বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১১ ১৪৩১

মর্গের বেহাল দশা, উদাসীন কর্তৃপক্ষ

মেহেরীন জারা

প্রকাশিত: ২১ জুন ২০২২  

 

# এসি থাকলেও সেগুলো অচল
# সবকিছু ঠিক আছে দাবি আরএমও’র


নারায়ণগঞ্জে ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে অবস্থিত একমাত্র মর্গটিতে এখন খুবই বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। মরদেহগুলো পচন রোধের জন্য দীর্ঘ সময় রাখার জন্য যে বিশেষ তাপমাত্রার প্রয়োজন হয়, সেখানে সে ধরণের বিশেষ কোন ব্যবস্থা না থাকায় ভোগান্তির শিকার হন মর্গে নিয়ে আসা মরদেহের আত্মীয় স্বজনদের।

 

সেখানে মরদেহ পচন রোধের জন্য মরচুয়ারি কুলার থাকা সত্ত্বেও সেগুলো ব্যবহার করার জন্য নেই প্রশাসনের অনুমতি। অন্যদিকে রুমের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখার যে এয়ার কন্ডিশনগুলো আছে তাও দীর্ঘ দিন যাবত অকেজো হয়ে পরে আছে। নাম মাত্র দুটো ইলেক্ট্রিক ফ্যানের মাধ্যমে মরদেহ গুলোর প্রয়োজনীয় কার্য সম্পাদনের কারণে মরদেহগুলো বেশী সময় ধরে ভাল রাখা যাচ্ছে না। যদিও হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে উদাসীন। অন্যদিকে এখানে নিয়ে আসা মরদেহগুলোর বেশিরভাগ স্বজনরা এখানকার পরিবেশের কারণে তাদের স্বজনদের মরদেহ এখানে রাখা নিয়ে বাধা প্রদান করেন।


 
গতকাল নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে দুটি কক্ষ নিয়ে মর্গটির কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। রুমের দেয়ালে ঝুলছে দুটি এয়ার কন্ডিশনার (এসি)। কিন্তু সেগুলো অকেজো। রুমের মধ্যে মরদেহ রাখার জন্য মরচুয়ারি কুলারের ব্যবস্থা আছে, কিন্তু সেগুলো ব্যবহারের জন্য প্রশাসনের কোন অনুমতি নেই বলে জানান সেখানকার লোকজন। সেখানে নিয়োজীত কর্মীরা শুধু মাত্র কয়েকটি ফ্যান ব্যবহার করে ময়নাতদন্তের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।


 
সেখানকার কর্মীদের সাথে কথা বললে তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, গত দেড় বছর ধরে এখানকার এসিগুলো নষ্ট হয়ে আছে। এখানকার এসিগুলো সচল করার জন্য কর্তৃপক্ষকে বিভিন্ন সময় জানানো হয়েছে। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। এখন পর্যন্ত এসিগুলো মেরামত করার কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি।

 

মরদেহ রাখার মরচুয়ারি কুলার ব্যবহারের বিষয়ে তারা জানান, এগুলো ব্যবহারের জন্য প্রশাসনের অনুমতি নাই। তাই এগুলো ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এখানে আসা বিভিন্ন স্বজন ও আশে পাশের মানুষের সাথে আলাপ করলে তারা জানান, এখানকার মর্গে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে কোন সুব্যবস্থা না থাকায় ময়নাতদন্তের জন্য আনা মরদেহগুলোতে দ্রুত পচন ধরে। যার ফলে লাশগুলো নিয়ে আমাদের বিপাকে পড়তে হয়। তারা আরও জানান, বিভিন্ন হত্যাকান্ডে নিহত, সড়ক দূর্ঘটনায় নিহতসহ বিভিন্ন অপমৃত্যুর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন পুলিশ। প্রায় সময়ই দেখা যায় ময়নাতদন্ত করার পর নিহত ব্যক্তির মরদেহ শনাক্ত করতে অনেক সময় লেগে যায়। অনেক সময় নিহতের পরিবারের সন্ধানও পেতে অনেক সময় লাগে। কিন্তু প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার অভাবে এসকল মরদেহগুলো পচন ধরে শনাক্তের অযোগ্য হয়ে পড়ে।
 

এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন এএফএম মশিউর রহমানের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, মর্গটির বিষয়ে কোন তথ্য আমার জানা নেই। এই বিষয়ে হাসপাতালের আরএমও (রেসিডেন্সিয়াল মেডিকেল আফিসার) এর সাথে কথা বলে জেনে নিতে বলেন তিনি। এই বিষয়ে ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডাক্তার শেখ ফরহাদ এর কাছে জানতে চাইলে যুগের চিন্তাকে তিনি জানান, মর্গের ভেতর তেমন কোনো সমস্যা নেই, সবকিছু ঠিক আছে।এমই/জেসি
 

এই বিভাগের আরো খবর