বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১১ ১৪৩১

সন্ত্রাসী রাজু-সাজুর শেল্টারে বেপরোয়া কিশোরগ্যাং ওমর বাহিনী

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৮ আগস্ট ২০২২  

 

# হত্যা করেও পার পেয়ে যায় তারা

# রাজু-সাজু সহ ওমরবাহিনীকে গ্রেপ্তারের দাবী

# এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে মেহেদি হত্যার আসামীরা


 
কাশিপুর দেওভোগ এলাকায় রাজু-সাজুর বিরুদ্ধে অপকর্মের অভিযোগের শেষ নেই। অভিযোগ রয়েছে হত্যা থেকে শুরু করে এমন কোন অপরাধ নেই যা তারা করেন না। এই রাজু সাজুকে একাধিকবার মাদককারবারি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। তার পরেও তারা বার বার ছাড়া পেয়ে যান। তাদের নিয়ন্ত্রণে নানা নামে বেনামে ৩ থেকে ৪শ’ সদস্য কিশোরগ্যাং গ্রুপ রয়েছে। 

 

যাদের দিয়ে বিভিন্ন হত্যাসহ মাদককারবারি পরিচালনা করেন এই শীর্ষ সন্ত্রাসী রাজু-সাজু। তাদের কথার বাহিরে গেলে তারা তাকে হত্যা করতেও কখনও পিছপা হন না। এলাকাবাসি জানান, এই রাজু সাজু হলেন কাশিপুর এলাকার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রিয়াজ প্রধানের দুই পুত্র। 

 

কাশিপুর দেওভোগ এলাকায় ডিস ব্যবাসার অপারেটরদের মাধ্যমে বিভিন্ন বাসা বাড়ির খবর রাখেন। কার বাসা খালি থাকে তার খোঁজ নেন। পরে সুযোগ বুঝে ওই বাড়িতে তাদের বাহিনীর মাধ্যমে ডাকাতির ঘটনা ঘটান। সেই সাথে তাদের বাহিনী চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, সন্ত্রাসী , চাদাঁবাজি করেন। তাদের দুই ভাইয়ের সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে কাজ করেন মেহেদি হত্যার প্রধান আসামী ওমর ফারুক। 

 

এই ওমর বাহিনীর গ্রুপের সাথে মেহেদিকে যোগ দিতে বলে কিন্তু সে তাদের গ্রুপে যোগ দেয় নাই। একই সাথে মেহেদির নামে ওমর ফারুকের ভাই ইমন হত্যার অভিযোগ রয়েছে। সেই মামলা থেকে মেহেদি ছাড় পেয়ে যায়।  আর এজন্য ক্ষিপ্ত হয়ে ওমর ফারুক, তার বাহিনী নিয়ে মেহেদিকে হত্যা করে। এবার হত্যার পর মেহেদির পরিবারকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধমকি দিয়ে যাচ্ছে।

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কাশিপুরে কেউ বাড়ি নির্মাণ করলে এই রাজু-সাজুর বাহিনীর কাছ থেকে বালু, ইট নিতে হবে। অন্যথায় তাদেরকে কয়েক লাখ টাকা চাদাঁ দিতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে মাল দিতে গিয়ে তারা ভালো মালের জায়গায় নিম্মমানের মাল সরবরাহ করে বলে অভিযোগ রয়েছে। কেউ যদি তাদের মাধ্যমে মাল নিতে না চায় তাকে হুমকি দিয়ে চাঁদা নিয়ে যায়। এলাকাবাসীর তথ্যমতে, তাদের দুই ভাইয়ের অপকর্মের কোন শেষ নেই। 

 

এদিকে মেহেদি হত্যার মামলার আসামীরা বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি ছাড়ে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২১ সনে কাশিপুর দেওভোগ এলাকায় ওমর ফারুকের ভাই ইমনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। তখন ওই হত্যায় মেহেদিকেও আসামী করা হয়। কিন্তু মেহেদি জামিনে বের হয়ে আসায় তাকে হত্যার জন্য মিশনে নামে ফারুকের কিশোরগ্যাংগ্রুপ। 

 

বিভিন্ন অস্ত্র হাতে নিয়ে তারা সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ছবি ছাড়ে। তাদের অস্ত্র হাতে ছবি দেখে স্থানীয় মানুষজন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। কেননা তারা যে কোন মুহুর্তে বরড় ধরনের ঘটনা ঘটাতে পারে। তাছাড়া নিহত মেহেদির পরিবার নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছে। তাদের উপর যে কোন সময় হামলা চালাতে পারে তারা।    

 

অন্যদিকে এই মেহেদি হত্যার ঘটনায় নিহতের বড় বোন মৌসুমী (২৯) বাদী হয়ে রোববার (৩১ জুলাই) আট জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৪-৫ জনকে আসামী করে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছে। এই হত্যায় জড়িত সোহগকে ধরে স্থানীয় মানুষ জন পুলিশে সোপর্দ করে। গ্রেপ্তারকৃত সোহাগ ফতুল্লা মডেল থানার দেওভোগ শেষ মাথার দুলাল খাঁর পুত্র ও স্থানীয় হোসিয়ারি কারখানার শ্রমিক। 


মেহেদী হত্যাকান্ড মামলায় আসামী করা হয় ওমর ফারুক (২৭), সবুজ (৩০), আরেক আসামী রাসেল ওরফে ভাগিনা রাসেল (২১), মাইকেল (২১), সীমান্ত (২২), শান্ত ওরফে কসাই শান্ত (২১),  জুব্বা (২৩), সঞ্চয় (২১) সহ অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জন। আসামীদের মধ্যে সবুজ ইমন হত্যা মামলার বাদী ছিল। নিহত মেহেদির পরিবারের দাবী আসামীরা এলাকায় দিব্বি ঘুরা ফেরা করছে কিন্তু তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। তাদের অপকর্ম থামাতে হলে এখনি এই আসামীদের গ্রেপ্তারের দাবী জানান নাগরিক সচেতন মহল।

 

ফতুল্লা থানা অফিসার ইনচার্জ শেখ রিজাউল জানান, ‌‘আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।’ এন.এইচ/জেসি
 

এই বিভাগের আরো খবর