মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১০ ১৪৩১

মুক্ত মানুষকে আদালত কীভাবে জামিন দেয়

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২ ডিসেম্বর ২০২২  

 

# অপশক্তির কলোনিয়াল স্টেট বানানোর ষড়যন্ত্র চলছে


আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, আপনাদের আমি একটি কথা বলি খালেদা জিয়া ২০০৭ ও ২০০৮ সালে যখন তত্ত্ববধায়ক সরকার ছিল। তার বিরুদ্ধে দুইটার অধিক দূর্নীতির মামলা করা হয়। তদন্ত করা হয় এফআইআর হয় চার্টশীট হয় এবং প্রত্যেকটা সময় কিন্তু খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের আদালতে স্মরণাপন্ন হন এবং আদালতে ফাইভ সিক্সটি ওয়ান এ বলেন রিভিসান বলেন যত রকম টু ফর যা আছে।

 

 

সব কিন্তু তারা আদালতে গিয়ে শুধু নিম্ন আদালতে না তারা যেতে যেতে উনারা কিন্তু আপিলের ডিভিশন পর্যন্ত গেছেন। এই মামলাটাকে শেষ করার জন্য এপিলের ডিভিশন বলে দিয়েছেন মামলা শেষ করা যাবে না। বিচারিক আদালতে গিয়ে বিচার হতে হবে। পরে বিচার হয়েছে সাজা হয়েছে উনারা আপিল করেছেন সেটা আবার হাই কোর্টে রায় দিয়ে সাজা বাড়ানো হয়েছে।

 

 

আরেকটা বিচারিক আদালতে সাজা হয়েছে। তার পরে তিনি জেলে গেছেন পরে তার পরিবার থেকে দরখাস্ত করা হয়েছে তার শরীর খারাপ। তাকে যদি জেল থেকে কোন আইনের প্রক্রিয়ায় তাকে যদি ছাড়া হয় সেই প্রার্থনা করা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা তার মহানুভবতায় ৪০১ ধারায় দন্ডাদেশ স্থগিত রেখে দুই শর্তে তাকে মুক্তি দিয়েছেন।

 

 

আমি শুনি বিএনপিরা এখনো বলে তাকে জামিন দিতে হবে। আপনারা সবাই লইয়ার বলেন মুক্ত মানুষকে কোর্ট কিভাবে জামিন দেয়। তাকে তো জেল থানা থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। আবার তাকে জামিন দেওয়ার কি আছে। মনে রাখতে হবে হাই কোর্ট এপিলের ডিভিশন তাকে বেল দেয় নাই। তাকে কোন বেল দেওয়া হয়নি তাকে মুক্ত করা হয়েছে।

 

 

উনারা বলছেন ডিসেম্বরের ১০ তারিখে উনাকে দিয়ে বক্তৃতা দেওয়াবেন। যে দুইটা শর্ত দেওয়া হয়েছে সেটার মধ্যে কিন্তু উনি রাজনীতি করতে পারবেন না, সেই ধরণের কোন শর্ত নেই। কিন্তু একটা কথা উনাদের যে আবেদন ছিল সেখানে পরিষ্কারভাবে লেখা ছিল। যে তার শারীরিক অবস্থা এতোই খারাপ যে তিনি চলাফেরা করতে পারেন না।

 

 

তাকে তারা মুক্তি দিয়ে তার চিকিৎসা করাতে হবে। তাহলে যদি কেউ ১০ তারিখে যান। তাহলে সেই যে দরখাস্তে লেখা ছিল সে জিনিসটা কি মিথ্যা বলে প্রমাণিত হবে না। আজকে যারা স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি তারা স্বোচ্চার সেদিন বঙ্গবন্ধুকে যেভাবে ষড়যন্ত্র করে হত্যা করা হয়েছিল। হত্যা উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশকে হত্যা করা।

 

 

আজকে ও তারা জননেত্রী শেখ হাসিনা সেবা মূলক সরকারের কারণে যে উন্নয়ন হয়েছে। বাংলাদেশকে সারা বিশ্বের উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে। মর্যাদা পেয়েছে সেটাকে হত্যা করার জন্য ও বাংলাদেশকে আবার কোন অপশক্তির কলোনিয়াল স্টেট বানানোর জন্য কিন্তু ষড়যন্ত্র চলছে। গতকাল জেলা আইনজীবী সমিতির ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা সেলিম ওসমান বার ভবনের’ শুভ উদ্বোধন ও বার্ষিক ভোজ অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

 

 


আইনমন্ত্রী আরো বলেন, একটা প্রশ্ন সকলেই আমাকে করে যে নারায়ণগঞ্জে দাওয়াত করলেই আপনি চলে যান কেন। নারায়ণগঞ্জে এরকম দানবীর থাকলে নারায়ণগঞ্জে এ ধরণের ভবন উদ্বোধনে কি আমি না আসতে পারি। আপনাদেরকে যদি বলা হতো আপনারা পারতেন না পারতেন না। ২০১৭ সাল থেকেই  নারায়ণগঞ্জ বারের যে কোন অনুষ্ঠানের দাওয়াতে কিন্তু আমি আসি।

 

 

আমার এ বারের প্রতি একটি টান আছে নারায়ণগঞ্জের মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা আছে এবং নারায়ণগঞ্জের যে প্রকৃতিক সৌন্দর্য তার প্রতি ও আমার এটা দুর্বলতা আছে। সব মিলিয়ে যখন জুয়েল আমাকে বলে আসতে হবে তখনই কিন্তু আমি রাজি হয়ে যাই এখানে আসার জন্য।

 

 

আমার এ দেশে স্বাধীন পেশা করার ক্ষমতা রেখেছি আমাদের কোর্টে যার জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান তার প্রতি আমার গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। আমি তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। ৩০ লক্ষ ভাই ও বোন যাদের আত্মত্যাগের কারণে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। আমরা বাংলাদেশের নাগরীক হতে পেরেছি। আমি স্মরণ করি ২ লক্ষ মা ও বোনদের যারা হানাদার বাহিনী এবং তাদের দ্বারা নির্যাতিত হয়েছিলেন।

 

 

এই স্বাধীনতার জন্যই আমরা আইনের শাসনের জন্য লড়াই করে যেতে পারছি। আপনারা জানেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান তার জীবনে বহুবার আদালতের দারস্থা হয়েছেন। এমন ও আমি দেখেছি আমার পিতা উনার আইনজীবী ছিলেন। সকাল বেলা আমি দেখতাম আমরা পিতা অত্যন্ত হাস্যজ্জ্বল মুখে তিনি কোর্টের দিকে রওনা হয়েছে।

 

 

আমি তখন ছোট তাই আমি জিজ্ঞেস করতাম বাবা আপনি এতো খুশি কেন কই যান। তিনি বলতেন আজকে আমার বন্ধুর মামলার রায় হবে আমি জিতবো। যখন সন্ধ্যায় বাসায় আসতেন তখন মুখটা থাকতো শুকনা চোখটা থাকতো ভিজে। তখন আমি আর উনাকে সাহস করে জিজ্ঞাসা করতে পারতাম না যে কেন উনি এভাবে ফিরে এসেছেন।

 

 

তখন আমরা আব্বা আর আম্মার আলাপের মধ্যেই বুঝতে পারতাম। উনি জেল গেটে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু বেরিয়ে আসবে তখন জেল খানা থেকে বাহির হয়ে এসেছে আবার ধরে নিয়ে গেছে জেল খানায়। আমরা এখন স্বাধীন আমাদের এখন এমন মুখ মলিন হওয়ার মতো কিছু হয় না।

 

 

আমরা আইনের শাসনে বিশ্বাস করি এবং বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা আমাদেরকে সে আইনের শাসন পুরষ্কার দিয়েছেন । আমরা ২১ বছর বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার পাই নাই। বঙ্গবন্ধু হত্যার মামলা করতে হয়েছে দোসরা আগষ্ট দোসরা অক্টোবর ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা ক্ষমতায় আসার পরে। আজকে কোন গরীবের কোন হত্যাকাণ্ডের মামলা আরো বড় মামলা থাকলে ও ৫ মিনিটের বেশি সময় দিতে হয় না।

 

 

সকল থানায় গিয়ে মামলা করা যায়। এটা আগে ও ছিল কিন্তু বঙ্গবন্ধুর পরিবারের জন্য ছিল না। আপনারা আইনজীবী আপনাদেরকে মনে রাখতে হবে। এই যে বার ভবন এই আদালত এগুলো রক্ষা করাই হচ্ছে আইনের শাসনকে রক্ষা করা। এই আইনের শাসনের প্রতি আপনাদের যে শ্রদ্ধা আপনাদের যে ত্যাগ এটা অব্যাহত রাখবেন।

 

 

নারায়ণগঞ্জ বারভবনের তৃতীয়তলার উন্নয়ন কাজে সহযোগিতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার আজকে ইচ্ছা ছিল তিনতলার কথা জুয়েল সাহেব বলেছেন আমি একটু শরীক থাকি। দেখি আমার সেলিম ভাই সম্পূর্ণটা দিয়ে শরীক থেকেছেন ।

 

 

শরীক থাকার কোন জায়গা দেয়নি। আমি নারায়ণগঞ্জে একটি হাসপাতাল লাগবে শুনলাম আমি এ বিষয়ে নেত্রীর সাথে গিয়ে কথা বলবো বাকিটা আল্লাহর ভালো হাতে। আপনারা একটা আদালত চেয়েছেন সেটা আপনারা পাবেন। আমি আগেও যেমন আপনাদের পাশে ছিলাম আগামীতেও আপনাদের পাশে থাকবো।

 

 

আমি অত্যন্ত ভাগ্যবান যে এমন একজন দানবীরের পাশে বসে আমি দুটো কথা বলতে পেরেছি এবং এরকম একজন দানবীর আমাদের ভালোর জন্য এরকমভাবে এগিয়ে এসেছেন। আইনজীবীদের যে ধরণের কোন উন্নয়ন হলেই আমার অনেক ভালো লাগে। আমি খুশি হই।

 

 

এর আগে তিনি সেলিম ওসমান বার ভবনসহ ল’ইয়ার্স ডাইরেক্টরী মোড়ক উন্মোচন ও লাইব্রেরী সফটওয়্যার উদ্বোধন করেন। জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. হাসান ফেরদৌস জুয়েলের সভাপতিত্বে একই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অ্যার্টনি জেনারেল ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলরের চেয়ারম্যান অ্যাড. এ. এম আমিন উদ্দিন ও আইন বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারোয়ার, এমপি সেলিম ওসমান, এমপি শামীম ওসমান ও এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা।

 

 

সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন, নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইবুনাল আদালতের বিচারক নাজমুল হক শ্যামল, জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ, জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল, চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারহানা ফেরদৌস।

 

 

জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দন শীল, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. শহীদ বাদল ও মহানগরের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. খোকন সাহা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বারের সাবেক সভাপতি এড. মহসীন মিয়া।

এস.এ/জেসি

এই বিভাগের আরো খবর