শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

লেখার মান উন্নয়নে বই পড়ার কোন বিকল্প নেই (ভিডিও)

লতিফ রানা

প্রকাশিত: ২৭ অক্টোবর ২০২০  

লেখার মান উন্নয়েন বই পড়ার কোন বিকল্প নেই বলে মনে করেন সাহিত্য ও সাংস্কৃতিকর্মী নাসিম আফজাল এবং সাংবাদিক ও অনুবাদক সাইদুর রহামন।

 

সোমবার (২৬ অক্টোবর) যুগের চিন্তা আয়োজিত ফেসবুক লাইভ টকশো ‘সাহিত্য আড্ডা’য় এধরণের অভিমত ব্যক্ত করেন এই দুই অতিথি।

 

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বিদ্যালয় ইংলিশ সেকশনের (রিয়াদ সৌদি আরব) সাবেক অধ্যক্ষ, শিক্ষাবিদ ও কবি করীম রেজা। আড্ডায় করোনাকালীণ সময়ে নারায়ণগঞ্জের সাহিত্যের অবস্থা এবং নারায়ণগঞ্জ সাহিত্য চর্চার বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করা হয়।

 

সাংবাদিক ও অনুবাদক সাইদুর রহমান বলেন, আমি ইংরেজী সাহিত্যের ছাত্র ছিলাম। করোনার সময়টাতে আমি বই পড়েই সময় কাটিয়েছি। এর বেশ কয়েকটি আত্মজীবনীমূলক বই পড়েছি।

 

এই সময় নারায়ণগঞ্জের কবিদের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি আশাবাদি। আশাকরি এখান থেকেই কবির সৃষ্টি হবে। তিনি বলেন, তিনি নারায়ণগঞ্জের যাদের কবিতা অনুবাদ করেছেন তাতে নবীণ কবি নেই। তিনি প্রায় ৬০০ কবির কবিতা ইংরেজীতে অনুবাদ করেছেন বলে জানান।

 

তিনি বলেন, আগে সংগঠনগুলোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সময় যে আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি হতো এখন আর সেটি হয় না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণে এখন মানুষ কিছুটা ঘরমূমী হয়েছে। এসময় তিনি তার লেখা একটি ইংরেজী কবিতা পাঠ করে শোনান।দর্শকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যারা লেখালেখি করছেন তাদের বেশী বেশী পড়াশুনা করতে হবে।

 

সাহিত্য ও সাংস্কৃতিকর্মী নাসিম আফজাল বলেন, করোনার বেশ কিছু বছর আগে থেকেই নারায়ণগঞ্জের সাহিত্য-সংস্কৃতির মধ্যে অনেকটাই ধ্বস নেমেছে।

 

স্থানের অভাবকেই তিনি এর প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, আমাদের সাহিত্য-সংস্কৃতির চর্চায় আলী আহাম্মদ পৌর পাঠাগার ছিল একটা অন্যতম স্থান। তিনি বলেন, এই পাঠাগারের সংস্কারের জন্য যে সময়টা ব্যায় হয়েছে তাতে আমাদের চর্চায় একটা বড় ধ্বস নেমেছে।

 

তিনি বলেন, তখন শহীদ মিনারে সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের একটা সুযোগ থাকলেও সাহিত্য চর্চার কোন জায়গা ছিল না। তিনি আরো বলেন, পরবর্তীতে পৌর পাঠাগারের উন্নয়নের পর যেটা বর্তমান রূপে আছে সেটা সেই মানের না এবং এর যে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে তা আমাদের মতো ছোট ছোট কাজ করার জন্য অনুপোগী হয়ে পড়েছে।

 

তার মতে  এখন শুধু নারায়ণগঞ্জ কেন সারা বাংলাদেশেই ফেসবুক কেন্দ্রিক হয়ে যাওয়ায় লেখার মান যাচাইয়ের কোন সুযোগ নাই। আমারটা আমিই লিখলাম আবার নিজেই পড়লাম এমন হচ্ছে। এখানে লেখা কতটুকু মানসম্মত হলো তা দেখার বিচার্য বিষয় না।

 

এখনকার সাহিত্য চর্চাকে খুড়িয়ে চলা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ সময় বেশ কয়েকটি সংগঠনের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, এরা বিভিন্ন দিবসে কিছু অনুষ্ঠান করে থাকে।

 

এ সময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমরা যখন সাহিত্য সভা করতাম তখন আমাদের অনেক সিনিয়রদেরকে ডেকেও পাইনি। তিনি পূর্বের একটি অনুষ্ঠানের সাথে দ্বিমত পোষণ করে বলেন, ’৯০ এর পর থেকে সাহিত্য সংগঠনের চর্চা কমে গেছে একথাটা ঠিক নয়।

 

তিনি বলেন, প্রগতি সাহিত্য সংগঠনের জন্ম হয়েছে ১৯৮৯ সালে। ২০১৬ সালে তার কর্মকান্ড বন্ধ হয়। তিনি কবি ফয়েজ আহমেদের কথা উল্লেখ করে বলেন, ফয়েজ আহমেদ নারায়ণগঞ্জে অনুপ্রাস নামে সাহিত্য সংগঠনকে নিয়ে এসেছেন। তার মতে এর পর থেকে সাহিত্য কর্মকান্ড অব্যাহত রাখতে অনেক চড়াই উৎরাই পার করতে হয়েছে।

 

তিনি বলেন, করোনাকালীন সময়ে অনেকে সময় পেয়ে অনেক লেখালেখি করেছি। এর মধ্যে আমি একটি পাণ্ডুলিপি প্রস্তুত করেছি। আমার ইচ্ছে এই লেখাটা শুধু বাংলায় নয় ইংরেজীতেও অনুবাদ করবো।

 

বর্তমান লেখকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমি বলবো বই বই বই। বই যত বেশী পড়বেন তত বেশী আলোকিত হবেন।