শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ভোগান্তি কাটছেই না ডিএনডিবাসীর

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ১১ জুন ২০২১  

দীর্ঘ খরার পর গত বেশ কিছুদিন ধরেই থেমে থেকে হচ্ছে ভারী বর্ষন। ফলে জেলার বিভিন্ন বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। বিপাকে পড়েছেন ডিএনডি অধ্যুষিত ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জের লাখো মানুষ। ডিএনডির নিম্নাঞ্চল জুড়ে বিভিন্ন এলাকার সড়ক পানিতে থৈ থৈ করছে। নিচু বাসা বাড়িতেও সৃষ্টি হয়েছে জলজট। এদিকে, ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় এক দিনের বৃষ্টির পানি সরতে সময় লাগছে ৩ থেকে ৪ দিন।

 

 
গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়, ফতুল্লার রামারবাগ, লামাপাড়া ও কাঠেরপুলসহ আশপাশের এলাকায় ব্যপক জলজট লেগে আছে। এসব এলাকায় সৃষ্ট জলজটের সাথে ডাইংয়ের কেমিকেল ও রং মিশ্রিত বিষাক্ত পানি মিশে একাকার। এর সাথে যুক্ত হয়েছে বাসাবাড়ির টয়লেটের বর্জ্য মিশ্রিত পানিও। এসব দূষিত ও বিষাক্ত পানি মাড়িয়েই কর্মস্থলে ছুটছেন এসব এলাকার লাখো মানুষ।

 


একই চিত্র বিরাজ করছে ফতুল্লার লালখা, ইউনিকম টেক্সাটাইল মোড়, লালপুর পৌষার পুকুরপাড়, গাবতলী, টাগারপাড়, ইসদাইর, ফতুল্লা রেলস্টেশন রোড, পাইলট স্কুল রোড, তক্কারমাঠ, পিলকুনী ও দাপা ইদ্রাকপুরসহ আশপাশের এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা যায়। জলাবদ্ধতা রয়েছে এনায়েতনগর, কুতুবপুর ও সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি এলাকাতেও। প্রতিবছরই জলাবদ্ধতার দূর্ভোগে পড়েন সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লার বাসিন্দরা। জলাবদ্ধতা দূরকরণে ডিএনডির মেগা প্রকল্পের কাজ চলমান। তবে, এখনো সেই জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি মিলছে না।

 


জানা গেছে, এসব এলাকার জনপ্রতিনিধি সাংসদ শামীম ওসমান। তিনি প্রতিনিয়তই উন্নয়নের কথা বলে ঢেকুর তোলেন। তবে, বাস্তবতা ভিন্ন। গোটা নারায়ণগঞ্জ জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনদূর্ভোগের এলাকায় পরিণত হয়েছে শামীম ওসমানের নির্বাচিত এলাকা ফতুল্লা। সিদ্ধিরগঞ্জ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন হওয়ায় উন্নয়নের দিক থেকে তা এখন ফতুল্লার তুলনায় এগিয়ে। ফতুল্লায় উন্নয়নের কথা বলা হলেও তা অবহেলিত একটি অঞ্চলে পরিনত হয়েছে। তা নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ ও আক্ষেপের কমতি নেই।

 

এদিকে সরেজমিনে দেখা যায়, সংস্কারের অভাবে এসব এলাকার সরু গলিসহ মূল সড়কে অবস্থিত বাসা-বাড়ির পয়নিষ্কাশনের ড্রেনগুলো আবর্জনায় আটকে গেছে। এছাড়াও রাস্তায় থাকা বালু-মাটি ড্রেনে পরে বেশ কিছু ড্রেনের পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে আছে। ফলে বৃষ্টির পানি ড্রেনে যেতে না পেরে জলজট লেগে আছে। একই সাথে রাস্তায় জমে থাকা পানির উচ্চতা বেড়ে আবর্জনাসহ তা ঘরের ভিতরে প্রবেশ করছে। এতে করে মারাত্মক সাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে এসব অঞ্চলের মানুষগুলো। ভুক্তভোগী এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলছেন, বৃষ্টির মৌসুম শুরুর আগে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ড্রেন সংস্কার বা পরিস্কারে অবহেলা করায় এমন ভোগান্তি চলছে বছরের পর বছর।

 

এমনিতেই করোনা আতঙ্ক নিয়ে সাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে মানুষ। তার উপর বৃষ্টির পানিতে মেশা ড্রেনের দূষিত পানি ঘরে প্রবেশ করায় এবং রাস্তায় পানি ভেঙ্গে চলাচল করায় রোগ বালাইয়ের আতঙ্ক বেড়ে গেছে বহুগুণে। ইতিমধ্যেই শিশুসহ বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ পানিবাহী রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার লূৎফর রহমান স্বপন জানান, ‘জলাবদ্ধতা এখানে নতুন নয়। ড্রেন থাকলেও মানুষ আবর্জনা ফেলে ভরাট করে রাখে। আমরা পরিস্কার করিয়েও সুফল পাই না। মানুষ সচেতন নয়। তাই অল্প বৃষ্টিতেই এমন ভোগান্তি দেখা দেয়।’ এদিকে, ডিএনডি প্রজেক্টের কাজ চলমান থাকলেও ফতুল্লার কয়েকটি খাল এই প্রজেক্টের আওতায় না আসায় সেখানকার জলাবদ্ধতার চিত্র আগের মতই ফুটে উঠেছে।
 

এই বিভাগের আরো খবর