শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ভ্যাকসিন বের না হওয়া পর্যন্ত স্কুল খোলা ঠিক হবে না (ভিডিও)

লতিফ রানা

প্রকাশিত: ৩০ অক্টোবর ২০২০  

ভ্যাকসিন বের না হওয়া পর্যন্ত এত সংখ্যক কোমলমতি শিক্ষার্থীকে ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে আনা ঠিক হবে না, তাই সে পর্যন্ত স্কুল খোল ঠিক হবে না বলে মনে করেন নারায়ণগঞ্জ বার একাডেমি’র প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মো. হুমায়ুন কবির ও দেওভোগ হাজী উজির আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হুমায়ুন কবির।

 

বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) যুগের চিন্তা’র আয়োজনে উম্মে সালমা স্বর্ণা’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সাপ্তাহিক শিক্ষা বিষয়ক আয়োজন ফেসবুক লাইভ টকশো ‘শিক্ষাঙ্গন’-এ এধরণে মতামত ব্যক্ত করেন এই দুই শিক্ষক।

 

অনুষ্ঠানের আলোচ্য বিষয় ছিল ‘করোনা পরিস্থিতি: বর্তমান শিক্ষাবর্ষের শিক্ষা পদ্ধতি নিয়ে শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের ভাবনা।’

 

এসময় নারায়ণগঞ্জ বার একাডেমি’র প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মো. হুমায়ুন কবির বলেন, ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের প্রমোশনের বিষয়ে সরকারের ৩০দিনের একটি পাঠ পরিকল্পনা আছে।

 

সে পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা শিক্ষার্থীদের অনলাইনে ক্লাস করাবো। সেখানে সাপ্তাহিক এসাইন মেন্টের মাধ্যমে ছাত্রদের আমরা মূল্যায়ণ করে পরবর্তী ক্লাসে উত্তীর্ণ করবো।

 

তিনি বলেন, এসএসসি পরীক্ষা যথাসময়ে গ্রহন করাসহ প্রাক নির্বাচনী ও নির্বাচনী পরীক্ষার বিষয়েও সরকারের একটি চিন্তা-ভাবনা আছে। তবে পরিস্থিতির উপরই সবকিছু নির্ভর করবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হওয়ার পর সরকার টিভি’র মাধ্যমে ক্লাসের ব্যবস্থা করেছেন।

 

এই শিক্ষক বলেন, এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থীরা নবম শ্রেণিতে থাকা অবস্থায় শিক্ষার্থীরা পুরো সময় পেয়েছে। দশম শ্রেণিতে মার্চ পর্যন্ত সময় পেয়েছে। তারপরও তাদের যে ক্ষতিটা হয়েছে তার জন্য সরকার চেষ্টা করছে।

 

সংক্ষিপ্ত এই পদ্ধতির বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগ করেছি। অনেক অভিভাবককে আমরা বুঝাতে পেরেছি তারা এই পদ্ধতিকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।

 

করোনায় যেসব শিক্ষার্থীদের পরিবারের আর্থিক সমস্যা আছে তাদের টিউশন ফি’র বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী’র বক্তব্যের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা সবসময়ই সামর্থ্য কম যাদের তাদের প্রতি আলাদা খেয়াল রাখি। এখন যেহেতেু করোনা সমস্যা তাই এই বিষয়টা আরো জোর দিব।

 

তিনি বলেন, প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের এই মুহুর্তে স্কুলে আসাও একটা ঝুকিপুর্ণ অবস্থানে আছে। এই অবস্থায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের স্কুলে আনাটা অবশ্যই উচিৎ হবে না। তাই করোনা’র ভেকসিন না আসা পর্যন্ত স্কুল খোলা উচিৎ হবে না বলে তিনি মনে করেন।

 

উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তির বিষয়ে সরকার এখনো নির্দেশনা দেয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, নির্দেশনা দিলে আমরা সেই নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করবো।

 

দেওভোগ হাজী উজির আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হুমায়ুন কবির বলেন, করোনায় সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিক্ষার্থীরা। এই ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার জন্য সরকার আপ্রাণ চেষ্টা করছে।

 

তিনি বলেন, বিশেষজ্ঞের সহযোগিতায় একটি পদ্ধতির মাধ্যমে এই সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রণয়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের এই বিশাল ক্ষতির সামান্যতমও যদি পুষিয়ে নেয়া যায় সরকার সেই চেষ্টা করছে। সেজন্য সরকার যে নির্দেশনা দিবে আমরা চেষ্টা করবো তা পূরণ করতে।

 

শিক্ষক সমাজ সরকারের পাশে আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মন্ত্রী আমাদের নিশ্চিত করেছেন এসএসসি পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষার মাধ্যমেই পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হবেন।

 

সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পাঠ্য বইয়ের শুধু মূল বিষয়গুলো সিলেবাসে চলে আসবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আশাকরি শিক্ষার্থীদের জন্য সমস্যা হবে না। তার মতে, এক বছরের সিলেবাস ৩০দিনের মধ্যে নিয়ে আসলে কতটুকু ফলপ্রসু হবে তা নির্ভর করবে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের কাছে কতটুকু গ্রহনযোগ্য করে তুলে ধরতে পারবে তার উপর।

 

তিনি মনে করেন, মূল্যায়ণের ভিত্তিতে যারা পরবর্তী ক্লাসে আসতে পারবে না তাদের পূর্ববর্তী পরীক্ষার ফলাফল দেখে সুযোগ দেয়া উচিৎ হবে। এতে শিক্ষার্থীদের ঝরে পরে যাওয়া থেকে রক্ষা করা যাবে।

 

তিনি বলেন, শিক্ষকরা মানবিকতার শিক্ষা দেয় সুতরাং সেই বিষয়টা অবশ্যই তারা লক্ষ্য রাখবে। এরই মধ্যে তাদের স্কুল থেকে সকলের দুই মাসের বেতন না নেয়ার ঘোষণা দিয়া হয়েছে।

 

তিনি আশা পোষণ করেন, পরিস্থিতির উন্নতি হলে জানুয়ারীতে বই উৎসব হবে। তবে এই আশা পুরণ না হলে ভর্তির পরীক্ষার সময় সেই আনন্দটা গ্রহন করা যাবে।

 

তিনি বলেন, আমরা সরকারের দেয়া সার্টিফিকেট অনুযায়ী ষষ্ঠ শ্রেণিতে শিক্ষার্থীদের ভর্তি করি। এখন নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা ভর্তি করবো।

 

এই শিক্ষক বলেন, জেএসসিতে যেহেতু কোন মেধা বৃত্তি থাকবে না তাই পিএসসি’র বিষয়েও সরকার একটি সিদ্ধান্ত নেয়া প্রয়োজন। তবে এক্ষেত্রে উপবৃত্তির সংখ্যা বৃদ্ধি করে শিক্ষার্থীদের কিছুটা সহযোগিতা করা যেতে পারে।

এই বিভাগের আরো খবর