বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১১ ১৪৩১

লঞ্চডুবি : ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ চান নিহতের স্বজনরা

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৯ এপ্রিল ২০২১  

শীতলক্ষ্যা নদীতে লঞ্চডুবির ঘটনায় নিহত প্রত্যেকের জন্য দশ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে স্বজনরা। গতকাল বিকেলে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাব ভবনের ষষ্ঠ তলায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তারা। রাজনৈতিক দল গণসংহতি আন্দোলনের নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখা এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন কয়েকজন স্বজন। তাদের মধ্যে পাঁচজন সাংবাদিকদের সামনে কথা বলেন। প্রত্যেক নিহত ব্যক্তির জন্য তাদের স্বজনদের দশ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়ার দাবি জানান তারা। নিহত পাখিনা বেগমের দেবর মিঠু মাঝি প্রত্যেক ব্যক্তির মৃত্যুর জন্য তাদের স্বজনদের দশ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়ার দাবি জানান। কান্না জড়িত কন্ঠে তিনি বলেন, সেদিনের ঘটনায় তার ভাবি পাখিনা, ভাইয়ের মেয়ে বিথী ও এক বছরের নাতনি আরিফার মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের তিন সদস্যের মৃত্যুর খবর পেয়ে তার পঙ্গু ভাই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে চিকিৎসাধীন। ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি এঘটনায় দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন নিহতের স্বজনরা। এদিকে উদ্ধারকাজে উদাসীনতা ও গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন ইসমাইল হোসেন। লঞ্চডুবির ঘটনায় তিনি হারিয়েছেন বোন, দুলাভাই ও শিশু ভাগনিকে। ইসমাইল বলেন, রাতেই লঞ্চটি কোথায় আছে তা শনাক্ত হয়েছিল। কিন্তু উদ্ধারকারী জাহাজ সারারাত অপেক্ষায় থেকে ১৮ ঘন্টা পর লঞ্চটি উদ্ধার করে। উদ্ধার তৎপরতা সঠিক থাকলে কিছু যাত্রীকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা যেত বলে ধারণা তার।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, সংগঠনের নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, দপ্তর সম্পাদক পপি রানী সরকার সংবাদ সম্মেলনে তাদের সাত দফা দাবি তুলে ধরেন। লঞ্চডুবির এই ঘটনাকে কাঠামোগত হত্যাকান্ড দাবি করে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘লঞ্চডুবির কারণ অনুসন্ধান করলে দেখা যাবে এতগুলো মৃত্যুর সঙ্গে ওই কার্গো চালকের পাশাপাশি নদী পথের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতার সম্পর্ক রয়েছে।’ শীতলক্ষা নদী দখল করে নদী পথ সঙ্কোচন, ঘটনাস্থলে নির্মাণাধীন সেতুর মাঝামাঝি সরু চ্যানেলে ট্রাফিক সিগন্যাল না রাখা এবং লঞ্চমালিকদের দাবি অনুযায়ী যাত্রীবাহী লঞ্চ ও পণ্যবাহী নৌযানের জন্য আলাদা লেন তৈরি না করায় বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ এই মৃত্যুর দায় এড়াতে পারে না বলে মন্তব্য করেন তিনি। সাকি বলেন, ‘এমন সব ঘটনার তদন্ত হয় তবে সেসব তদন্ত প্রতিবেদনে থাকা সুপারিশ বাস্তবায়িত হয় না। লঞ্চ ডুবির এই ঘটনা নিছক দুর্ঘটনা নয় বরং বিআইডব্লিউটিএ সহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের ধারাবাহিক ব্যর্থতার ফল হিসেবে কাঠামোগত হত্যাকান্ড।’ এ সময় তিনি এঘটনায় জড়িত কার্গো মালিক ও বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে  নিহত প্রত্যেকের জন্য দশ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ আদায়ের দাবি জানান। পাশাপাশি শীতলক্ষ্যা নদীতে নৌচলাচল নিরাপদ করতে তাদের সাত দফা বাস্তবায়নেরও দাবি জানান সাকি। সাত দফার অন্যতম দাবিগুলো হলো, শীতলক্ষ্যা নদীর দুই তীরের দখলদারদের উচ্ছেদ করে নৌপথ উদ্ধার, মালবাহী এবং যাত্রীবাহী নৌযানের জন্য নদীতে পৃথক লেন তৈরি, অতীতে গঠিত তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশ বাস্তবায়ন ও লঞ্চডুবির ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে দোষিদের শাস্তি নিশ্চিত করা।
 

এই বিভাগের আরো খবর