শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

যান্ত্রিক ত্রুটিতে ১০ দিন ধরে বন্ধ গাজী পিসিআর ল্যাব

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ২৯ জুলাই ২০২১  

রূপগঞ্জের কাঞ্চনে অবস্থিত গাজী পিসিআর ল্যাবে করোনাভাইরাস পরীক্ষায় গত প্রায় ২ বছরে ১ লাখের অধিক ছাড়িয়েছিলো। এতে  দ্রুত শনাক্ত করায় কোভিড আক্রান্তরা কাঙ্খিত চিকিৎসা নিতে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে যেতে পারতেন কিংবা  কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করে অন্যদের সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকতে পারতেন। কিন্তু গত ১৮ জুলাই থেকে ২৮ জুলাই পর্যন্ত এই বিশেষায়িত ল্যাবটির বায়োটেস্ট কেবিনেট যন্ত্র বিকল হয়ে পড়ায় স্থবির হয়ে পড়েছে এর কার্যক্রম।  

 

ফলে বাধ্য হয়ে পুরো চাপ নিয়ে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে।  আর এ ল্যাব বন্ধ থাকায় নারায়ণগঞ্জ জেলার খানপুর ৩শ শয্যা বিশিষ্ট সরকারী হাসপাতালের ল্যাবে পাঠাতে হচ্ছে। ফলে ওই ল্যাব থেকে রিপোর্ট পৌঁছাতে সময় লেগে যাচ্ছে ৩ থেকে ৪ দিন।আর তাতে প্রকৃত সনাক্তের সংখ্যা নির্ণয় ও সতর্ক ব্যবস্থা গ্রহণে হিমসিম খাচ্ছে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও উপজেলা প্রশাসন।

 

গতকাল বুধবার (২৮ জুলাই ) গাজী পিসিআর ল্যাব প্রধান ডাক্তার রোকসানা রায়হানের সঙ্গে কথা হলে তিনি যান্ত্রিক ত্রুটির জন্য ১০ দিন বন্ধ থাকার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, প্রতিদিন এ ল্যাব থেকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলা ছাড়াও রাজধানী ঢাকা, জেলার অন্য উপজেলা ও আশপাশের জেলার ৫০০ থেকে ৬০০ জনের নমুনা পরীক্ষা হতো এখানে। কিন্তু গত ১৮ জুলাই বায়োটেক  টেস্ট ক্যাবিনেট যন্ত্রটি বিকল হয়ে গেলে এ ল্যাব বন্ধ করতে বাধ্য হই। তবে এ সমস্যা মাননীয় পাট ও বস্ত্রমন্ত্রীকে জানানোর পর তিনি তা দ্রুত মেরামত করে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। ফলে এ সমস্যা খুব শীঘ্রই কেটে যাবে আশা করছি।

 


সূত্র জানায়, গাজী পিসিআর ল্যাব থেকে  ঢাকা, রূপগঞ্জ, আড়াইহাজার, সোনারগাঁও, বন্দর, সিদ্ধিরগঞ্জ, ফতুল্লা, কিশোরগঞ্জ, গাজীপুর, মুন্সিগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষের নমুনা পরীক্ষা করা হতো। ল্যাবটিতে প্রথমদিকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পরীক্ষা করা হয়েছে। সবশেষ  র‌্যাব, পুলিশ, ম্যাজিস্ট্রেট, চিকিৎসক, জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন  শ্রেণি-পেশার মানুষ গাজী পিসিআর ল্যাবে সরকার নির্ধারিত স্যাম্পল প্রতি ১০০ টাকা ফি তে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করিয়েছিলেন। এসব বিষয়ে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার নুর জাহান আরা খাতুন বলেন,যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে গাজী পিসিআর ল্যাব বন্ধ রয়েছে।ফলে জেলা সিভিল সার্জনের নির্দেশনায় জেলার সদর হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট ল্যাবে নমুনা পাঠাচ্ছি।  ওখানে টেস্ট কিট ও লোক সল্পতার কারণে টেস্ট  রেজাল্ট  পেতে ৩ দিন লেগে যায়। এতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।  

 


উল্লেখ্য,  নারায়ণগঞ্জে করোনাভাইরাস পরীক্ষার কোনো পিসিআর ল্যাব ছিলো না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারায়ণগঞ্জে ল্যাব স্থাপনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এরপর বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর (বীর প্রতীক) নিজস্ব অর্থায়নে এ ল্যাব উদ্বোধন করা হয়।  এদিকে নমুনা পরীক্ষার জন্য নারায়ণগঞ্জের একমাত্র করোনা ডেডিকেটেড খানপুর ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভিড় করছেন মানুষ।

 

বুধবার  (২৮ জুলাই) দুপুরে সরেজমিনে হাসপাতালের বহির্বিভাগে থাকা টেস্টে আগ্রহী রূপগঞ্জের মুড়াপাড়ার বাসিন্দা মহসিন মিয়া বলেন, নমুনা দিতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে দীর্ঘ সময়।  করোনা টেস্ট করাতে এসে ভোগান্তির শিকার হচ্ছি।  অথচ এতোদিন রূপগঞ্জেই সেই সুযোগ ছিলো। এভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা রোগীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।তাদের দাবী দ্রুত পিসিআর ল্যাব চালু করার।  

 


এসব  বিষয়ে ৩০০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আবুল বাসার বলেন, ‘এত চাপ যে আমাদের জনবল ও মেশিনারিজ কুলাচ্ছে না। তার উপর গাজী পিসিআর ল্যাব বন্ধ থাকার প্রভাব পড়েছে এখানে। ফলে  একদিনে ৯০০ নমুনা সংগ্রহ হচ্ছে। আমার সর্বোচ্চ  টেস্ট করতে পারি মাত্র ৪০০ জনের। বাকি আরও ৫০০ নমুনা পড়ে থাকে। এতে আরও বাড়তে থাকে। এখানে আবার বিদেশযাত্রীদেরও রিপোর্ট দিতে হয়। ফলে রিপোর্ট পেতে দেরী হচ্ছে।
 

এই বিভাগের আরো খবর