শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

সদর থানা আ’লীগ নেতাদের শোকজ

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ১০ আগস্ট ২০২১  

গত ১৫ আগষ্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ সদর থানা আওয়ামী লীগের আয়োজনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার বিকেলে গোগনগর উত্তর মসিনাবন্দ সমাজ কল্যান সংসদে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভা নিয়ে সোমবার দৈনিক যুগেরচিন্তা পত্রিকায় থানার সভায় ইউনিয়নের নেতা সভাপতি শিরো নামে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পরে তৃনমূল থেকে শুরু করে জেলার হাই কমান্ড পর্যন্ত নজর পরেছে। এতে করে নেতারা লরেচরে বসেছে। এতে করে সদর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা নাজির আহম্মেদ এবং সেক্রেটারি আল মামুনকে নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। অনেক নেতা কর্মী এই ঘটনা নিয়ে নিন্দা প্রকাশ করেন। জেলা হাই কামন্ড তথ্য অনুযায়ী তাদের ডেকে সতর্ক করা হবে বলে জানা যায়। সচেতন মহল থেকে প্রশ্ন উঠেছে, ক্ষমতাসিন দলের বড় পদে থেকেও তাদের এই ধরনের ভূল হয় কি করে। 


এদিকে শনিবারের আলোচনা সভার বেনারে লেখা সভাপতিত্ব করবেন গোগনগর ইউনিয়নের আওয়ামীলীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা মোসলেহ উদ্দিন। কিন্তু সদর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি দায়িত্বে আছেন মুক্তিযোদ্ধা নাজির উদ্দিন। থানার আলোচনা সভায় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নেতা সভাপতিত্ব করায় তা নিয়ে থানা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাদের মাঝে আলোচনা সমালোচনা তৈরী হয়েছে। একই সাথে এই ঘটনা নিয়ে অনেক নেতা কর্মীরা নিন্দা প্রকাশ করেন। তৃনমূল নেতাদের মাঝে প্রশ্ন উঠেছে থানার মিটিংয়ে ইউনিয়ন নেতা কি করে সভাপতি হয়। তাও আবার তিনি বর্তমানে থানা কমিটির কোন পদে নেই। 

 

খোজ নিয়ে জানা যায়, মোসলেহ উদ্দিন থানা কমিটির দূরের কথা ইউনিয় আওয়ামীলীগ কমিটিতেও কোন পদ নেই। এমনকি ওয়ার্ড পর্যায়ে তিনি এখনো সদস্য পদ পাই নাই। বিএনপি সরকারের আমলে জাতীয়তা বাদী দলের অঙ্গ সংগঠনের জনতা ব্যাংকের সিবিএ নেতা ছিলেন। সদর থানা আওয়ামীলীগের আলোচনা সভায় তাকে সভাপতিত্ব করায় তৃনমূল নেতা কর্মীদের মাঝে ব্যাপক সমালোচনা তৈরী হয়। দলের কর্মীদের মাঝে প্রশ্ন উঠেছে সিনিয়র নেতারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা অবস্থায় এই ধরনের ভূল হয় কি করে। 


ওই আলোচনা সভায় বিশেষ অথিতির বক্তব্যে নামধারী এক নেতা তার বক্তৃতায় বলেন, গোগনগরে ৩ জন ( জসিম, আজহার, আজিজ) মিলে কমিটি করে। তারা যেন কমিটি করতে না পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা দু একদিরে মধ্যে বসে নতুন করে কমিটি করবো। তার জন্য প্রয়োজনে সকলে মিলে আলোচনা করি। তার এই বক্তব্য নিয়েও ব্যপক সমালোচনা তৈরী হয়। তিনি আওয়ামীলীগের প্রাথমিক সদস্য হয়ে ইউনিয়নের কমিটি করতে পারে কি না। গোগনগর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কমিটি হয়েছে ২০০৩ সনে।  


এদিকে আলীরটেক এবং গোগনগর ইউনিয়ন নিয়ে সদর থানা আওয়ামীলীগ কমিটি গঠিত হয়। কিন্তু থানা আওয়ামীলীগের আয়োজনে আলোচনা সভা হলেও সদর থানা ইউনিয়নের সভাপতি সেক্রেটারি তা জানেন না। যাদেরকে নিয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে তাদের মাঝে অনেকেই হাইব্রিড নেতা। সেই সাথে ভূইফোর সংগঠনের নাধারী নেতারাও ছিলেন বলে জানান একটি সুত্র। যাদের কোন নির্দিষ্ট কোন পদ পদবী নেই। এই সভা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয় তৃনমূল নেতা কর্মীদের মাঝে। এর কিছু দিন আগে সদর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি নাজির মাদবর এবং সাধারণ সম্পাদক আল মামুনকে নিয়ে বিতর্ক তৈরী হয়। তখন সদর থানা আওয়ামীলীগ কমিটিতে অর্থের বিনিময়ে ও স্বজনপ্রীতি করে কিছু ব্যক্তির নাম দেয়া হয় বলে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে। এখন নতুন করে আবার বিতর্কে জরিয়ে পরলেন এই নেতরা।  


গোগনগর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক, এবি এম আজহারুল ইসলাম বলেন, থানা আওয়ামীলীগের সভায় ইউনিয়নের নেতা সভাপতি করতে পারে না। করলেও এটা নিয়ম বহির্বত হবে। সদর থানা আয়োজনে সভা হলেও আমরা ইউনিয়নের নেতরা তার কোন খবর পাই নাই। আমাদেরকে জানানো হয় নাই। একই সাথে আলীরটেক ইউনিয়নের কোন নেতা এই সভার কথা জানেন না। থানার বেনারে তারা গোগনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী ফজর আলীর এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে। থানার সভার নামে ফজর আলী নির্বাচনী সভা করে। তিনি আরও জানান,   হাইব্রিড আওয়ামীলীগাররা বিএনপি জামাতের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে দলে অনুপ্রবেশ করেছে। তাঁরা দলীয় ঐক্য নষ্ট করতে বিপুল পরিমাণ টাকা নিয়ে মাঠে নেমে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাঁদের কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে। 


একই ভাবে আলীরটেক ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহাব উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সদর থানা আওয়ামীলীগের আলোচনার বিষয়ে তাকে জাননো হয় নাই। কাদেরকে নিয়ে মিটিং করেছে তাও তিনি জানেন না। সদর থানা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও গোগনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিন জানান, কিছু ব্যক্তির কারনে দলের দুুর নাম হয়। তারা হাইব্রিডদের দলে প্রবেশ করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে চায়। তারা টাকার বিনিময় নিজস্ব উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে চায়।


সদর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা নাজির উদ্দিন বলেন, থানা কমিটির সভায় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নেতা সভাপতি করতে পারে না। বেনারের লেখাটা ভূল হয়েগেছে। এই ধরনের ভূল আর হবে না। এটা পত্রিকায় না আসাই ভালো। আপনি সরাসরি এসে আমার সাথে দেখা কইরেন। তিনি আরও বলেন, আলোচনার বিষয়ে ইউনিয়নের নেতাদের জানানো হয়েছে।  


জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবদুল হাই বলেন, এই এ তথ্যটা আমি পত্রিকার মাধ্যমে আজকে জানতে পেরেছি। থানার সভায় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নেতা সভাপতিত্ব করতে পারে না। সেই সাথে সাংগঠনিক  ভাবে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। আমি তাদের ডেকে সাবধান করে দিব। এই ধরনের কাজ যেন আগামীতে না হয়।  
 

এই বিভাগের আরো খবর