বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

মীর জুমলা সড়কে ময়লার ডাম্পিং

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২৮ মে ২০২৩  



নারায়ণগঞ্জ সদরের সবচেয়ে বড় পাইকারী বাজার দিগু বাবুর বাজার। বাজারের ভিতরে নগরীর গুরুত্বপূন্য একটি সড়ক মীর জুমলা সড়ক। নাসিকের ১৫ নং ওয়ার্ডের অধিনে থাকা এই বাজারের পাশ ঘেসে বঙ্গবন্ধু সড়ক ও সিরাজউদ্দৌলা সড়কের মধ্যে সংযোগ স্থাপন কারী গুরুত্বপূর্ণ এই মীর জুমলা সড়ক যানবাহন বা পথ চারীদের চলাচলের জন্য অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

 

 

কারণ বাজারের মূল ডাম্পিং স্পট বানানো হয়েছে এই সড়কটিকে। নিদিষ্ট কোনো ডাম্পিং স্পট না থাকায় বাজারের ভিতরে থাকা এই মীর জুমলা সড়কের একটা অংশকে বাজারের মূল ডাম্পিং স্পট বানিয়ে ময়লা অপসারণের কাজ করে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মীরা। প্রতিদিন এই সড়কটি হাজারো মানুষ তাদের যাতায়াতে ব্যবহার করে থাকে। তবে এই ময়লা ডাম্পিং এর কারণে নাকে হাত কিংবা রুমাল ব্যবহার করে হাটতে হয় মানুষের বাজে দুর্গন্ধে বেহাল অবস্থা এই সড়কের।

 


এছাড়া বাজারের ময়লা অপসারণের জন্য সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন কমীদের বিরুদ্ধে টাকা আদায়ের অভিযোগ করেছে বাজরের ব্যবসায়ীরা। প্রতিদিন পুরো বাজার থেকে ময়লা অপসারনের জন্য দোকান প্রতি ৩০ থেকে ৪০ টাকা করে আদায় করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীরা। বাজারে প্রতিদিন নিম্নে ৫শ থেকে ৭শ দোকান বসে ভাসমান দোকান বসে। এসব দোকানীদের কাছে থেকে প্রতিদিন ময়লার বল বাবদ ৩০ থেকে ৪০ টাকা করে নেওয়া হয় যা সম্পূর্ন নিয়ম বিরদ্ধে।

 


গতকাল সরেজমিনে নারায়ণগঞ্জ দিঘু বাবুুর বাজার ঘুরে দেখা যায়, শহরের সবথেকে বড় বাজারে নিত্যপণ্য বাজরের সহজলভ্য মূল্যের কারণে শহরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা এখানে আসেন বাজার করতে তবে বাজরে আসার পর তাদের পড়তে হয় অস্বাস্থকর অবস্থায়। তাছাড়া রাস্তায় ময়লা পানি থাকায় রাস্তা দিয়ে হাটার তেমন কোনো পরিস্থিতি থাকে না।

 

 

অন্যদিকে বাজারের ময়লার ডাম্পিং এর কারণে রাস্তার অর্ধেক অংশ ময়লায় পড়ে থাকে এবং রাস্তার পাশে বিভিন্ন সবজি ও নিত্য প্রয়োজনীয় পন্যের দোকান বসার কারণে মীর জুমলা সড়কে প্রায় যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে পথচারীদের নানা ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

 

 

সড়কের উপর ময়লার ডাম্পিং বানানোর কারণে বাজারের অনেক ব্যবসায়ী অভিযোগ করে বলেন প্রতিদিন সিটি কর্পোরেশন থেকে ময়লার গারি আসলেও  মাত্র ২ ট্রাক ময়লা এখান থকে নিয়ে যাওয়া হয় যেখানে প্রতিদিন ৫ থেকে ৭ ট্রাক ময়লা জমা হয় এই ডাম্পিংয়ে।  শুধু বাজারের ময়লাই নয় আশে পাশের এলাকা থেকে বাসা বাড়ির ময়লা এনে এখানে ডাম্পিং করা হয়।
 

 


তবে বাজার হলেও এর আশে পাশে নানা জায়গায় মানুষ বসবাস করেন তবে এই বাজারের এমন অস্বাস্থকর পরিবেশে বেহাল দশা এই এলাকার বাসিন্দা দের। তাদের প্রায় অভিযোগ সবসময় নোংরা পরিবেশ ও বাজে দুর্গন্ধের জন্য বাসায় থাকাও মুসকিল। তাছারা এই এলাকার মানুষের দৈনিক যাতায়াতেও অনেক সমস্যা হয়।

 

 

যাতাযাতের রাস্তায় প্রতিনিয়তই ময়লা পানি ও দুর্গন্ধ থাকার কারণে রাস্তা দিয়ে হাটা চলা করার মতো কোনো অবস্থা থাকে না।  এছাড়াও বাজার প্রতিদিন পরিস্কার করার কথা থাকলেও বাজার প্রতি দিন পরিষ্কার  করা হয় না বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

 


বাজারের শরিফ নামের একজন সবজি ব্যবসায়ীর সাথে কথা বলে জানা যায় এখানে প্রতি দিনের দোকান বসানোর জন্য টাকা দিতে হয় এর উপর আবার প্রতিদিন ময়লার বির বাবদ ৩০ টাকা করে দিতে হয়। আমরা এমনি গরিব মানুষ আমাদের দৈনিক আয় সীমিত। এই সীমিত আয়ের মাঝে যদি প্রতি দিন এতো টাকা দিতে হয় তাহলে আমাদের পরিবার নিয়ে বাচা মুশকিল হয়ে পড়বে।

 


বাজার করতে আসা একজন পথচারীর সাথে কথা বললে তিনি হাতাশার সাথে বলেন আমি বাজার করতে এখানে প্রায় আসি তবে প্রায় এখানের এই বেহাল অবস্থার জন্য আমার নানা সময় নানা সমস্যায় পড়তে হয়। তাছার বাজারের মধ্যে দিয়ে যাওয়া এই সড়কে ময়লা গুলো স্তুপ করে রাখার ফলে বাজারে দুর্গন্ধ ছড়ায়। এমন অস্বাস্থকর পরিবেশে আসলে নানা রকমের রোগ হতে পারে।

 


বাজারের আরএক দোকানদারের সাথে কথা বলে জানা যায় , বাজারের ইজারাদারা এই ময়লার বিল বাবদ টাকাটা নিয়ে থাকে। টাকা নেওয়ার এই কার্যক্রম অনেক বছর ধরেই চলে আসছে। আগে ২০ টাকা করে নিলেও সময়ের সাথে সাথে তাদের টাকা নেওয়ার পরিমান টাও বেড়েছে।

 


নাসিকের ১৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের কাছে এবিষয় প্রশ্ন করলে তিনি যুগের চিন্তাকে বলেন, বাজার থেকে ময়লা অপসারনের জন্য টাকা নেওয়ার বিষয়ে আমি অবগত নই। যেহেতু নগরীর ময়লা অপসারণের কাজটি নাসিক নিজ দ্বায়িত্বে করে সেক্ষেত্রে এখানে টাকা নেওয়া সম্পূর্ণ বেআইনী। আমি এবিষয় খোঁজ নিয়ে দেখবো যদি এমন কোনো অভিযোগ পাই আমি তাহলে আমি ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

 


নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তার কাছে টাকা নেওয়ার কোনো নিয়ম আছে কিনা এবিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন টাকা নেওয়ার কোনো নিয়ম নেই।

 

যেহেতু আমাদের সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মীদের মাসিক বেতন দেওয়া হয় সেহেতু ময়লা অপসারনের জন্য টাকা নেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। যদি কারো বিরুদ্ধে এমন অভিযাগ আমাদের কাছে আসে আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করবো।  এন.হুসেইন রনী /জেসি

এই বিভাগের আরো খবর