বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১১ ১৪৩১

রমজানের আগেই খেজুরের বাজারে আগুন

আবু সুফিয়ান

প্রকাশিত: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩  

 

প্রতিনিয়ত হু হু করে বেড়েই চলছে নিত্যপণ্যের দাম। দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধগতির লাগাম টেনে ধরেও যেন আটকানো যাচ্ছেনা । তারই ধারাবাহিকতায় আসন্ন রমজানকে সামনে রেখে ডলার সংকট, আমদানি কম হওয়া এরকম নানা অজুহাতে বেড়েছে খেজুরের দাম। নারায়ণগঞ্জ শহরের খেজুর বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারি বাজারে খেজুরের দাম বাড়ার কারনে তার প্রভাব পরেছে খুচরা বাজারে।

 

অল্প দিনের ব্যবধানে বিভিন্ন প্রকার খেজুরে সর্বোচ্চ ২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। শহরের জিয়া হলের সামনে, দুই নং রেল গেইট এলাকাসহ বিভিন্ন খেজুরের দোকান ঘুরে এবং বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে একই রকম চিত্র দেখা গেছে।

 

শহরের হোয়াইট হাউজ মোড়ের খেজুর বিক্রেতা মো. রোমান যুগের চিন্তাকে বলেন, মাত্র এক মাসের ব্যবধানে কেজি প্রতি বিভিন্ন খেজুরে সর্বোচ্চ ২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। রোমান আরো জানান, অল্প দিনের ব্যবধানে খেজুরের দাম এতো পরিমান বাড়ার কারণে ক্রেতাদের সাথে বিভিন্ন সময় বাকবিতন্ডায় জড়াতে হয় তাদের। একই দোকানের বিক্রেতা মো. রুবেল যুগের চিন্তাকে বলেন, ক্রেতারা দোকানে এসে খেজুর নেয়ার পর টাকা দেয়ার সময় লেগে যায় ঝামেলা।

 

এমন ঘটনা ঘটার কারন জানিয়ে রুবেল আরো বলেন, ক্রেতারা খেজুরের নতুন দাম না জানার কারনে আগের দাম দিলে এরকম হয়। দাম জানার পর অনেকে খেজুর না নিয়েই চলে যান। যার কারনে আগের তুলনায় এখন বিক্রি অনেক কমে গেছে। যা আমাদের ৫ বছরের ব্যবসায় আর কখনই ঘটে নাই। তাদের দোকানের খেজুরের দাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, কেজি প্রতি আজওয়া বিক্রি হচ্ছে এখন ৮০০ টাকায়। এক মাস আগে যার দাম ছিল ৬০০ টাকা।

 

মরিয়ম এক কেজি ৮৫০ টাকা। পূর্বের দাম ছিল ৭০০ টাকা। আবার কিং এক মাসের ব্যবধানে ৭০০ টাকা থেকে বেড়ে এখন বিক্রি করছি ৮০০ টাকায়। কালমি ৪৫০ টাকা থেকে ১০০ টাকা বেড়ে এখন ৫৫০ টাকা। জাহিদি খেজুর ১২০ টাকা থেকে বেড়ে ১৪০ টাকায় এখন বিক্রি করতে হচ্ছে।

 

তিনি বলেন, এই জাহিদি খেজুর গত বছরও বিক্রি করেছি ৯০ টাকায়। সব শেষ কামরাঙ্গা খেজুর। এই খেজুর ১৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে এখন আমাদের বিক্রি করতে হচ্ছে ৮৫০ টাকায়। অর্ধাৎ এই খেজুরে আগের দাম ছিল ৭০০ টাকা। রোমান আর রবেলদের খেজুরের দোকানে আজওয়া কিনতে এসেছেন ফতুল্লার মো. আরমান হোসেন।

 

বেসরকারি খাতে চাকরি করা আরমান হোসেন জানান, আসলে আজওয়া খেজুর মান ভেদে একেক জায়গায় একেক দাম বিক্রি হয়ে থাকে। কিন্তু তিনি তার অভিযোগ বলেন, একই দোকানে কয়েকদিন আগে যে খেজুর আমি ৬০০ টাকা দিয়ে কিনেছি তা কি করে এখন ৭০০ টাকা হয়। তিনি বলেন, কয়েক দিনের ব্যবধানে ১০০ টাকা মূল্য বৃদ্ধি মেনে নেয়ার মত না।

 

তিনি দাবি করেন, এক্ষেত্রে প্রশাসনের নজরদারি বাড়াতে হবে। আমাদের দেশের প্রশাসন সব সময় দ্রব্যমূল্যের ঊর্দ্ধগতির ব্যাপারে নিরব ভূমিকায় থাকে। তারা কেন নিরব থাকে ? ভোক্তা অধিকারের কাজটা কি তাহলে ? তিনি দ্রুত এই বাজার নিয়ন্ত্রণে আনার দাবি জানান। এদিকে শহরের দুই নং রেল গেইট এলাকার এক খেজুর বিক্রেতা বলেন, দাম বাড়ার কারনে এখন ক্রেতারা খেজুর কিনছে কম। অনেকে কিনতে এসেও বাড়তি দামের কারনে খেজুর না কিনেই চলে যাচ্ছেন।

 

তবে বেশির ভাগ সময় দাম নিয়ে ক্রেতাদের সাথে বিভিন্ন সময় বাকবিতন্ডা হয়। শহরের দুই নং রেল গেইট এলাকার এক ফলের দোকানে খেজুর কিনতে এসেছেন মো. ইব্রাহিম। কিন্তু বাড়তি দামের কারনে এক কেজির জায়গায় আধা কেজি আজওয়া কিনে হাঁটা দিচ্ছিলেন। যাওয়ার পথে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি যুগের চিন্তাকে বলেন, যে ভাবে দিনকে দিন জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে তাতে আমাদের মত নিম্নবিত্তরা বড় অসহায়। শেষ তিনি বলেন, রমজানের আগেই যে ভাবে খেজুরের দাম দফায় দফায় বাড়ছে তাতে মনে হয় এবারের রমজানে খেজুর ছাড়াই ইফতার করতে হবে।
 

এই বিভাগের আরো খবর