
আওয়ামীগ নেতা ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানকে নিয়ে মানুষের আগ্রহের শেষ নেই। তাকে নিয়ে নানা মুখরোচক কথা প্রচলিত আছে সমাজে। বিশেষ করে ২০১১ সালে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বর্তমান মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় হেরে যাওয়ার পর তিনি নেতিবাচক সংবাদে আসতে শুরু করেন। এ নিয়ে পরবর্তীতে কথার লড়াইয়ে আওয়ামীলীগ নেতারাই শামীম ওসমানের অঢেল সম্পত্তি থাকার বিষয়টি গণমাধ্যমে আনেন।
শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমানের রাজকীয় বিয়ে, দেশ-বিদেশ ঘুরে বেড়ানো, ইউরোপ-আমেরিকায় নানা সম্পদ থাকা, জাহাজ ব্যবসা, দুবাইতে ব্যবসা, তুরস্কে সম্পদ থাকাসহ নানা বিষয়ে আওয়ামীলীগ নেতারাই বক্তব্য দিয়েছেন। শামীম ওসমান ১৯৯৬ সালে প্রথম জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে ২০১৪ সালে দ্বিতীয়বার সংসদ নির্বাচিত হওয়ার পরেই তার সম্পত্তি নিয়ে কথা ওঠে। এমনকি তিনি ঢাকায় যেখানে থাকেন সেই আলীশান ফ্ল্যাট নিয়েও কথা বলতে দেখা গেছে তার নিজ দলের নেতাদের।
মানুষের মধ্যেও এ নিয়ে প্রবল আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে। সবার মুখে মুখে আলোচনা ছিল সত্যিই কি শামীম ওসমান বিশাল বিত্ত-বৈভবের মালিক। যদিও শামীম ওসমান বিভিন্ন সময় তার বক্তব্যে ছাত্রজীবনে মাত্র অল্প টাকার জন্য ফরম ফিলাপ না করতে পারার কথা জানিয়ে আসছেন। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র আইভী ২০২২ সনের ৭ মার্চ শামীম ওসমানের কোটি কোটি টাকার সম্পদ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
সাংসদ শামীম ওসমান কিভাবে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন সেটা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। তিনি বলেন, ‘তোলারাম কলেজে ফরম ফিলাম করতে পারেন নাই টাকার জন্য। আজকে কোটি কোটি টাকার মালিক। জাহাজ আছে ১৬ থেকে ১৭টা। এই জাহাজের মালিক রাতারাতি কিভাবে হলেন? কিভাবে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে গেলেন। সেটাতো নারায়ণগঞ্জবাসী জানতে চায়’। এসব বক্তব্যের পর সাধারণ মানুষের আগ্রহ বেড়ে যায় শামীম ওসমানের সহায় সম্বল, সম্পত্তির বিষয় নিয়ে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেয়া হলফ নামায় শামীম ওসমানের যে অঢেল সম্পত্তি থাকার কথা বলা হচ্ছিল তার মিল পাওয়া যায়নি। হলফ নামায় দেয়া তথ্যানুসারে সাংসদ শামীম ওসমান গত দশ বছরের ব্যবধানে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ছয়টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক হয়েছেন তিনি। বেড়েছে আয়, কিনেছেন গাড়ি ও জমি কিন্তু দশ বছরেও শোধ করেননি প্রবাসে থাকা বন্ধু অনুপ কুমার সাহার থেকে নেয়া ধারের ২৬ লাখ ৬৯ হাজার ৯৫০ টাকা।
বিগত দশম, একাদশ সংসদ নির্বাচন ও আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া শামীম ওসমানের হলফনামা বিশ্লেষণে এই তথ্য জানা যায়। নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে তিনবারের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি পুনরায় আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী এই সংসদ সদস্যের গত ৫ বছরে নিজের সম্পদের পরিমাণ কমলেও বেড়েছে ঋণ। যদিও তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়েছে। গত ২৯ নভেম্বর নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামায় এমন তথ্য উল্লেখ করেছে তিনি।
হলফনামায় উল্লেখিত তথ্য অনুযায়ী, ৫ বছর পূর্বে শামীম ওসমানের নামে ১০ কোটি ৬০ লাখ ৭৪ হাজার ৮৩৯ টাকার অস্থাবর সম্পদ ছিল। যা কমে দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ৯৮ লাখ ৬৩ হাজার ৫৪৭ টাকায়। বন্ধু ও ব্যাংকের কাছে একক ও যৌথভাবে তিনি দেনা ও ঋণ আছেন ২২ কোটি ৬ লাখ ১২ হাজার ৩৭৬ টাকা। ৫ বছর আগে যা ছিল ১৩ কোটি ৮৮ লাখ ৭ হাজার ৮১৭ টাকা।
বিএ, এলএলবি সনদধারী শামীম ওসমান তার আয়ের উৎস ব্যবসা হিসেবে প্রদর্শন করেছেন। বর্তমানে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা পাঁচটি। যা গতবার ছিল চারটি। ব্যবসা খাতে তার আয় সামান্য বেড়েছে। গতবার ব্যবসা খাতে তার আয় ছিল ২২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। যা এবার সামান্য বাড়িয়ে দেখানো হয়েছে ৩৬ লাখ ৭৫ হাজার ৯৫২ টাকা। তবে স্থাবর সম্পত্তি ১ কোটি ২১ লাখ ৭০ হাজার ৭৫০ টাকা এবারও অপরিবর্তিত রয়েছে।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে এখন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি এর আগে ১৯৯৬, ২০১৪ ও ২০১৮ সালেও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সর্বশেষ এছাড়া তার বিরুদ্ধে হত্যা, হত্যাচেষ্টা, দাঙ্গা সংঘটনের অভিযোগ এবং দুর্নীতি দমন কমিশন আইনে মোট ১৭টি মামলার তালিকা তিনি হলফনামায় উল্লেখ করেছেন। মামলাগুলোর মধ্যে তিনটিতে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ, চারটি রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে প্রেক্ষিতে প্রত্যাহার করা হয়। বাকিগুলোতে তিনি খালাস ও অভিযোগের দায় থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন।
শামীম ওসমান তাঁর মালিকানাধীন পাঁচটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কথা উল্লেখ করেছেন। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- জ্বালানি তেল আমদানি, পরিবহন ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স জেডএন কর্পোরেশন, শিপিং (পণ্য এবং জ্বালানি পরিবহন) প্রতিষ্ঠান জেড এন শিপিং লাইন্স লিমিটেড, শিপিং (জ্বালানি পরিবহন) প্রতিষ্ঠান মাইশা এন্টারপ্রাইজ, খান ব্রাদার্স ইনফোটেক লিমিটেড এবং উইসডম নিটিং মিলস্ লিমিটেড। খান ব্রাদার্স ইনফোটেক লিমিটেড এবং উইসডম নিটিং মিলস্ লিমিটেড নামে প্রতিষ্ঠান দু’টি তার নামে নতুন যুক্ত হওয়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় দাখিল করা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় এ দু’টি প্রতিষ্ঠানের নাম ছিল না। ওই নির্বাচনের সময় শীতল এসি ট্রান্সপোর্ট লিমিটেড নামে প্রতিষ্ঠানটি উল্লেখ থাকলেও এবার তিনি সেটি উল্লেখ করেননি। শামীম ওসমান তার ব্যবসা বাবদ ৩৬ লাখ ৭৫ হাজার ৯৫২ টাকা আয় দেখিয়েছেন। ৫ বছর পূর্বে তার এই খাতে আয় ছিল ২২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা।
শামীম ওসমান কৃষিখাতে তার কোন আয় দেখাননি। যদিও তিনি হলফনামায় তার নামে সোনারগাঁ উপজেলার বারদী ইউনিয়নের চরহাজী গ্রামে ১৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা মূল্যের ১২৩ শতাংশ কৃষি জমি রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। বাড়ি বা দোকান ভাড়া বাবদ আয় ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা উল্লেখ করেছেন।
যা ৫ বছর আগে ছিল ৪ লাখ ৪৭ হাজার ৬৬৪ টাকা। তার শেয়ার, সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক আমানতের সুদ হিসেবে আয় ১৫ লাখ ৭৯ হাজার ৫৪১ টাকা। যা আগের নির্বাচনী বছরে ছিল ১৩ লাখ ৬৩ হাজার ৬৮১ টাকা। এছাড়া তিনি হলফনামায় পারিতোষিক এবং সংসদ সদস্য হিসেবে সম্মানি বাবদ আয় দেখিয়েছেন যথাক্রমে ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং ১৫ লাখ ৪২ হাজার টাকা।
অস্থাবর সম্পত্তি
চলতি বছরের ৩০ জুনের হিসেবে শামীম ওসমান তার নগদ টাকার পরিমাণ দেখিয়েছেন ১৭ লাখ ৮৭ হাজার ৫৯২ টাকা। একইসাথে তার কাছে বৈদেশিক কোন মুদ্রা নেই বলে উল্লেখ করেছেন। চলতি বছরের ৩০ জুন অনুযায়ী তার নামে আইএফআইসি ব্যাংকের একটি হিসেবে ৭৩ লাখ ৪ হাজার ৬৮৯ টাকা রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। একই ব্যাংকে আরেকটি হিসেব নম্বর উল্লেখ করলেও তাতে কত টাকা জমা আছে কিনা তা উল্লেখ করেননি।
এছাড়া বন্ড, ঋণপত্র ও শেয়ার বাবদ শামীম ওসমানের নামে রয়েছে ৩ কোটি ৭ লাখ ৭৫ হাজার ৪৫৪ টাকা। পাঁচ বছর পূর্বে এই খাতে তার সম্পদের পরিমাণ ছিল ২ কোটি ৩৮ লাখ ৫৩ হাজার ৯০ টাকা। তার নামে আইএফআইসি ব্যাংকের একটি হিসেবে ২ কোটি ৪৯ লাখ ১ হাজার ৬৪৬ টাকার স্থায়ী আমানত (এফডিআর) রয়েছে। পাঁচ বছর পূর্বে আইএফআইসি ও সিটি ব্যাংকের চারটি হিসেবে ৪ কোটি ৭০ লাখ ৬০ হাজার ৮৭৯ টাকার স্থায়ী আমানত ছিল।
আগে ৫৬ লাখ ৯৩ হাজার ১৬৬ টাকার একটি টয়োটা ল্যান্ডকুজার গাড়ি ছিল তার। এবার এর সাথে যুক্ত হয়েছে ৮১ লাখ ৭৬ হাজার টাকার আরেকটি টয়োটা ল্যান্ডকুজার গাড়ি। এছাড়া তার নামে ৫ লাখ টাকার বৈদ্যুতিক সামগ্রী, ৫ লাখ টাকার আসবাবপত্র, ৩৮ তোলা স্বর্ণ রয়েছে (যার মূল্য উল্লেখ করা হয়নি)। আগে শামীম ওসমানের একটি ‘এনপিবি পিস্তল’ ছিল। এবার তার সাথে ২২ বোরের আরেকটি রাইফেলও যুক্ত হয়েছে।
স্থাবর সম্পদ
কৃষি, অকৃষি, বাড়িসহ শামীম ওসমানের নামে স্থাবর সম্পদের পরিমাণ ১ কোটি ২১ লাখ ৭০ হাজার ৭৫০ টাকা। তবে এই তালিকায় নারায়ণগঞ্জ শহরের নিকটবর্তী ফতুল্লার গাবতলী এলাকায় ১০ শতাংশ জমির পরিমাণ দেখানো হয়েছে মাত্র ৫৭৫০ টাকা।
দেনা ও ঋণ
বিদেশী বন্ধু, ব্যাংক, গাড়ির ঋণ ও ক্রসচেকের মাধ্যমে শামীম ওসমানের দায়-দেনার পরিমাণ ২ কোটি ৬ লাখ ১২ হাজার ৩৭৬ টাকা। একই খাতে ৫ বছর পূর্বে তার দেনা ছিল ১ কোটি ৫ লাখ ৮৩ হাজার ৩৫০ টাকা। এছাড়া যৌথ ভাবে আইএসআইসি ব্যাংক নারায়ণগঞ্জ শাখায় জেডএন শিপিং লাইন্স ও মাইশা এন্টারপ্রাইজের বিপরীতে মোট ২০ কোটি টাকা ঋণ রয়েছে তাঁর।
৫ বছর পূর্বে জেডএন শিপিং লাইন্স, শীতল এসি ট্রান্সপোর্ট ও মাইশা এন্টারপ্রাইজ নামে তিনটি প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে ১২ কোটি ৩৭ লাখ ২৪ হাজার ৪৬৭ টাকা ঋণ ছিল। গত ১০ বছর যাবৎ সংসদ সদস্য থাকা শামীম ওসমান তাঁর নামে দেনা ও ঋণের পরিমাণ বেড়েছে বলে উল্লেখ করেছেন হলফনামায়।
স্ত্রী-কন্যার আয় ও সম্পদ
শামীম ওসমান তার উপর নির্ভরশীল হিসেবে তার স্ত্রী ও কন্যাকে দেখিয়েছেন। তবে তার এক ছেলেও রয়েছে। তাকে নির্ভরশীল হিসেবে দেখানো হয়নি। শামীম ওসমানের স্ত্রী নারায়ণগঞ্জ মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান সালমা ওসমান লিপির ব্যবসা ও শেয়ার সঞ্চয়পত্র বা ব্যাংক আমানতের সুদ খাতে আয়ের পরিমাণ ৬১ লাখ ১০ হাজার ৯৩৯ টাকা। একইখাতে শামীম ওসমানের আয়ের পরিমাণ কম। তার এই খাতে আয় ৫২ লাখ ৫৫ হাজার ৪৯৩ টাকা। ৫ বছর আগে তার স্ত্রীর একইখাতে আয় ছিল ৩৯ লাখ ৩৪ টাকা। একই খাতে শামীম ওসমানের কন্যার আয় ২১ লাখ ৬৯ হাজার ৩৯ টাকা।
৫ বছর আগে সংসদ নির্বাচনের সময় দাখিল করা হলফনামায় শামীম ওসমানের কন্যার কোন আয় দেখানো হয়নি। স্ত্রী ও কন্যার ব্যবসা খাতে আয় দেখানো হলেও তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম হলফনামায় উল্লেখ করা হয়নি। শামীম ওসমানের স্ত্রীর নামে নগদ, ব্যাংকে রাখা অর্থ, স্থায়ী আমানত, সঞ্চয়পত্র ও শেয়ারসহ বিভিন্ন খাতে মোট অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৬ কোটি ৮৫ লাখ ৭০ হাজার ৫০৬ টাকা। যা ৫ বছর পূর্বে ছিল ৭ কোটি ২ লাখ ৪৩ হাজার ৬৫৮ টাকা ছিল।
এই খাতে তার কন্যার অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ১ কোটি ৮৩ লাখ ৮২ হাজার ৬১৬ টাকা। ৫ বছর পূর্বে কন্যার নাম সরাসরি উল্লেখ না থাকলেও শামীম ওসমানের উপর নির্ভরশীলদের নামে ১ কোটি ৪৪ লাখ ৫৯ হাজার ৬৩৫ টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে বলে উল্লেখ ছিল। শামীম ওসমানের স্ত্রীর নামে পিতা থেকে প্রাপ্ত ১৫ শতাংশ জমি ব্যতীত কোন স্থাবর সম্পত্তি নেই বলে উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও এই সম্পত্তির মূল্য উল্লেখ করা হয়নি।
এদিকে সাংসদ শামীম ওসমানের অঢেল সম্পদ নিয়ে আওয়ামীলীগ নেতারা অতীতে যেসব অভিযোগ করেছিলেন সেসব বিষয় ও শামীম ওসমানের হলফনামায় থাকা তথ্যানুযায়ী নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের দক্ষিণ মেরুর আওয়ামীলীগ নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে অধিকাংশ নেতাই বিষয়টি এড়িয়ে যান।
এ ব্যাপারে মহানগর আওয়ামী আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন যুগের বলেন, তার ব্যক্তিগত বিষয়ে আমার কোন মন্তব্য নেই।
জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘শামীম ওসমান আমার বন্ধু। সেই সাথে তিনি অনুপ কুমারের বন্ধু। কিন্তু তার থেকে ধার নেয়া টাকা কেন তিনি পরিশোধ করেন নাই তা আমার জানার বিষয় না। কিংবা আমি তার টাকা আদায় করে দেয়ার দায়িত্ব নেই নাই। শামীম ওসমানের সম্পদ নিয়ে আমি কোন মন্তব্য করতে চাই না।’
মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আহম্মদ আলী রেজা উজ্জল বলেন, ‘তার অঢেল সম্পদ হওয়াটা স্বাভাবিক। আর না হওয়াটা অস্বাভাবিক। তারা নিজেরাই বলেছে এক সময় মুরগি বিক্রি করে দিন পার করছে। তার পরেও তার বিষয়ে আমি তেমন ভাবে মন্তব্য করতে চাই না।
আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এড. আনিসুর রহমান দিপু এই বিষয়ে মন্তব্য করতে চান নি।
মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জি এম আরাফাত বলেন, সাংসদ শামীম ওসমানের কি আছে না আছে তা তিনি বলতে পারবেন। যেহেতু তার বিষয় গুলো জাতীয়ভাবে মানুষ জন জানে। তার বিষয়ে এর বেশি কিছু আমি বলতে পারবো না।’ এস.এ/জেসি