শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

মা ও শিশু হাসপাতালে সেবার চেয়ে ভোগান্তিতে রোগীরা

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৫ এপ্রিল ২০২৩  

 

# সেবা না পেয়ে রোগী ফিরে যাওয়ার অভিযোগ
# নার্সদের বিরুদ্ধে রুঢ় আচরণের অভিযোগ

 

 

অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর দীর্ঘ নয় মাস প্রতিটি মায়ের জন্য খুবই কঠিন হয়ে থাকে। এসময় একটু বেশি সর্তকতা আর যত্নের সাথে থাকতে হয় এবং ডাক্তারের পরামর্শ সঠিকভাবে পালন করতে হয়। প্রতি মাসে শিশু ও মায়ের শারিরীক ও মানসিক অবস্থা ঠিক আছে কিনা জানার জন্য চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হয়। যেখানে ডাক্তারের কাছে মানুষ তার সমস্যা নিয়ে যায় সেখানে নারায়ণগঞ্জ সদরের গর্ভবতী মায়েদের আসল সমস্যার কারণ হয়ে উঠেছে ডাক্তার ও নার্স।

 

নগর ভবনের সামনে নারায়ণগঞ্জ মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রে চিকিৎসা সেবা নিয়ে ভুক্ত ভোগীদের নানা অভিযোগ রয়েছে। তাদের অভিযোগ, ডাক্তারের যখন ইচ্ছা হচ্ছে তখন আসছে এবং সেবা দেওয়ার বিষয়টা দেখে নার্সরা। এমন অবহেলায় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে এখানে আসা গর্ভবতী মা ও তাদের অভিভাবকদের। তাছাড়া এখানে কাজ করা নার্সদের রুঢ় ব্যবহারের কারণে অতিষ্ট তারা।

 

অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার সরেজমিনে মা ও শিশু কল্যাণ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের ১ জন ডাক্তার কর্তব্যরত অবস্থায় আছেন, আর ৩ জন নার্স রয়েছে বাকি যারা আছেন তারা বিভিন্ন পদে। হাসপাতালের অফিস কক্ষে সেখান কার দৈনিক রেজিষ্টার দেখতে চাইলে তারা বলেন রেজিষ্টার দেখানোর কোনো অনুমতি নেই।

 

সেখানে রোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের সাথে খুবই বাজে ভাষায় কথা বলা হয়। চিকিৎসার জন্য গেলেও রোগীরা আত্মসম্মানের ভয়ে তেমন কিছু বলেন না। অন্যদিকে দেখা যায় কিছু নার্স বসে নিজেদের মধ্যে আড্ডায় মগ্ন আর তাদের রুমের বাইরে বসে অপেক্ষা করছেন যে কখন তারা ভিতর থেকে ডাকবেন। ঘন্টায় হিসাব করলে ৪ থেকে ৫ জন রোগী দেখা হয় এই চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র।  

 

নারায়ণগঞ্জ মা ও শিশু কল্যাণ হাসপাতালে ডাক্তান দেখাতে আসা আসমা নামের একজন গৃহিণী যুগের চিন্তা কে বলেন, সকাল ৯ টায় এখানে এসেছি আর এখন ১১ টা বাজে ডাক্তার এসেছে। আমি ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ডাক্তারের কাছে আমার রক্তের পরীক্ষার রিপোর্ট দেখাতে এসেছি এতোক্ষন পরে ডাক্তার আসলেও এখন বলছে তাদের মিটিং আছে। এতোক্ষন তাহলে শুধু বসিয়ে না রেখে তারা আমাদের বলতে পারতো যে আজকে ডাক্তার দেখবেন না।  

 

হাসপাতালে আরো কিছুক্ষন থাকার পর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জিমখানা এলাকার এক ভুক্তভোগী নারী জানায়, এখানে রোগীদের সাথে এভাবেই কথা বলা হয় এখানে আমি প্রায় অনেক বার এসেছি আমার নিজের সমস্যার জন্য। আর যত বার এসেছি ঠিক ততবার এদের বাজে ব্যবহারের শিকার হয়েছি। এরা ভিতরে রোগীদের আনাগোনা বেশ একটা পছন্দ করে না। আর ডাক্তারের তো নিজের হাসপাতাল মনে করে যখন খুশি তখনই আসে। আর নার্সরা বেশির ভাগ সময় ফোনে ব্যস্ত থাকে বলা যায়।  

 

এবিষয় হাসপাতালের ডাক্তার শিরীন ফাতেমাকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমরা খুবই সাদরের সাথে রোগীদের সেবা দিয়ে থাকি। আমাদের এখান থেকে কোনো রোগী বিনা চিকিৎসায় ফিরে যান না। আমাদের এখানে সবাই রোগীদের সাথে খুবই সুন্দর ব্যবহার করে। হয়তো মাঝে মাঝে রোগীদের সংখ্যা বেশি থাকলে তাদের বসতে দিয়ে তাদের স্বজনদের বাইরে যেতে বলা হয় এখন এটা যদি খারাপ ব্যবহার করা হয় তাহলে আমাদের কী করার।

 

একই বিষয় নারায়ণগঞ্জ পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক স্বপন কুমার স্বর্মা যুগের চিন্তাকে বলেন, আমি এখন পর্যন্ত রোগী সেবা না পেয়ে ফিরে এসেছে এমন কোনো অভিযোগ পাইনি। অবশ্য এরকম কোনো অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেব। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যদি সেবাগ্রহীতা কেউ আমদের কাছে অভিযোগ করে আমরা নিশ্চই তার ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিব। তারপর ও আমি খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নিব।

এস.এ/জেসি

এই বিভাগের আরো খবর