বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১০ ১৪৩১

মামুনকে হারিয়ে, গিয়াস বিরোধীরা ছন্নছাড়া !!!

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২৮ নভেম্বর ২০২২  


নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটিতে আহবায়ক হিসেবে গিয়াসউদ্দিনের পদায়ন হওয়ার পর থেকেই জেলা বিএনপির বেশ কয়েকজন ভিতরে ভিতরে ফুঁসছেন। তারা কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছেন গিয়াসউদ্দিনের নেতৃত্বকে। কারণ দীর্ঘদিন ধরেই জেলা বিএনপিকে একটি সিন্ডিকেট মুঠোবন্ধি করে রেখেছিল।

 

 

আর এই সিন্ডিকেটের কারণে জেলায় বহু প্রবীণ নেতা থাকা সত্ত্বেও জেলা বিএনপির নেতৃত্বে আসতে পারেননি। যার ফলে তৃতীয় সারীর নেতারাই জেলা বিএনপিকে নেতৃত্ব দিয়েছে।

 

 

জেলা বিএনপিতে সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রনকারী নেতারা; জেলা বিএনপির তৃতীয় সারির নেতাদেরকে শীর্ষ পদে পদায়ন করেন। তাদের নিজস্ব অনুগামী নেতাদের জেলা বিএনপির বিভিন্ন ইউনিটে শীর্ষ পদে পদায়ন করে; তাদের নিজস্ব বলয়কে শক্তিশালী করছে।

 

 

কিন্তু এই তৃতীয় সারির নেতাদের মধ্যে অন্যতম ছিল মামুন মাহমুদ। কারণ তাকে বরাবর জেলা বিএনপির শীর্ষ পদে আসীন করে সিন্ডিকেটের নেতারা ফয়দা লুটত। কিন্তু জেলা বিএনপিতে তাদের দীর্ঘদিনের নিয়ন্ত্রণকারী মামুন মাহমুদকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে; এখন গিয়াসকে ঠেকাতে মড়িয়া হয়ে উঠেছেন সিন্ডিকেট নেতারা ।

 


দলীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। জেলা বিএনপির কমিটিতে নারায়ণগঞ্জের সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনকে আহবায়ক ও গোলাম ফারুক খোকনকে সদস্য সচিব করে ৯ সদস্য বিশিষ্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।

 

 

এছাড়া বাকি সাতজনের মধ্যে সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক করা হয় মামুন মাহমুদ যে বিগত কমিটিতে সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করেছে। এর আগে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দায়িত্ব পালন করেছে।

 

 

তবে এবার জেলা বিএনপির কমিটিতে মামুন মাহমুদের শীর্ষ পদে পদায়ন না হওয়ায় এবং সিন্ডেকেট নেতাদের কেউ বা বিশ্বস্ত অনুগামীদের ৯ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে পদায়ন না হওয়ায় মাথার উপর আকাশ ভেঙ্গে পড়ে এবং ভিতরে ভিতরে ফুঁসতে থাকে।

 

 

কারণ মামুন মাহমুদকেই জেলা বিএনপির ট্রাম্প কার্ড হিসেবে ব্যবহার করে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপিতে ছড়ি ঘোরাতো জেলার কয়েকজন সেন্ডিকেট নেতা। কারণ গিয়াসউদ্দিন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ায় তাদের ছড়ি ঘোড়ানো বন্ধ হয়ে গেছে।

 

 

কারণ গিয়াসউদ্দিন বিএনপির একজন বিচক্ষণ প্রবীণ রাজনীতিবীদ এবং সাবেক সফল সংসদ তাকে দিয়ে কখনোই এই সেন্ডিকেট নেতারা কোন মনগড়া স্বার্থ হাচ্ছিল করতে পারবে না জেলা বিএনপিতে। গিয়াসউদ্দিন দায়িত্ব পাওয়ায় সবচেয়ে বেশী মাথায় হাত পড়েছে জেলা বিএনপি থেকে পদত্যাগকারীর নেতা শাহ আলমের।

 

 

কারণ গিয়াস-শাহ আলম তারা দুজনই ফতুল্লা নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন বিএনপি থেকে মনোনয়ন যুদ্ধ করেন যার ফলে তাদের দুজনের মধ্যে দা-কুমড়া সম্পর্ক। এজন্যই বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেও শাহ আলম মামুন মাহমুদকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে জেলা বিএনপিতে ছড়ি ঘুড়াতেন।

 

 

যার চিত্র প্রকাশ পায় ফতুল্লা থানা বিএনপির আহবায়ক কমিটিতে কারণ ফতুল্লা থানা বিএনপিতে শাহ আলমের বিশ্বস্ত লোক জাহিদ হাসান রোজেলকে ফতুল্লা থানা বিএনপির আহবায়ক করা হয়। আর তাকে আহবায়ক করার পিছনে সহায়াতা করেছেন মামুন মাহমুদ।

 

 

আর উক্ত পদে শাহ আলমের বিশ্বস্ত লোক রোজলকে পদায়ন করার মূল কারণ হল শাহ আলম বিএনপি থেকে পদত্যাগ করার আগে এই পদটি বহন করতেন।

 

 

তবে শাহ আলম বিএনপির রাজনীতি থেকে পদত্যাগ করে চলে গেলেও মামুন মামুদকে দিয়ে জেলা বিএনপিসহ ফতুল্লা থানা বিএনপিতে তার বলয়কে সচল রাখত।

 

 

কিন্তু মামুন মাহমুদ জেলা বিএনপি শীর্ষ পদ হারানোর পর থেকেই শাহ আলম রাজনৈতিকভাবে বেকায়দায় পড়ে যায়। তবে জেলা বিএনপির রাজনীতিতে শাহ আলম তার বলয়কে আবারও শক্তিশালী করতে গিয়াস ঠেকাতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।

 

 

অপরদিকে জেলা বিএনপিতে রাহুগ্রাস হিসেবে পরিচিত নজরুল ইসলাম আজাদ। এই আজাদ জেলা বিএনপিতে নিজেকে জেলা বিএনপি’র অঘোষিত অভিভাবক হিসেবে বুঝিয়ে দীর্ঘদিন দাপিয়ে বেড়িয়েছে।

 

 

কিন্তু বর্তমান সময়ে জেলা বিএনপিতে গিয়াসউদ্দিনকে আহবায়ক করায় নজরুল ইসলাম আজাদ নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির রাজনীতিতে চুপসে গেছেন। কারণ জেলা বিএনপির পূর্বের কমিটির সদস্য সচিব মামুন মাহমুদকে ব্যবহার করে, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপিতে ছড়ি ঘুড়াতেন আজাদ।

 

 

কিন্তু জেলা বিএনপিতে গিয়াসউদ্দিন নেতৃত্বে চলে আসায় তার ছড়ি ঘোড়ানো বন্ধ হয়ে যায়। কারণ গিয়াসউদ্দিনের সাথে পূর্বের থেকেই বনিবনা ছিল আজাদের। যেটা জেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটি হওয়ার পরই প্রকাশ পায়। কারণ জেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটি গঠনের পর এই কমিটির সাথে কোন সভা সমাবেশে দেখা যায়নি আজাদকে।

 

 

কিন্তু পূর্বের কমিটির বিভিন্ন সভা সমাবেশে আজাদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যেত। কিন্তু এখন আর জেলা বিএনপির পাশে দেখা যায় না আজাদকে। কারণ বর্তমান জেলা বিএনপির কমিটিতে সে ছড়ি ঘোড়াতে পারবে না।

 

 

যার ফলে গিয়াসকে ঠেকাতে এখন মরিয়া আজাদ। এতে প্রতিয়মান হয় যে, বিগত সময় জেলা বিএনপিতে বিতর্কের মূল হোতাই ছিল মামুন মাহামুদ। কারণ মামুন মাহমুদ নেতৃত্ব থাকা অবস্থায় নানা ধরণের বিতর্ক জন্ম দিয়ে গেছেন।

 

 

পাশাপাশি জেলার স্বার্থলোভী নেতাদের স্বার্থলোভী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় সহায়াতা করেছেন। এছাড়া গত এপ্রিল মাসে মামুন মাহমুদের ছুড়ি আঘাতের ঘটনায় গিয়াসকে ফাঁসানের চেষ্টা করেছিল। পাশাপাশি জেলা বিএনপির নেতৃত্ব থাকা অবস্থায় গিয়াসকে নেতৃত্ব শূন্য করতে বিগত সময়ে জেলার বিতর্কিত নেতাদের সাথে সমন্বয় করে নানা ধরণের অপকৌশল করে বেড়িয়েছেন মামুন মাহমুদ।

 

 

যার জন্য বর্তমান নবগঠিত জেলা বিএনপি কমিটিতে মামুন মাহমুদকে সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক পদে রাখা হলেও নবগঠিত জেলা বিএনপির সাথে দেখা যায় না মামুন মাহমুদকে।

 

 

কিন্তু বিএনপির তৃণমূলের নেতারা দাবি করছেন মামুন মাহমুদ এখনো জেলা বিএনপির আহবায়ক গিয়াসকে ঠেকাতে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। এন.এইচ/জেসি

এই বিভাগের আরো খবর