শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কাঁচপুরের ডাম্পিংয়ে নষ্ট হচ্ছে যানবাহন

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ৮ অক্টোবর ২০২১  

যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুরে পুলিশের দুটি ডাম্পিং স্টেশনের ভেতরে দীর্ঘদিন খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকা অযত্ন, অবহেলায় রিকশা, অটোরিকশা, বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, ব্যক্তিগত গাড়ি এবং মোটরসাইকেলসহ নষ্ট হচ্ছে শত শত যানবাহন। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, লাইসেন্সবিহীন, চোরাই, দূর্ঘটনা কবলিত, মাদক বহনকারী যানবাহন, অবৈধ মালপত্রসহ বিভিন্ন কারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেসব যানবাহন জব্দ করে সেগুলো আইনি প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত পুলিশের নির্ধারিত ডাম্পিংয়ে রাখা হয়।

 

ঢাকা মহানগরের ওয়ারী ও মতিঝিল জোন এলাকার অর্ন্তভূক্ত বিভিন্ন থানা পুলিশ ও ট্রাফিক বিভাগে জব্দ করা যানবাহন সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুরের একটি ডাম্পিং স্টেশনে এবং কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশ কর্তৃক জব্দ করা বিভিন্ন যানবাহন অপর একটি ডাম্পিং স্টেশনে রাখা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে দুটি ডাম্পিং স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, ডাম্পিংয়ের ভেতরে খোলা আকাশের নিচে অযত্ন, অবহেলায় পড়ে আছে রিকশা, অটোরিকশা, বাস, ট্রাক, ব্যক্তিগত গাড়ি,  মোটরসাইকেল ও মাইক্রোবাসসহ কয়েক শত যানবাহন। 

 

ডাম্পিং স্টেশনে পড়ে থাকা যানবাহনের মধ্যে সাধারণত রিকশার সংখ্যাই বেশি। বছরের পর বছর খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকায় মরিচা ধরে যানবাহনগুলোর ওপর লতাপাতা গজিয়েছে। এছাড়া পড়ে থাকা যানবাহনগুলোর বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ও ব্যাটারীসহ মূল্যবান অনেক জিনিসপত্র চুরি হয়ে গেছে। ডাম্পিং স্টেশনের আশে পাশে ঘুরতে দেখে কথা হয়, সাইনবোর্ড এলাকার রিকশাচালক সমর আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় দেড় বছর আগে রাস্তা থেকে পুলিশ আমার রিকশাটি ডাম্পিং স্টেশনে নিয়ে আসে। বর্তমানে আমার রিকশাটির উপরের খাঁচা ছাড়া আর কোন কিছুই অবশিষ্ট নেই, সবকিছু চুরি হয়ে গেছে। পুলিশের হাতে পায়ে ধরে কাকতি মিনতি করেও আমার একমাত্র সম্বল রিকশাটি ফেরত নিতে পারছি না। 

 

মদনপুর এলাকার অটোরিকশা চালক কবির হোসেন বলেন, সাত মাস আগে আমার গাড়িটি রাস্তা থেকে পুলিশ ডাম্পিং স্টেশনে নিয়ে যায়। বর্তমানে গাড়ির ইঞ্জিন, ব্যাটারীসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে গেছে। পুলিশের সঙ্গে থাকা সোর্সরা রিকশার বিভিন্ন যন্ত্রাংশ চুরি করে অন্যত্র বিক্রি করে দিয়েছে। 

 

ডাম্পিংয়ে পড়ে থাকা যানবাহনগুলোর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা রিজার্ভ পুলিশের এএসআই মো. হাসান মিয়া বলেন, তিন জন আনসার সদস্যকে নিয়ে আমি এ ডাম্পিংয়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছি। লাইসেন্সসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় এবং মামলার কারণে বিভিন্ন যানবাহন এখানে রাখা হয়। আদালতের অনুমতি পেলে ডাম্পিংয়ে থাকা যানবাহন ছেড়ে দেওয়া হয়। আদালতথেকে অনুমতিপত্র আনতে না পারায় শত শত যানবাহন নষ্ট হচ্ছে। 

 

কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ওসি মনিরুজ্জামান জানান, বিভিন্ন সময় জব্দকৃত যানবাহনগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় ডাম্পিংয়ের ব্যবস্থা নেই। এ কারণে ওই সব যানবাহনগুলো নষ্ট হচ্ছে। 

 

এই বিভাগের আরো খবর