বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১১ ১৪৩১

শীতলক্ষ্যা নদী দখল করে আকিজ সিমেন্টের জাহাজ নোঙর

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১  

নানা কারণে এমনিতেই শীতলক্ষ্যা নদীর দুই পার সংকচিত হয়ে পরেছে। তার উপরে নদীর দুই পাড়ে বিশাল বড় বড় আকৃতির জাহাজ নোঙর করা রাখাতে নদীতে নৌযান চলাচল আরও সরু হয়ে পড়েছে। শীতলক্ষ্যা নদীর নৌপথে প্রতিদিন ছোট- বড় হাজার জাহাজ, স্টিমার, অসংখ্য বালুবাহী ট্রলাসহ নৌযান চলাচল করে থাকে।

 

নদীর মাঝামাঝি এলাকায় আকিজ সিমেন্ট কোম্পানীর জাহাজগুলো নোঙর থামিয়ে রাখা হয় অবৈধভাবে। ফলে নদীর বিশাল অংশ দখল করে রাখেন এসকল জাহাজগুলো। এই নদীতে বালুবাহী ট্রলার ও ট্যাঙ্কারগুলো চলছে বেপরোয়াভাবে। শীতলক্ষ্যা নদীতে নৌযান চলাচল দিনদিন বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। ফলে রাস্তাঘাটের মতো জলপথেও সৃষ্টি হচ্ছে জট। নিত্যনৈমিত্তিক দুর্ঘটনা ঘটার আশষ্কা।

 


জানা গেছে, শীতলক্ষ্যা নদীর প্রবেশপথ মদনগঞ্জ ও চর মোক্তারপুর এলাকায় ৭/৮টি বড় বড় সিমেন্ট কারখানা গড়ে উঠেছে। এবং বন্দরের ইস্পাহানী এলাকায় আকিজ সিমেন্ট কোম্পানী। এসব কারখানার জন্য ক্লিঙ্কার ও অ্যাশ নিয়ে আসে বড় জাহাজগুলো। আকিজ সিমেন্ট কারখানার মালামাল লোড- আনলোড করার জন্য দিনের পর দির নোঙর করে থাকে প্রায় কয়েকশ জাহাজ। এতে করে নদী বেশীর ভাগ দখল রাখা হয়। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ শহরের নিতাইগঞ্জ এলাকায় গম ও লবণ নিয়েও আসে এরকম জাহাজ।

 

নদীপথের কয়েক কিলোমিটার এলাকায় নোঙর করে আছে শতাধিক এসব জাহাজ। বিভিন্ন শিল্পকারখানায় মালামাল লোড ও আনলোড করতে আসা এসব নৌযান নদীর মাঝখানে জাহাজ রাখার কারণে এবং তীরেও ছোট-বড় নৌযান থাকায় নৌপথ অনেকটাই সরু হয়ে পড়েছে। এদিকে নৌপথে শৃঙ্খলা ফেরাতে মাঝে মধ্যে অভিযানও পরিচালনা করা হলেও নৌযান চালকরা কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে মাসের পর মাস নোঙর করে রাখছে নদীর মাঝখানে । ফলে নৌ-দুর্ঘটনা ঘটছে  প্রতিনিয়ত।
 

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন জাহাজ চালক জানান, আকিজ সিমেন্ট কোম্পানীর জাহাজ নদীর মধ্যে প্রায় ৭০ ভাগ জায়গাজুড়ে এলোপাতাড়িভাবে জাহাজ নোঙর করে রাখে। দিনের বেলায় ধীরগতিতে ঝুঁকি নিয়ে জাহাজ চালাতে পারলেও রাতে স্বাভাবিকভাবে এ স্থান অতিক্রম করতে পারি না। এতে করে প্রতিদিনই বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে। কোম্পানিগুলো বিআইডব্লিউটিএ’র কাছ থেকে নদীর কিনারায় থেকে জাহাজ থেকে মালামাল ওঠানামা করার অনুমোদন নেয়া থাকলেও নদীর মধ্যে জাহাজ রাখার কোনো ধরনের অনুমোদন নেয়া হয়নি। তারপরও তারা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিদের শেল্টারে এই অপকর্মগুলো চালিয়ে যাচ্ছেন। এই ব্যাপারে তাদের একটাই দাবি প্রশাসন যেন এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

 


এব্যাপারে আকিজ সিমেন্ট কোম্পানির কর্মকর্তাদের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ বিআইডব্লিউটিএ’র উপ-পরিচালক ( ট্রাফিক) বাবু লাল বৈদ্য জানান, শীতলক্ষ্যা নদীতে নাব্যতা কমে যাওয়ার অজুহাতে বড় বড় জাহাজগুলো ঝুঁকিপূর্ণভাবে মাঝ নদীতে নোঙর করে। আমরা বার বার সর্তক করেছি। ভ্রাম্যমাণ আদালত করে জরিমানা করেছি। কিন্তু কাজ হয়নি। আর প্রতিদিনই আমাদের একজন ইন্সেপেক্টর এখানে সার্বক্ষনিক কাজ করে। আর বিদেশ থেকে আসা জাহাজ গুলো বরফকলের কাস্টমস ক্লিয়ারেস জন্য এসে নোঙর করে থাকে ক্লিয়ার হলেই চলে যায়। তিনি আর বলেন, আকিজ সিমেন্ট এখানে ল্যান্ডিং এন্ড শিপিংএর ইজারা নিয়েছে। তবে যাতে তারা নদী দখল করে নোঙর না করে তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।
 

এই বিভাগের আরো খবর