শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

যেই লাউ সেই কদু

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৪ অক্টোবর ২০২২  


#  ভেন্যু ওসমানী স্টেডিয়াম, ৭টি উপ-কমিটি


বর্ধিত সভায় ঐক্যবদ্ধ থাকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনের ভেন্যু নির্বাচন নিয়ে পুরনো দ্বন্দ্বই প্রকাশিত পেয়েছে। বর্ধিত সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গতকাল সোমবার একসাথে সম্মেলনের ভেন্যু নির্বাচন করার কথা।

 

 

 

কিন্তু শেষশেষ আস্থাহীনতায় ভোগা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ মো. বাদলের সিদ্ধান্তেই মাসদাইর ওসমানী স্টেডিয়ামে ২৩ অক্টোবর জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনের ভেন্যু নির্ধারণ করা হয়েছে।

 

 

 

জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সভায় ৭০ জনের মধ্যে মাত্র ২৬ জন উপস্থিত ছিলেন। ২১ জন উপস্থিত হলে জেলা আওয়ামীলীগের কার্যকরী সভার কোরাম পূর্ণ হয় বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক এমএ রাসেল। তিনি যুগের চিন্তাকে বলেন, এটি জেলা আওয়ামীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের পর ১৩ তম কার্যকরী সভা।

 

 

 

 

 

তিনি সম্মেলনের বিষয়ে জেলা আওয়ামীলীগের কার্যকরী সভার সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানান, সম্মেলনের ভেন্যু ওসমানী স্টেডিয়ামে নির্ধারণ করা হয়েছে। ডিসি ও এসপির সাথে কথা বলেই এই ভেন্যু নির্ধারণ করা হয়েছে। তারা জানিয়েছেন, এতো বড় একটা সম্মেলন এটা শহরের বাইরে হলেই ভালো হবে। জেলা আওয়ামীলীগের ২৬ জন সদস্য বসে কার্যকরী সভায় তাই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

 

 

 

 

তিনি বলেন , সম্মেলনকে নিয়ে ৭টি কমিটি করা হয়েছে। সম্মেলন প্রস্তুটি কমিটিতে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে রাখা হয়েছে। এই কমিটিতে সবাই থাকবে। এছাড়া সাংস্কৃতিক, প্রচার ও প্রকাশনাসহ ৭টি উপকমিটি করা হয়েছে। আগামী ৭ অক্টোবর থেকে জেলা আওয়ামীলীগ সম্মেলন সফল করতে আওয়ামী লীগ কার্যালয় থেকে কাজ শুরু করবে।

 

 

 

 

প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে কোথায় কোথায় কি কি করতে হবে সেটি আলোচনার ভিত্তিতে  সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এদিকে জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগ দীর্ঘদিন ধরে বিভক্তিতে ছিল। সম্মেলনকে ঘিরে প্রাণ চাঞ্চল্য তৈরি হয়। এরমধ্যে সম্মেলনে নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নিয়ে প্রতিযোগিতা রয়েছে।

 

 

 

 

গত শনিবার জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।  ক্ষমতাসীন দল নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ মানেই উত্তর দক্ষিণ প্রভাবশালী নেতাদের বুঝানো হয়। এখানে দলীয় কমিটি বা নির্বাচনে দুই মেরুর প্রভাবও রয়েছে ব্যাপক। উত্তর মেরু বলতে শামীম ওসমানের অনুসারীদের বুঝানো হয়।

 

 

 

 

তার বিপরীতে দক্ষিণ মেরু বলতে নাসিক মেয়র আইভীর বলয়ের নেতাদের চিনেন দলীয় নেতা কর্মীরা। তাদের এই দুই মেরুর চাপা চাপিতে দলীয় নেতারা পর্যন্ত চুপ হয়ে থাকে। সকল জল্পনা কল্পনা শেষে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের দিন ধার্য হয়েছে। আগামী ২৩ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের দিন ক্ষন নির্ধারণ করা হয়েছে।

 

 

 

 

তবে সাড়ে ৩ বছর হয়ে গেছে জেলা আওয়ামী লীগের কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। মেয়াদহীন কমিটি দিয়ে দলীয় কার্যক্রম চলে আসছে। কিন্তু এবার তার ইতি ঘটতে যাচ্ছে। দলীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার দুপুরে সম্মেলনকে কেন্দ্র করে জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় জেলার দায়িত্বরত শীর্ষ নেতাদের ব্যর্থতা তুলে ধরা হয়।

 

 

 

 

সেই সাথে বতমান কমিটির সভাপতি আবদুল হাই এবং সেক্রেটারি ভিপি বাদলের নান অপকর্মের কথা তুলে ধরা হয়। এমনকি জেলার কমিটির বর্ধিত সভা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হলেও কোন উত্তর মেলেনি। এই বর্ধিত সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের স্থান নির্ধারণ নিয়ে উত্তর দক্ষিন মেরুর নেতাদেরে মাঝে মত পার্থক্য দেখা দেয়।  

 

 

 


বর্ধিত সভার একাধিক নেতৃবৃন্দ জানান, বর্ধিত সভায় জেলা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটিতে কারা আসবে তা নিয়ে কোন ক্লিয়ার মেসেজ না পেলেও  জেলা কমিটিতে যারা আসবে তাদের মেনে নিতে বলা হয়। কিন্তু জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন কোথায় হবে এই সভায় তা নির্ধারণ করা হয় নাই।

 

 

 

 

 

জেলার নেতৃবৃন্দ বক্তব্য কালে দক্ষিণ বলয়ের মেয়র আইভীর নেতারা শেখ রাসেল পার্কে সম্মেলন করার প্রস্তাব রাখেন। তার বিপরীতে উত্তর বলয়ের সাংসদ শামীম ওসমানের অনুসারীরা ওসমানী পৌর স্টেডিয়ামে করার প্রস্তাব রাখেন। আবার কেউ কেউ খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামের কথা বলেন। কিন্তু তাদের এই প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে স্থানীয় নেতা থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় নেতারা পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি।

 

 

 

 

তবে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম নারায়ণগঞ্জের নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নিজে এখানকার কমিটি দিবেন। যাদের দায়িত্ব দিবেন তাদের যাঁচাই বাঁচাই করে দিবেন। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম তার বক্তব্যে বলেছেন, জেলা আওয়ামী লীগ কিংবা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব কার কাছে দেয়া হবে সেই সিদ্ধান্ত নেবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

 

 

 

 

 

এখানে আমাদেরও কিছু করার নেই। সম্মেলনে নেত্রী যাকে দায়িত্ব দিবেন তাকেই সবার মেনে নিতে হবে। তবে ২৩ অক্টোবর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। তবে সম্মেলনের ভেন্যু নির্ধারণের জন্য ৩ অক্টোবর জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিকে কার্যকরী সভা করে সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা বলেন মির্জা আযম। মির্জা আজমের বক্তব্যের আগে সম্মেলনের ভেন্যু নিয়েও উত্তপ্ত হয়ে উঠে জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা।

 

 

 

 

 

বর্ধিত সভা নিয়ে একটি অংশ প্রস্তাব করেন দেওভোগে শেখ রাসেল পার্কের খোলা মাঠের সম্মেলনের যাতে আয়োজন করা হয়। তবে বেশ কয়েক নেতা প্রস্তাব করেন মাসদাইরে ওসমানী পৌর স্টেডিয়াম কিংবা খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে। তবে জেলা আওয়ামী লীগের আগের কার্যকরী সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরের সভা রূপগঞ্জে আয়োজনের কথা থাকায় সেখানেও সম্মেলন করার কথা অনেকে প্রস্তাব করেন।

 

 

 

 

 

তবে এব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত বর্ধিত সভায় হয়নি। ফলে ৩ অক্টোবর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সভার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা বলেন মির্জা আজম। কিন্তু রাজনৈতিক বোদ্ধামহলে বলা বলি হচ্ছে দীর্ঘ দিন ক্ষমতায় থেকেও নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ উত্তর দক্ষিন জেলার সম্মেলনকে কেন্দ্র করে একটি ভেন্যু নিয়ে এক হতে পারেননি।

 

 

 

 

 

 

এমনকি তারা সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধাবোধ করেছে। তাই সচেতন মহলে বলা বলি হচ্ছে জেলার সম্মেলনের স্থান নির্ধারণ নিয়ে তারা বিভক্ত। এখানেও তারা কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে এক হয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। তবে নেতাদের এই সকল জল্পনা কল্পনা কাটিয়ে নাসিক মেয়ার আইভীর বক্তব্যে পরিষ্কার করে দেন, মেয়র আইভী সম্মেলনের ভেন্যু প্রসঙ্গে বলেন, নারায়ণগঞ্জে যেখানে সম্মেলন নির্ধারণ করা হবে সেখানেই হবে। এখানে ভয়ের কিছু নেই।

 

 

 

 

 

সেটা রেললাইনের এইপার হোক বা সেই পার হোক। আমরা আওয়ামী লীগের দল করি। আমরা কাউকে জমা খরচ দিয়ে রাজনীতি করি না। শেখ রাসেল পার্কে হোক আর ওসমানি স্টেডিয়ামে হোক কোন ভয় পাওয়ার কিছু নাই। আমরা শেখ হাসিনার রাজনীতি করি। আমরা প্রত্যেকে যখন এক একজনে থানার ভাগ তাহলে ভয় কিসের।

 

 

 

 

 

নেতৃবৃন্দকে আমি একটা কথা বলতে চাই সম্মেলন সিকিউর্ড জায়গা হতে হবে। সেটা কোথায় হবে সকলে বসে নির্ধারণ করেন। আমাদের কোন পক্ষপাতিত্ব করার দরকার নাই। এক দল বলবে শেখ রাসেল পার্কে হবে আরেক দল বলবে ওসমানি স্টেডিয়ামে হবে। সব শেষে আমরা শেখ হাসিনার কর্মী এই কথা মাথায় রেখে আমাদেরকে কাজ করতে হবে।   এন.এইচ/জেসি

এই বিভাগের আরো খবর