শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ভূলতা ফাঁড়ির সামনে অবৈধ দখলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক

রূপগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১০ মে ২০২১  

রূপগঞ্জে ভূলতা পুলিশ ফাঁড়ির সামনেই ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দুইপাশ ও ফুটপাত ছাড়াও মহাসড়কের বৃহৎ অংশ দখল করে গড়ে উঠেছে অসংখ্য অবৈধ দোকান। এসব দোকানে গভীর রাত পর্যন্ত চলে কেনাবেচা আর চলে নীরব চাঁদাবাজি। ফলে করোনা ভাইরাসের এই মহামারির সময়ও এখানে সবসময়ই লেগে আছে জটলা। আর এই জটলাতে সুযোগ নেয় মলম পার্টি ও অজ্ঞান পার্টি ছাড়াও ছিনতাইকারী চক্র। তাদের খপ্পরে পড়ে নিঃস্ব হয় এলাকার সহজ সরল মানুষ। তাছাড়া ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের এই অংশটি সরু হওয়ায় যানবাহন চলাচলেও বিঘ্ন ঘটে। সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট, ভোগান্তিতে পড়ে যাত্রিসহ পথচারীরা।

 

গত বছর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মমতাজের নেতৃত্বে ফুটপাত উচ্ছেদ করে ফুলেল বাগান করা হয়েছিলো। নিষেধাজ্ঞা সাইনবোর্ডও সাটানো হয়েছিলো, যা এখনো বিদ্যমান আছে। কিন্তু থেমে নেই ফুটপাত দখল। এতে ফায়দা লুটছে পুলিশ প্রশাসনসহ স্থানীয় চাঁদাবাজরা। এখানে দেখার কেউ নেই। রোববার দুপুরে সরেজমিনে উপজেলার ভূলতা-গাউছিয়া এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ফুটপাত ছাড়াও ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দখল করে বসেছে কাঁপড়-জুতার দোকানসহ মাছ, বিভিন্ন সবজি ও ফলমূলের ভাসমান দোকান। বাধ্য হয়ে মহাসড়কের ওপর দিয়ে চলাচল করছে পথচারীরা। আর যাত্রীরা মহাসড়কের মাঝখান থেকেই গাড়িতে ওঠানামা করছেন।

 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ফুটপাতসহ মহাসড়ক দখল করে গড়ে ওঠা এসব ভাসমান দোকানের কারনে এখানে সব সময় জটলা লেগে থাকে, তাই চলাচলের সময় নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হয় না। এতে মহামারি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বাড়ছে। প্রশাসনের দাবি, ভাসমান দোকান উচ্ছেদে নিয়মিত অভিযান ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। কিন্তু খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, গত তিন মাসে এখানে কোন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়নি।

 

ভূলতা পুলিশ ফাঁড়ির নিচে এক জুতার দোকানদার নাম না বলার শর্তে বলেন, প্রতিদিন বাদলকে ১৫০ টাকা করে চাঁদা দিয়ে এখানে দোকানদারি করতে হয়। আর টাকা না দিলে এখানে বসতে দেয়া হয় না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ভাসমান ব্যবসায়ী জানায়, তার দোকান থেকে প্রতিদিন ছাত্রলীগকে ৫০ টাকা ও পুলিশকে ১০০ টাকা করে চাঁদা দিতে হয়। টাকা না দিলে মালামাল ফেলে দেয়। গাউছিয়া দুই এর সামনের ফুটপাতে এক কাঁপড়ের দোকানদার বলেন, এমনিতে লকডাউন বেচাকেনা নাই। তারপরও চাঁদা দিতে হয় প্রতিদিনই। কাকে চাঁদা দেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আলআমিন ভাইয়ের লোকেরে প্রতিদিন ১০০ টাকা করে চাঁদা দিতে হয়।

 

তাঁতবাজারের সামনে এক লেবু বিক্রেতা বলেন, আমার পুঁজি কম তাই লেবু বিক্রি করি। তা দিয়ে কোনো মতো চলি। এর মধ্যে লেবু বিক্রি করলেও চাঁদা দিতে হয় আর না বিক্রি করলেও দিতে হয়। যেখানে বসি সেখানেই চাঁদা দিতে হয়। এই চাঁদার যন্ত্রনায় আর আসতে ইচ্ছে করে না। তবুও সংসারের অভাবের কারণে আসতে হয়।

 

ট্রাক চালক জসিম উদ্দিন বলেন, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ভাসমান দোকান বসায় মহাসড়ক সরু হয়ে গেছে। এই লকডাউনের মধ্যেও মহাসড়ক দিয়ে ভূলতা-গাউছিয়া এলাকা পার হতে প্রায় এক ঘন্টা লেগে যায়। এ বিষয়ে ভূলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নাজিম উদ্দিন মজুমদার বলেন, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে গাড়ি পার্কিং, ফুটপাত দখল করে অস্থায়ী দোকান উচ্ছেদ করার পর আবার দোকান সাজিয়ে বসেন ব্যবসায়ীরা।

এই বিভাগের আরো খবর