ্য, বিএনপির সেন্টুর কারণে কুতুবপুরের উন্নয়নে আন্তরিকতার যথেষ্ট কমতি রয়েছে যেটির অবসান ঘটবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এখানে জয়ী হলে।

 

এই বিভাগের আরো খবর