বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৫ ১৪৩১

শিল্পপতিদের লবিংয়ে কেন্দ্র ম্যানেজ

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ৫ সেপ্টেম্বর ২০২১  

# সাবেক কমিটির নেতাদের উপেক্ষা, প্রেসক্রিপশন বাস্তবায়নের চেষ্টা


# কেন্দ্রীয় নেতারা বশ মানায় ড্যামকেয়ার মুডে মামুন মাহমুদ, হতাশ তৃণমূল


# গঠনতন্ত্র বিরোধী কাজে জড়িত থাকায় ২০১১ সালে মামুন মাহমুদের নেতৃত্বাধীন যুবদল এবং ২০২০ সালে জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত হয়  


 
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মামুন মাহমুদকে নিয়ে বিতর্ক থামছেই না। তার স্বেচ্ছাচারিতামূলক কর্মকা-ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। ক্রমশই ভারি হচ্ছে তার সমালোচনার পাল্লা। এরপরও কেন্দ্রীয় নেতারা বিষয়টি আমলে না নেয়ায় হতাশ দলটির তৃণমূল। বিশেষ

 

সূত্র জানিয়েছে, নারায়ণগঞ্জের সাংগঠনিক দায়িত্বে রয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতা এ্যাড. আব্দুস সালাম আজাদ ও শহিদুল ইসলাম বাবুল। তাদের উভয়কে ম্যানেজ করে চলছেন মামুন মাহমুদ। বিশেষ করে, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, কেন্দ্রীয় নেতা রুহুল কবির রিজভী, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও বরিশালের সাবেক এমপি কেন্দ্রীয় নেতা আলালসহ হেভীওয়েট একাধিক নেতাকে বশ করেছেন মামুন মাহমুদ। কেন্দ্রীয় নেতারা মামুন মাহমুদের বশে থাকায় তিনি ড্যামকেয়ার মুডে আছেন বলে দলের নেতাকর্মীদের অভিযোগ।  

 


বিএনপির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে লবিং চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তাকে সহায়তা করে যাচ্ছেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ফতুল্লার শাহ-আলম, রূপগঞ্জের কাজী মনির, মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া দিপু ও আড়াইহাজারের নজরুল ইসলাম আজাদসহ কতিপয় নেতা। তারা প্রত্যেকেই অর্থবৃত্তের মালিক। তাদের দ্বারা কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে সক্ষতা গড়ে তোলার পাশাপাশি নির্বাহী কমিটির এই সদস্যদের প্রেসক্রিপশন বাস্তবায়নের জোড়ালো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মামুন মাহমুদ। তাই মামুন মাহমুদকে ঘিরে বিএনপি অঙ্গণে কঠোর সমালোচনা চললেও এই বিষয়ে নিরব ভুমিকাতেই দেখা যাচ্ছে কেন্দ্রীয় নেতাদের। এতে হতাশা বাড়ছে বিএনপিতে। আগামীতে এর বিরুপ প্রভাব পড়ার জোড়ালো সম্ভাবনা দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

 


নেতাকর্মীদের ভাষ্যমতে, বিশেষ সিন্ডিকেটের প্রেসক্রিপশন বাস্তবায়ন করতে গিয়ে যোগ্য নেতাদের অবমূল্যায়ন করার সম্ভাবনা তৈরী হয়েছে। বিশেষ করে পূর্বের কমিটিগুলোতে যারা নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তাদের কাউকেই আসন্ন কমিটিতে রাখছেন না মামুন মাহমুদ। এক্ষেত্রে চলতি বা গত টার্মের কমিটিতে যারা ছিলেন, তারা ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে আসলেও সিন্ডিকেটের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী তাদেরই নতুন করে পদায়ন করতে আগ্রহী দেখা যাচ্ছে মামুন মাহমুদকে।
জানা গেছে, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি ছিলেন অধ্যাপক মনিরুল ইসলাম। একই সময়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি ছিলেন আব্দুল হাই রাজু এবং সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এম.এ হালিম জুয়েল। তারা থানা বিএনপির দায়িত্বে থাকাবস্থায় আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় থাকার পাশাপাশি নেতাকর্মীদের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্য ছিলো। কিন্তু তৎকলিন ওই কমিটির নেতাদের বর্তমান কমিটিতে জায়গা না দেয়ার প্রচেষ্টা চলছে।

 


সূত্র জানায়, মামুন মাহমুদকে নিয়ে সমালোচনা নতুন নয়। ২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সভাপতি ছিলেন মামুন মাহমুদ। গঠনতন্ত্র বিরোধী কর্মকা-ে লিপ্ত থাকার অভিযোগে ২০১১ সালের ২ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় যুবদল মামুন মাহমুদের নেতৃত্বাধীন জেলা যুবদলের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে। এরপর বরিশালের এর সাবেক এমপি ও কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সভাপতি আলালের সাথে সক্ষতা থাকায় যুবদলে ব্যর্থতার পরিচয় দেয়া মামুন মাহমুদ লবিংয়ের মাধ্যমে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের পদ বাগিয়ে নেন।

 

অথচ, এর আগে যুবদল ছাড়া মূল দলের কোন দায়িত্ব পালন করেনি মামুন মাহমুদ। কাজী মনির ও মামুন মাহমুদকে নিয়ে গঠিত সেই জেলা বিএনপি নারায়ণগঞ্জের ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যর্থ বলে নেতাকর্মীদের মাঝে চাউর হয়ে থাকে। ব্যর্থতা ও বিতর্কের কারণে ২০২০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ওই কমিটির মেয়াদ পুরণ হওয়ার আগেই তা বিলুপ্ত করে দেয় কেন্দ্র। তবে, পূর্বের সেই ব্যর্থ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মামুন মাহমুদকে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব করা হয়। তা নিয়ে সমালোচনা চলমান থাকতেই বর্তমানে ইউনিট কমিটি গঠনেও চারিদিক থেকে সমালোচনা কুড়োচ্ছে মামুন মাহমুদ। তবে, কেন্দ্রীয় নেতারা ম্যানেজ থাকায় ড্যামকেয়ার মুডে রয়েছেন তিনি- এমন অভিযোগ বিএনপি নেতাকর্মীদের।
 

এই বিভাগের আরো খবর