শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

মজুরি বৃদ্ধি ও ফকিরের শ্রমিকদের বিরুদ্ধে মামলা তুলে নেয়ার দাবি

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ২৬ মে ২০২২  

শ্রমিকদের নামে ফকির নীটের মালিকপক্ষের দায়ের করা মিথ্যা মামলা তুলে নিয়ে শ্রমিক হয়রনি বন্ধ করা ও নিম্নতম মজুরি ২০ হাজার টাকা ঘোষণা করাসহ শ্রমিক বিরোধী আইন বাতিল করে গণতান্ত্রিক শ্রম আইন প্রণয়নের দাবিতে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

 

বুধবার (২৫ মে) সকাল ১১টায় ফকির নীটের অর্ধশতাধিক শ্রমিক নারায়ণগঞ্জ মেজিস্ট্রেট আদালতে মামলার হাজিরা দেয়ার পর আদালতের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে চাষাড়া শহীদ মিনারে এসে সমাবেশ করেন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র হাজীগঞ্জ অঞ্চলের নেতা ফকির নীটের ছাঁটাইকৃত শ্রমিক মনোয়ার হোসেন,

 

বক্তব্য রাখেন গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি এম এ শাহীন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, কায়েমপুর অঞ্চলের নেতা সোহেল, ফকির নীটের ছাঁটাইকৃত শ্রমিক মোহন, বাদল, মোস্তফা ও মালেক প্রমূখ। সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম ও ঘর ভাড়াসহ সব কিছুর দাম বেড়েছে।

 

ফলশ্রুতিতে জনজীবনের ব্যয় বেড়েছে কয়েক গুণ কিন্তু শ্রমজীবি মানুষের এক টাকাও আয় বেড়েনি। শ্রমিকরা দিন-রাত পরিশ্রম করে যে টাকা বেতন পায় তা দিয়ে তাদের সংসার চলে না। আধপেটা খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। বেঁচে থাকার তাগিদে শ্রমিকদের দুবেলা বেলার খাবার জোগাড় করা ও ঘর ভাড়াসহ পরিবারের ন্যূনতম চাহিদা মেটাতে এখন তাদের অতিরিক্ত কাজের ঝুঁকি নিতে হচ্ছে।

 

এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে শিল্প কারখানার মালিকরা দৈনিক ৮ ঘণ্টা কাজের পরিবর্তে শ্রমিকদের দিয়ে দ্বিগুণের বেশি সময় কাজ করিয়ে নিচ্ছে। শুধু তাই নয় সাপ্তাতাহিক ছুটির দিনেও শ্রমিকদের বিশ্রাম নেয়ার সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। জোরজবরদস্তি ওভারটাইম ডিউটি করতে বাধ্য করা হচ্ছে।

 

মাত্রাতিরিক্ত কাজের চাপে শ্রমিকরা মানসিক ও শারীরিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। কারখানার মালিকরা আইন-কানুনের তোয়াক্কা করে না। শ্রমিকরা কোন কথা বললে চাকুরি থেকে বের করে দিচ্ছে। মামলা হয়রানি করে তাদের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে। এই অবস্থা আর চলতে দেয়া যায় না।

 

ফকির নীটের দায়ের করা মামলায় শতাধিক শ্রমিককে হয়রানি করা হচ্ছে। অবিলম্বে মামলা তুলে নিয়ে শ্রমিক হয়রানি বন্ধ করতে হবে। অন্যতায় বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলে শ্রমিকদের জীবন-জীবিকা রক্ষা ও মালিকদের অন্যায়-অত্যাচারের দাঁতভাঙা জবাব দেয়া হবে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন সারাদেশের শ্রমিকরা মজুরি বাড়ানোর দাবি তুলেছে কিন্তু সরকার তা বিবেচনায় না নিয়ে মালিকদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।

 

ফলে শ্রমিকদের মনে চরম ক্ষোভের জন্ম নিচ্ছে। এই ক্ষোভ বিক্ষোভে রূপ নিলে সামাল দেয়া যাবে না। অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার আগেই শ্রমিক বিরোধী আইন বাতিল করে গণতান্ত্রিক শ্রম আইন প্রণয়ন, শ্রমিক ছাঁটাই, মামলা-হয়রানি বন্ধ করাসহ বর্তমান বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে নিম্নতম মজুরি ২০ হাজার টাকা ঘোষণার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমিয়ে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনার জন্য নেতৃবৃন্দ সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।


উল্লেখ্য, ফকির নীটে গত ২০২০ সালের মে মাসে শ্রমিকরা ন্যায্য দাবিতে আন্দোলন করে। সেই আন্দোলনে কারখানা ভাংচুর ও কর্মকর্তাদেরকে মারধরের অভিযোগ তুলে কারখানা কর্তৃপক্ষ তৎকালীন সময়ে অজ্ঞাত নামা ১৫০ থেকে ২ শতাধিক শ্রমিকের বিরুদ্ধে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
 

এই বিভাগের আরো খবর