শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৭ ১৪৩১

যুবদলের কমিটি আসার খবরে নেতাদের কদর

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ১৮ জুন ২০২১  

মহানগর যুবদলের আহবায়ক কমিটি আসছে চলতি মাসেই। এই খবর ছড়িয়ে যাওয়ার পরপরই হঠাৎ নারায়গঞ্জের চিহ্নিত নেতাদের দ্বারস্ত হচ্ছেন পদপ্রত্যাশীরা। সূত্র জানিয়েছে, যদিও বলা হচ্ছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় এবার মহানগর যুবদলের কমিটি গঠন করা হবে। কিন্তু প্রচ্ছন্নভাবে বিএনপি’র সাবেক ও বর্তমান সিনিয়র নেতাদের দ্বারস্ত হচ্ছেন যুবদলের শীর্ষপদ প্রত্যাশীরা।

 

সূত্র জানায়, মহানগর যুবদলের আহবায়ক কমিটি নিয়ে নারায়ণগঞ্জের বিএনপি নেতারাও তাদের অনুগামীদের যুবদলের শীর্ষপদে নিয়ে আসতে দৌড়ঝাঁপ করছেন। বিশেষ করে জেলা বিএনপির আহবায়ক তৈমূর আলম খন্দকার, সদস্য সচিব মামুন মাহমুদ, সাবেক সাংসদ গিয়াস উদ্দিন, সাবেক সাংসদ ও মহানগর বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম, সিনিয়র সহসভাপতি এড.সাখাওয়াত হোসেন খান এবং কেন্দ্রীয় বিএনপি’র আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ আঁটঘাট বেধে নেমেছেন বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্রটি। 

 

সূত্র জানায়, গত ২০১৮ সালের ১৯ অক্টোবর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদকে সভাপতি করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের ৫ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। আংশিক কমিটি ঘোষণার ৫ মাস পর খোরশেদকেই সভাপতি রেখে ২০১ সদস্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। ফটোসেশন আর লেজুরবৃত্তির কারণে যুবদল আদতে তেমন কোন ভূমিকা রাখতে পারেনি। আর ব্যর্থতা নিয়েই এই বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি বাতিল করে দেয়া হয় মহানগর যুবদলের কমিটি। সূত্র জানায়, সম্প্রতি আহবায়ক কমিটি আসার খবরে  নেতারা তাদের অনুগতদের যুবদলের শীর্ষ পদ দখলে নিতে মাঠে নামিয়েছে।

 

সূত্র জানায়, মহানগর যুবদলের আহবায়ক কমিটিতে আহবায়ক হিসেবে লড়াইয়ে এড.আবুল কালাম সদ্য অব্যহতি নেয়া  মহানগর বিএনপি’র যুগ্ম সম্পাদক মনিরুল ইসলাম সজলকে মাঠে নামিয়েছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। এছাড়া সজল নিয়ে আড়াইহাজারের বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম আজাদও যুবদলকে নিজ কব্জায় নেয়ার ফন্দি আঁটছেন বলে মনে করেন যুবদলের কর্মীরা। সূত্র জানায়, ভেঙে দেয়া যুবদলের সভাপতি মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ যুবদল থেকে বিদায় নিলেও আসছে কমিটিতে আহবায়ক, সদস্য সচিব এবং ১নং যুগ্ম আহবায়ক পদে  তিন টেক্কা দিয়েছেন বলে মনে করেন যুবদলের কর্মীরা।

 

সূত্র আরো জানায়, দীর্ঘদিন রাজনীতি থেকে দূরে থাকা  মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মাজহারুল ইসলাম জোসেফ, ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ও যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রশিদুর রহমান রশু এবং মহানগর যুবদলের সাবেক সহসভাপতি রানা মুজিবকে মহানগর যুবদলের সুপার থ্রিতে হিসাবে রেখেই খোরশেদ মাঠে নামিয়েছেন। তাদের আশ্বাস ও ভরসা দিয়ে জেলা বিএনপির আহবায়ক এড. তৈমূর আলম খন্দকার লবিং এবং দৌড়ঝাপ করছেন। আর সেটি বুঝতে পেরেই মহানগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে সজলকে ইস্তফা দিয়ে যুবদলের নেতৃত্ব দখলের পরামর্শ দিয়েছেন এড.আবুল কালাম। সজলকে বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম আজাদের মুরিদ মনে করে এমন যুবদল কর্মীরা এরপেছনে আজাদেরও হাত রয়েছে বলে অনুমান করেন।

 

তবে মহানগর যুবদলের সাবেক সহসভাপতি মনোয়ার হোসেন শোখনও নেমেছে মূলত এড.আবুল কালামের ভরসায়। মাঝে কালাম বলয়ের সাথে দুরুত্ব তৈরি হলেও যুবদলের কমিটি দেয়ার আগ মুহুর্ত্বে আবারো শোখন এড.কালামের ভরসায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, এড. তৈমূর আলম খন্দকার এবং এড.আবুল কালামের সাথে টেক্কা দিয়ে রাজনীতি করা এড.সাখাওয়াত হোসেন খানও যে নিশ্চুপ রয়েছেন এমনটি নয়। সূত্র বলছে, ভেঙে দেয়া মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক যুগ্ম আহবায়ক এবং মমতাজ উদ্দিন মন্তু মূলত আহবায়ক পদপ্রত্যাশী।

 

একদিকে সাবেক সাংসদ গিয়াস উদ্দিন এবং মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি এড.সাখাওয়াত হোসেন খানের উপর ভরসা করে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মন্তু। তবে মহানগর যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক সাগর প্রধানও ঘুরছেন এড.সাখাওয়াত হোসেনকে কেন্দ্র করে। সূত্র জানিয়েছে, তৈমূর, কালাম, সাখাওয়াত বলয়ে ঘুরছে ভবিষ্যত যুবদলের আহবায়ক কমিটি। যদিও নাম ঘোষণা হবে মূলত কেন্দ্রীয় নির্দেশনায়। কেন্দ্রের হিসাব-নিকেষ করেই যুবদলে নিজেদের পছন্দের কর্মীদের নামিয়েছেন এই  তিন নেতা। এদিকে মহানগর ছাত্রদলের মেয়াদ শেষ হওয়ায় যুবদলে থাকার ব্যাপারে আশাবাদী বর্তমান ছাত্রদলের সভাপতি সাহেদ আহমেদ। 

 


তবে বিএনপি’র রাজনীতি সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, কমিটি এমনভাবেই দেয়া হবে যাতে কোন বলয়ের একচেটিয়া প্রভাব না থাকে। তবে যুবদলের প্রাণচাঞ্চল্য ফেরানোর যে উদ্দেশ্য নিয়ে যুবদলের কমিটি গঠনের প্রয়াস নিয়েছে কেন্দ্র, সেই প্রয়াতে আনকোরা লোকদেরও প্রতিযোগিতায় নামিয়ে বিএনপির স্থানীয় নেতৃবৃন্দ তাদের নিজেদেরই দুর্বলতা প্রকাশ করে ফেলেছেন। তৃণমূল বলছে, সব বলয়ের লোক থাকুক, তবে যোগ্য এবং নেতৃত্ব দেয়ার ক্ষমতা রয়েছে এমন লোকদের নিয়েই যাতে যুবদলের কমিটি গঠন করা হয়। কর্মসূচির সময় নানা বাহানা আর ফটোসেশনে যাতে সীমাবদ্ধ না থাকে মহানগর যুবদল।    
 

এই বিভাগের আরো খবর