মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১০ ১৪৩১

মুক্তিযোদ্ধা মীর আমান উল্লাহর স্মরণসভা

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২  

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর আমান উল্লাহ'র সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টায় গোদনাইলে বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর আমান পরিষদের উদ্যোগে পরিষদ কার্যালয়ে এ স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়।

 

বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর আমান পরিষদের সভাপতি ড. মহিউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন, খেলাঘর নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি রথীন চক্রবর্তী, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এড. মন্টু ঘোষ,

 

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি জেলা কমিটির সভাপতি কমরেড হাফিজুল ইসলাম, বাম গণতান্ত্রিক জোট জেলা সমন্বয়ক নিখিল দাস, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা কমরেড শিবনাথ চক্রবর্তী, ন্যাপ জেলা নেতা এড. আওলাদ হোসেন, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রমিক নেতা বিমল কান্তি দাস, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি আ. হাই শরীফ,

 

নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ভবানী শংকর রায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর আমান পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শংকর গুহ, সমমনা'র সাধারণ সম্পাদক গোবিন্দ সাহা, বিবর্তন সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে নির্মল সাহা, বীর মুক্তিযোদ্ধা আ. মালেক, শ্রমিক নেতা আনিসুর রহমান আনিস প্রমুখ।

 

বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর আমান স্মরণে বক্তারা বলেন, আমাদের অন্য সকল নেতাকর্মীদের থেকে মীর আমান ছিলেন একটু আলাদা চরিত্রের। তিনি ছিলেন অত্যন্ত বিনয়ী, সৎ, সাহসী ও ত্যাগী। আন্দোলন সংগ্রামে জীবন বিলিয়ে দিয়ে ছিলেন। এমনকি মৃত্যুর পরও মেডিকেল ছাত্রদের জ্ঞান অর্জনের জন্য দেহ দান করেছিলেন ঢাকা মেডিকেলের এনাটমি বিভাগে। মরণোত্তর দেহ দানের ক্ষেত্রে তিনিই নারায়ণগঞ্জে প্রথম ও এখনো একমাত্র।

 

বক্তারা বলেন, মীর আমান ছোট বেলাতেই প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সাথে যুক্ত হয়েছিলেন। তিনি সেতার বাজাতেন, গান গাইতেন, নাটক লিখতেন, নাটক করতেন। কমরেড সুনীল রায়ের সাথে যুক্ত হবার পর কমিউনিস্ট পার্টি ও শ্রমিক আন্দোলনে যুক্ত হন। পার্টি তখন নিষিদ্ধ ছিল তাই প্রকাশ্যে ন্যাপ করতেন।

 

১৯৬৮-৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানকালে গোদনাইল এলাকার প্রথম সারিতে ছিলেন তিনি। মীর আমান সহজেই মানুষকে কাছে টানতে পারতেন। মানুষের কাছে তিনি ছিলেন একজন প্রিয় মানুষ। তিনি ছিলেন বিজ্ঞানমনস্ক ও আদর্শবান। তিনি আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত থাকতেন। নানাবিধ কারণে মানুষ তাকে অত্যন্ত পছন্দ করতো।

 

প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির কোন হুমকি ধামকিতে কখনোই ভয় পেতেন না। তারা আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস দেশের মধ্যে রাজাকারদের সামনে থেকেই লড়েছেন। স্ত্রী মাসুদা সুলতানাকেও মুক্তিযুদ্ধে যুক্ত করেছেন। ইব্রাহিম টেক্সটাইল মিলের শ্রমিকদের আন্দোলনের ক্ষেত্রে জীবন বাজী রেখেছেন।

 

মালিক পক্ষ কোটি টাকার লোভ দেখিয়ে তাকে আন্দোলন থেকে সরাতে পারেনি। হত্যার হুমকি দিয়েও আন্দোলন থেকে সরাতে পারেনি। মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার ও যাবতজীবন জেল রায় হবার পরও তিনি শ্রমিকদের পক্ষে অবিচল থেকেছেন। নেতৃবৃন্দ বলেন তাঁর জীবন থেকে আমাদের অনেক কিছু শিক্ষা নেবার আছে।