
# ওয়ার্ড কমিটি গঠনে ব্যর্থতাই এখন তাদের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হাওয়া বইছে। নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনে দীর্ঘ দিন যাবৎ নৌকা দাবী জানিয়ে আসলেও এবার ৪টিতে নৌকার প্রার্থী পেলেও হতাশ জেলা মহানগর আওয়ামী লীগ। তাছাড়া মহানগর আওয়ামী লীগ নির্বাচনে কোথায় কোন এলাকায় মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা কাজ করবে এখনো তা নির্ধারণ করতে পারে নাই দলটির সুত্র জানান। আর এতে করে স্পষ্ট বুঝা যায় তারা এবারের নির্বাচনে বেকার সময় পার করতে যাচ্ছে।
কেননা সদর বন্দরের আংশিক এবং সিদ্ধিরগঞ্জের ১০ টি ওয়ার্ড নিয়ে মহানগর গঠিত। তার মাঝে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন সদর বন্দর নিয়ে গঠিত। কিন্তু এখানে দ্বাদশ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জোরালো ভাবে দাবী জানিয়ে নৌকার প্রার্থী পায় নাই। তাছাড়া গত তিনবারের মত এবার নির্বাচনে জাতীয় পার্টির সাথে মহাজোট না থাকায় সদর বন্দরের আওয়ামী লীগের ভোট কোথায় পরবে তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে নৌকার প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগের মনোনীত হয়ে শামীম ওসমান মাঠ দাবরিয়ে বেরাচ্ছেন। যদিও তার বিপক্ষে এখনো কোন শক্তিশালী প্রার্থী নেই। তার আসনেই তিনি একমাত্র শক্তিশালী প্রার্থী। তাকে জয়ী করতে আওয়ামী লীগের নেতাদের তেমন কষ্ট করতে হবে না। তার পরেও শামীম ওসমানের নির্বাচনী এলাকা সিদ্ধিরগঞ্জের ১০ টি ওয়ার্ড মহানগর আওয়ামী লীগের আওতাধীন। কিন্তু এখানে মহানগরের শীর্ষ নেতাদের তেমন একটা পদচারনা নেই।
তার মাঝে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতির মতে তারা সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুজিবর ও সেক্রেটারি ইয়াছিনের উপর ভর করে আছে। এখানে যে ওয়ার্ড কমিটির নেতা কর্মীদের দায়িত্ব দিবে তেমন ব্যবস্থাও নেই। কেননা মহানগর আওয়ামী লীগ সিদ্ধিরগঞ্জে ওয়ার্ড কমিটি গঠনে ব্যর্থ হয়েছে সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও সেক্রেটারি খোকন সাহা।
তারা শামীম ওসমানের এলাকায় কমিটি গঠনে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। তার মাঝে এখন নির্বাচনের সময় তাদেরকে অলস সময় পার করতে হচ্ছে। তারা যেমন এখন সাংগঠনিক কার্যক্রমে নেই তেমনি নৌকার প্রার্থীর পক্ষেও মাঠে নেই মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনকে দলীয় প্রার্থী ঘোষনা হওয়ার পর মাঠে দেখতে পাচ্ছে না স্থানীয় নেতা কর্মীরা।
অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে জোরালো ভাবে নৌকার প্রার্থী দেয়ার দাবী জানালেও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ তাদের দাবীতে কর্ণপাত করেন নাই। এখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী না দিলেও জাতীয় পার্টি থেকে সেলিম ওসমান মনোনীত হয়ে মাঠে রয়েছেন। ইতোমধ্যে মনোনয়ন জমা দিয়ে জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী সংগঠনের সাথে মতবিনিময় করে সমর্থন নিয়েছেন।
সেলিম ওসমানের বিপক্ষে আওয়ামী লীগের প্রার্থী না থাকায় তার বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে কেউ দাঁড়াতে সাহস করতে পারে নাই। অথচ ২০১৮ সনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সাথে জাতীয় পার্টির মহাজোট থাকায় তখন মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা জোটের প্রার্থীকে জয়ী করার জন্য মাঠে নামেন। সেই সাথে তখন মহাজোটের প্রার্থী সেলিম ওসমানকে জয়ী করেন।
কিন্তু এবার মহাজোট না থাকায় নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে জাতীয় পার্টির পক্ষে তারা নামবে সেই সুযোগ হচ্ছে না। তাই রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা হচ্ছে মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের এখন দলীয় সাংগঠনিক কার্যক্রম নেই, একই সাথে দলীয় প্রার্থী না থাকায় তারা এখন বেকার সময় পার করছে। অথচ মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারাই নিধিরাম সরদারের ভুমিকা পালন করে থাকে।
বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, জাতীয় পার্টি সরাকরের সঙ্গে আসন সমঝোতাও করে তাহলেও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ব্যাপারে কোন কিছু করতে পারবে না। তাছাড়া আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা লাঙ্গল প্রতীকে ভোট দেবেন না এমনটি মোটামুটি নিশ্চিত। এরকম পরিস্থিতিতে জাতীয় পার্টির সাথে কোন প্রক্রিয়া কিভাবে সমঝোতা হবে সেটিও এখন একটি দেখার বিষয়। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় পর্যন্ত এ নিয়ে নানা রকম দর কষাকষি হবে বলেও রাজনৈতিক মহল মনে করছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মাঝে আলোচনা হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের নৌকার প্রার্থী না থাকায় এখানকার নেতাকর্মীরা কাকে ভোট দিবে তা নিয়ে ধোয়াশায় রয়েছে। তাছাড়া স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা বরাবরই বলে আসছেন তারা লাঙলের উপর ভর করে থাকতে চান না। এছাড়া এখানে জাতীয় পার্টির প্রার্থী দেয়ায় বার বার আওয়ামী লীগের নেতারা অবহেলিত হয়ে রয়েছে।
এছাড়া শুক্রবার বন্দরে সেলিম ওসমানকে সমর্থন সভায় আওয়ামী লীগের নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নির্বাচনের পরে তার কাছে যেতে পারেন না। তাই আওয়ামী লীগ নেতারা সেলিম ওসমানের পক্ষে মাঠে নামার মত সিদ্ধান্ত নেন নাই। সব মিলিয়ে নির্বাচনের সময়টা মহনাগর আওয়ামী লীগ বেকার সময় পার করতে যাচ্ছেন। মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়েও এখন তাদের তেমন একটা আনা গোনা নেই।
মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, আমরা সিদ্ধিরগঞ্জের ১০ টি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের কমিটি না থাকায় এখানে থানার সভাপতি সেক্রেটারিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তারা নির্বাচনী পরিচালনা কমিটি গঠন করে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবে। মহানগর আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি এড. খোকন সাহার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন কল কেটে দেন। এস.এ/জেসি