শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

রূগগঞ্জের গাউছিয়ায় অবশেষে ফুটপাত উচ্ছেদ

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ২৭ মে ২০২১  

“রূপগঞ্জে গাউছিয়ার ফুটপাতে দৈনিক আড়াই লাখ টাকার চাঁদাবাজী” শিরোণামে গত বুধবার বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর টনক নড়েছে প্রশাসনের। বৃহস্পতিবার সকালে গাউছিয়ার ফুটপাত উচ্ছেদ করতে দখলকৃত ঢাকা- সিলেট মহাসড়কে অভিযান চালায় ভূলতা পুলিশ ফাঁড়ি। পুলিশের মারমুখী অভিযানে দিকবিদিক ছুটতে থাকে ফুটপাত ব্যবসায়ীরা। মুহুর্তেই খালি হয়ে যায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দখলকৃত জায়গা। এসময় ফুটপাত ব্যবসায়ীদের প্রায় ১০/১২টি ভ্যান আটক করা হয়। এর আগে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গাছ রোপন  ও লোহার রেলিং দিয়েও দলীয় প্রভাবের কারনে ফুটপাত দখল মুক্ত করতে পারেনি প্রশাসন।  


জানা যায়, রূপগঞ্জ উপজেলার ভূলতা গাউছিয়া এলাকায় দলীয় প্রভাব খাটিয়ে ভূলতা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন ও গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলআমীনের নেতৃত্বে গাউছিয়া মার্কেট এলাকার মহাসড়কের দুই পাশের ফুটপাতে অবৈধভাবে দোকান বসিয়ে চাঁদাবাজি করে আসছে। এ চক্রটি দীর্ঘদিন যাবৎ ঢাকা- সিলেট মহাসড়কে অবৈধ ফুটপাত বসিয়ে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করছে তারা। বেপরোয়া চাঁদাবাজির কবলে পড়ে ফুটপাত ব্যবসায়ীরা নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋন করে মহাসড়কে পজিশন নিতে হাজার হাজার টাকা তুলে দিচ্ছেন চাঁদাবাজদের হাতে।

 

একেকটি পজিশন বাবদ এককালীন ১০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত দিয়ে থাকে ফুটপাত ব্যবসায়ীরা। ৫ শতাধিক দোকান থেকে প্রতি মাসে প্রায় ৭০ লাখ টাকা চাঁদাবাজি হচ্ছে ভূলতা গাউছিয়া এলাকার পুলিশ ফাঁড়ির সামনে। শুধু তাই নয়, ফুটপাত ব্যবসায়ীরা দিনভর ব্যবসা শেষে উচ্ছৃষ্ট অংশ ভূলতা ফ্লাইওভারের পিলারের গোড়ায় ফেলে ময়লার ভাগাড় সৃষ্টি করছে। আর এ ময়লার ভাগাড়ে আগুন দিয়ে ফ্লাইওভারের পানি নিস্কাশনের বেশ কয়েকটি পাইপ পুড়ে ফেলছে। তাছাড়া আগুনের তাপের কারনে ফ্লাইওভারের পিলারের বড় ধরনের ক্ষতির আশংকা রয়েছে। এত বড় অংকের চাঁদাবাজি নিয়ে উপজেলা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের মধ্যে বেশ কয়েকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এলাকাবাসী ফুটপাতের চাঁদাবাজি নিয়ে আতংকে রয়েছে। এঘটনায় বুধবার বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে গতকাল বৃহস্পতিবার দিনভর ঢাকা- সিলেট মহাসড়কের উপরে অবৈধ ফুটপাত দখলমুক্ত করে ভূলতা পুলিশ ফাড়িঁ। 


এদিকে ফুটপাত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়া ফুটপাত ব্যবসায়ীরা জানান, আমরা পজিশনের জন্য নেতাদের কাছে ১০ থেকে ৫০ হাজার করে টাকা দিয়েছি। পুলিশ হঠাৎ আমাদের উঠিয়ে দিছে। আমাদের জামানতের টাকা কিভাবে উদ্ধার করব? আমাদের তো ছেলে মেয়ে নিয়া না খেয়ে মরতে হবে। এই করোনা কালে আমরা কোথায় কাজ করবো। 


এ ব্যপারে ভূলতা ফাঁড়ির ইনচার্জ নাজিম উদ্দিন মজুমদার বলেন, ভূলতা গাউছিয়া এলাকার ঢাকা- সিলেট মহাসড়কে আর কোন ফুটপাত বসতে দেয়া হবে না। ব্যবসায়ীদের সবাইকে নিষেধ করা হয়েছে। আর নিষেধ অমান্য করে কেউ রাস্তায় দোকান বসালে শাস্তির আওতায় আনা হবে।
 

এই বিভাগের আরো খবর