বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৫ ১৪৩১

রমজান পুঁজি করে বাড়ছে দ্রব্যমূল্য, অসহায় মানুষ

আবু সুফিয়ান

প্রকাশিত: ২০ মার্চ ২০২৩  


জীবনের জন্য অতি প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধগতির কারণ নিম্ন আয়ের মানুষকে দুর্বিষহ করেছে। প্রতিনিয়ত সব কিছুর দাম বেড়েই চলছে। সব ধরনের উপকরণের দাম এখন মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। চাল, ডাল, তেল, সবজি থেকে শুরু করে মাছ কিংবা মাংস কোনটিই বাদ পরেনি এই মূল্যবৃদ্ধির আঁচর থেকে।

 

 

বাজারে প্রশাসনের তদারকি না থাকায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর সিন্ডিকেটে অসহায় সাধারণ মানুষের বাজার ব্যয় বেড়েছে। এদিকে নিত্যপণ্যের দাম বাড়লেও মানুষের আয় না বাড়ায় এই ভোগান্তি যেন চরমে। রমজান দরজায় কড়া নাড়ছে অথচ ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাতে জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে।

 

 

আমদানি কমেছে, যুদ্ধ চলছে, আমাদের কিনতে হচ্ছে বাড়তি দামে এরকম নানান কথা যেন তাদের মুখস্থ কারা শেখা বুলি। যার কারণে দিশেহারা হয়ে যাচ্ছে সীমিত আয়ের মানুষ। 

 

 

আজ শুক্রবার (১৭ মার্চ) নারায়ণগঞ্জ শহরের দ্বিগুবাবুর বাজার ঘুরে দেখা যায়, সরবরাহ বাড়ার পরও কমেনি সবজির দাম। বেড়েছে মাছের দাম। আর এদিকে অপরিবর্তিত সব ধরনের মাংসের দাম। দ্বিগুবাবুর বাজারে সবজির দোকানগুলো ঘুরে দেখা যায়, ৫ কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়।

 

 

এছাড়া কেজি প্রতি লম্বা বেগুন ৬০ টাকা, গোল বেগুন ১০০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, পটল ৭০ টাকা, ঢেঁরস ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, শিম ৪০ টাকা, শসা ৪০ টাকা, টমেটো ২০ থেকে ৩০ টাকা, কচুর লতি ১০০ টাকা, গাজর ৩০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা, বাঁধা কপি পিস ২০ থেকে ৩০ টাকা, হালি প্রতি লেবু ৪০ টাকা, আদা কেজি প্রতি ১১০ থেকে ১২০ টাকা, রসূন ৮০ থেকে ৯০ টাকা, মূলা ২০ টাকা। ৫ কেজি পেঁয়াজ ১৬০ থেকে ২০০ টাকা।

 

 

দ্বিগুবাবুর বাজারে সবজি কিনতে এসেছেন উত্তর চাষাঢ়ার মো. রমিজ উদ্দিন। তিনি যুগের চিন্তাকে বলেন, পুরো শীত চলে গেলো সবজি ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন্ সাজানো নাটকে। কোন রকমের সরবরাহ ঘাটতি না থাকার পরও ব্যবসায়ীরা ভরা শীতে ক্রেতাদের কাছ থেকে নানা অজুহাতে অতিরিক্ত দাম আদায় করেছিল।

 

 

এখনও বাজারের সেই সবজির দাম কমার কোন নাম গন্ধ নাই। শেষে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, এই যদি হয় সবজি বাজারের অবস্থা তাহলে মানুষ কি খেয়ে বাঁচবে ? একই বাজারের আরেক সবজি ক্রেতা মো. মানিক মিয়া বলেন, বাজারে এখন শুধু আলু আর শিমের দাম কিছুটা কমেছে। বাকি সব ধরনের সবজির দাম আগের মতই আছে।

 

 

মানিক মিয়া বলেন, বাজারে সব সবজি ভরপুর কিন্তু তারপরও কেন যে দাম কমছে না কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। এই বাজারের কয়েকজন সবজি বিক্রেতাদের সাথে কথা বললে তারা বলেন, আমাদের কিনতে হচ্ছে বাড়তি দামে। আড়ৎ-এ সব রকমের সবজির দাম এখনও চড়া বলে তারা জানান। 

 

 

এদিকে মাছের বাজারে যেন আগুন লেগে আছে। মাছ বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি টাকি মাছ বিক্রি হচ্ছে সাইজ ভেদে ২৬০ থেকে ৩৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, রুই ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, ছোট বাতাসি মাছ ৯০০ টাকা, বাইম ৮০০ টাকা, টেংরা ৬৫০ টাকা, পাবদা ৪৫০ টাকা, দেশি পাবদা ৬৫০ টাকা, চিংড়ি ৬০০ টাকা, শিং ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা। 

 

 

কই ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, রূপচাঁদা ৭৫০ টাকা, পাঙ্গাস ২০০ টাকা। এদিকে ছোট সাইজের ইালস ৫০০ টাকা, মাঝারি ৬৫০, বড় সাইজ ১৫৫০ থেকে ১৬০০ টাকা। শহরের এই মাছের বাজারে মাছ কিনতে এসেছেন শিল্পাঞ্চল বিসিকের মো. ইসমাইল। তিনি বলেন, বর্তমান মাছের বাজারের যা অবস্থা দাম কমার কোন নাম নাই।

 

 

এভাবে চললে থাকলে শুধু সবজি দিয়েই জীবন চালাতে হবে। এদিকে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ১০ টাকা বেড়ে ২৬০ টাকায়, কক ৩৬০, লেয়ার লাল ৩১০ টাকা, প্যারেন্ট খাসি মুরগি ৪২৫ টাকা। গরুর মাংস ৭৫০ টাকা এবং খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১০০০ টাকায়।  এন.হুসেইন/জেসি

এই বিভাগের আরো খবর