Logo
Logo
×

বিশেষ সংবাদ

মনিটরিংয়ের অভাবে না.গঞ্জে কমেনি গরুর মাংসের দাম

Icon

সাইমুন ইসলাম

প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০২:৫১ পিএম

মনিটরিংয়ের অভাবে না.গঞ্জে কমেনি গরুর মাংসের দাম
Swapno

# অতি দ্রুত শহরে অভিযান পরিচালনা করা হবে : সেলিমুজ্জামান
খানপুর এলাকার বাসিন্দা রিকশাচালক  মোহাম্মদ রফিক। তার রিকশাতে চড়ার সুবাদে কথা হয় তার সাথে। আলাপচারিতার একপর্যায়ে তিনি বলে উঠেন মাংস বলতে যে কিছু রয়েছে তা আমরা প্রায়  ভুলেই গিয়েছি। কৌতুহলবশত জিজ্ঞেস করলাম কেন?  কিন্তু তার অপ্রত্যাশিত জবাবে থ হয়ে রইলাম।

 

 

তিনি বিগত ৯ মাস ধরে সারাদিন কাজ করার পরেও তার পরিবারের সদস্যদের গরুর মাংস খাওয়াতে অসমর্থ। একেবারে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ঐ যেই দাম সেগুলা ক্রয়ের পর আকাশচুম্বী দামের গরুর মাংস কেনা তার জন্য মনে হয় বিলাসিতা।  তার উত্তরে আলাপচারিতা আর দীর্ঘক্ষন চালিয়ে নেওয়ার ইচ্ছে যেনো হারিয়ে গেছে।

 


চলে গেলাম দীগু বাবুর বাজারের মাংসের দোকানে।  দোকানে জিজ্ঞেস করলাম দাম কত?  উত্তর আসলো কয় কেজি। বললাম এক কেজির মত নিবো দাম কত পড়বে?  উনার অঙ্গভঙ্গি দেখে মনে হলো এক কেজি বলে খুব অপরাধ করে ফেলেছি। অন্যরা হয়তো এর চেয়েও বেশি করে নেয়।  তারপর দামের কথা আসতেই তিনি বললেন একদাম ৭৫০।  আমি মধ্যম উপার্জনের   মানুষ। এত টাকায় গরুর মাংস কেনা আমার জন্যও যেনো একটু কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে গেলো।

 


এবার সেই রিক্সা চালকের কথার মর্ম বুঝতে পারলাম।আসলে এমন গল্প হাজারো রফিকের।  শহরে মাংসের দাম এতটা উচ্চ পর্যায়ে যা কেনার সামর্থ্য হয়তো অনেকেরই হারিয়ে গিয়েছে।  ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা করে।  পাকিস্তানি মুরগি ২৮০, গরু ৭৫০, খাসি ১১৫০।  

 

 

অথচ ২০১৮ সালে মাংস ব্যবসায়ী সমিতি ও সিটি কর্পোরেশন মিলে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৩০০ টাকা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিলো। যা পরবর্তীকালে কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই ধীরে ধীরে বাড়তেই থাকে। বর্তমানে ৮০০ টাকা পর্যন্ত গিয়ে ঠেকেছে।  পরিবারের অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয়ের পর এত দামের কারণে মাংস কিনতে চাওয়া নিম্ন ও মধ্যমায়ের মানুষদের জন্য যেনো স্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

 


সারাদেশেই জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর  বিভিন্ন বাজারে বাজারে অভিযান পরিচালনা করছে।  ৫৫০-৬৫০ এর আশেপাশে দাম রাখার জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে।  যারা উচ্চ মুল্যে বিক্রি করছে তাদেরকে বিভিন্ন ধরনের আর্থিক দন্ড দেয়া হচ্ছে।  মূল্য তালিকা প্রকাশ করার জন্য তাগিদ দেওয়া হচ্ছে।  কিন্তু ঢাকার পাশের শহর নারায়ণগঞ্জে এমন কোনো চিত্র এ পর্যন্ত দেখা যায়নি।  

 

 

শহরের খানপুর বউবাজার, বাবুরাইল বউবাজার, দিগু বাবুর বাজার, পঞ্চবটি, ফতুল্লা সহ আশেপাশের এলাকায় উচ্চ মূল্যে বিক্রি হচ্ছে এই প্রাণিজ আমিষ।  কিন্তুু সারা দেশের মতো এখানে কোনো অভিযান পরিচালনা না হওয়ায় দাম কমতে দেখা যায়নি।  ফলে ভোক্তারা  প্রকাশ করেছেন চরম অসন্তোষ।  নারায়ণগঞ্জে এ ধরনের অভিযান সম্পর্কে জানতে চাইলে

 


নারায়ণগঞ্জ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক সেলিমুজ্জামান যুগের চিন্তাকে জানান,  কোনো ভোক্তা যদি মনে করে মাংস কিনে প্রতারিত হয়েছে কিংবা অতিরিক্ত দামে কিনতে বাধ্য হচ্ছে তবে তারা আমাদেরকে অভিযোগ করতে পারে, আমরা নিয়মিত মনিটরিং করছি, অভিযোগের সত্যতা পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।  

 

 

এছাড়াও আমরা ইতিমধ্যে সিদ্ধিরগঞ্জের কয়েকটি স্পটে অভিযান পরিচালনা করেছি।  আমাদের লোকবল সংকট রয়েছে। তবে আমরা থেমে নেই। অতি দ্রুত সময়ে নারায়ণগঞ্জের বেশ কয়েকটি জায়গায় আমরা  অভিযান পরিচালনা করবো।

 

 

ভোক্তাদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে নিয়মিত যদি বাজারগুলোতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর অভিযান পরিচালনা করে এবং মূল্য তালিকা টানিয়ে রাখতে বাধ্য করা যেতে পারে তবে  মাংসের দাম অচিরেই নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।এবার দেখার বিষয় মাংসের দাম নিয়ন্ত্রনে আনতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কি ধরনের পদক্ষেপ নেয়।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন