শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

শওকতের ইউনিয়নেই কমিটি নেই

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৩১ মে ২০২৩  

 

# তার কারিশমায় কমিটি হচ্ছে না : শফিক
# কমিটির বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে : শওকত

 

 

টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থেকেও নারায়ণঞ্জ আওয়ামী লীগ তৃণমূলে সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হয়ে আছে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে দীর্ঘদিন কমিটি না থাকা। না থাকার জন্য দায়ী করছেন ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শওকত আলীকে। তাছাড়া ২০২২ সনের ২৬ অক্টোবরে ফতুল্লা থানার বক্তাবলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলন হলেও কোন কমিটি হয় নাই।

 

কেননা সম্মেলনের দিন পূর্বের কমিটি বিলুপ্ত হওয়ায় এবং নতুন কমিটি ঘোষনা না হওয়ায় বর্তমানে এখানে কমিটি বিহীন হয়ে রয়েছে। আর এতে করে এখানে ক্ষমতাসীন দলের অবস্থান আরও নড়েবড়ে অবস্থা হয়ে আছে। তবে বক্তাবলীতে কমিটির মাধ্যমে এখানে আওয়ামী লীগকে সাংগঠনিক ভাবে দলকে শক্তিশালী করার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী।

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছরের ২৬ অক্টোবর ফতুল্লা থানার বক্তাবলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক পদে একাধিক প্রার্থী থাকায় ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন শুরু হয়। কিন্তু ভোটের এক পর্যায়ে মারামারির ঘটনা ঘটায় তখন সম্মেলন স্থগিত করা হয়। তবে পরবর্তিতে তা পুনরায় সম্মেলন করার নির্দেশনা দেয়া হলেও এখনো পর্যন্ত বক্তাবলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয় নাই। এমনকি এখানে বর্তমানে প্রায় ৮ মাস কমিটি বিহীন হয়ে আছে। কবে নাগাত কমিটি হবে তাও জানেন নেতা কর্মীরা।

 

জানা যায়, ২০০৩ সনে বক্তাবলী আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়। তখন বক্তাবলী আওয়ামী লীগের সভাপতি হন আফাজ উদ্দিন ভূঁইয়া এবং সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম এক যুগের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকার পরেও নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক ভাবে তৃনমূলে শক্তিশালী হতে পারছে না। এই দিক দিয়ে বিএনপি এগিয়ে আছে। কেননা এখানে বিএনপি সম্প্রতি একের পর এক ফতুল্লা থানায় কিমিটি গঠনের মাধ্যমে নিজেদেরকে সাংগঠনিক ভাবে শক্তিশালী করছে।

 

এদিকে অভিযোগ রয়েছে তৃণমূল পর্যায়ে আওয়ামী লীগের অবস্থা সবচেয়ে বেশি নড়বড়ে। তার মাঝে সদর উপজেলার বক্তাবলী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কমিটি না থাকায় একেবারেই নড়বড়ে অবস্থায় আছে ক্ষমতাসীন দল বলে জানান দলীয় নেতৃবৃন্দ। তার মাঝে ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বাড়ি বক্তাবলীতে। এছাড়া তিনি এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হয়ে জনপ্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।

 

অথচ শওকত আলী ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্বে থেকেও তার নিজের এলাকায় ক্ষমতাসীন দল সাংগঠনিক ভাবে কমিটি বিহীন হয়ে আছে। যা দলের স্থানীয় নেতা কর্মীরা কেই মেনে নিতে পারছে না। এছাড়া সাংগঠনিক ভাবে দল দূর্বল হয়ে যাচ্ছে। আর এর প্রভাব আগামী নির্বাচনে পরবে বলে মনে করেন নেতা কর্মীরা। কেননা কমিটি না থাকলে দলের প্রার্থীর জন্য করতে নানা অসুবিধা হতে পারে। আর এজন্য নৌকার প্রার্থীকে পস্তাতে হতে পারে।

 

সদর উপজেলার ইউনিয়নগুলোতে দীর্ঘ ২০ বছর যাবৎ সম্মেলন থাকায় ইউনিয়নগুলোতে নতুন নেতৃত্ব তৈরী হচ্ছে না। আর এতে করে অনেক এলাকার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দিয়ে কোনরকম নামকাওয়াস্তে দলীয় কর্মসূচি পালন হয়। আবার কোন জায়গায় দলীয় কর্মসূচি পালনও হয়না। বিশেষ করে সম্প্রতি কর্মসূচি গুলোতে বক্তাবলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটি না থাকায় এখানে দলীয় ভাবে তেমন কোন কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায় নাই।

 

ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি শওকত আলী জানান, কমিটির বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা চলছে। আশা করি খুব দ্রুত কমিটি হয়ে যাবে।

 

বক্তাবলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রার্থী ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শফিক মাহমুদ বলেন, আমরা চাই বক্তাবলীতে ভোটের মাধ্যমে একটি শক্তিশালী কমিটি চাই। বক্তাবলীতে এখন আবুল হোসেনকে সভাপতি পদে বসাতে চান চেয়ারম্যান শওকত। কিন্তু তৃনমূল তার প্রতি নাখোশ। আর শওকত চেয়ারম্যানের কারিশমায় বক্তাবলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটি হচ্ছে না। তবে দলকে সাংগঠনিক ভাবে শক্তিশালী করার জন্য কমিটি গঠন খুবই প্রয়োজন।

 

বক্তাবলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বলেন, আমরা বক্তাবলীতে ভোটের মাধ্যমে স্বচ্ছ শক্তিশালী কমিটি চাই। তৃনমুলের নেতা কর্মীরা যাকে ভোটে দিয়ে নেতা নির্বাচিত করবে আমরা তার নেতৃত্ব মেনে নিবো। কিন্তু কোন গুঁজামিল করা হলে কর্মীরা তা মেনে নিবে না। তাছাড়া এখানে নির্বাচনের আগে কমিটি না হলে দলের প্রার্থী ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। আর এজন্য কমিটি হওয়া প্রয়োজন।এস.এ/জেসি

এই বিভাগের আরো খবর