বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

সাংবাদিক স্টিকারে শহরে চলে ৫০০ অটোরিক্সা

বটক লাল ভট্ট

প্রকাশিত: ১২ আগস্ট ২০২২  

 

# এটা ব্যবসা মনে করতে পারেন, প্রশাসন না চাইলে ঢুকবেনা : সায়মন

# ষ্টিকারযুক্ত গাড়ির অবৈধ প্রবেশ ঠেকাতে আমরা আরোও বেশি তৎপর : এডি.এসপি

 

 

সাংবাদিক ষ্টিকার ব্যবহার করে কথিত সাংবাদিকদের চাঁদাবাজির ঘটনা  বর্তমানে নারায়ণনগঞ্জে  আলোচিত ঘটনার মধ্যে অন্যতম। এ নিয়ে প্রশাসন ও নড়েচড়ে বসেছে। প্রশাসন এর বাড়তি নজর কথিত এসব সাংবাদিকদের ষ্টিকার সম্বলিত ইজিবাইক এর দিকে। এসব চাঁদাবাজি বন্ধে তৎপরতা বেড়েছে প্রশাসনের। তবে উল্টো চিত্র দেখা যায় সম্পাদক সায়মন এর The Dhaka BD.com নামক একটি অনলাইন পোর্টাল এর ষ্টিকার সম্বলিত ইজিবাইক এর ক্ষেত্রে। 

 


শহরের ইজিবাইক প্রবেশ নিষিদ্ধ এলাকা ঘুরে দেখা যায় অন্যান্য সাংবাদিক এর ষ্টিকারযুক্ত গাড়ি কদাচিৎ দেখা গেলেও সাংবাদিক পরিচয় দেয়া সায়মন এর ষ্টিকার সম্বলিত গাড়ি অহরহ দেখা যাচ্ছে শহরে। প্রবেশ নিষিদ্ধ এলাকায় কিভাবে গাড়ি ঢুকছে এ  ব্যাপারে  জানতে চাইলে The Dhaka BD.com (www.thedhakabd.com) এর ষ্টিকার সম্বলিত এক ইজিবাইক চালক জানান, আমি প্রথমে ১৫০০ টাকা দিয়ে সায়মন ভাই এর ষ্টিকার নিয়েছি। এরপর প্রতি দশ দিন পরপর  ৫০০ টাকা করে  দিতে হয়। অর্থাৎ এই ষ্টিকার বাবদ আমাকে প্রতিমাসে ১৫০০ টাকা দিতে হয়। 

 


তিনি আরো জানান, ষ্টিকারযুক্ত কোনো গাড়ি  যদি শহরে ১টা ও চলে সেটা হবে সায়মন সাংবাদিক এর ষ্টিকারযুক্ত গাড়ি। তিনি অনেক প্রভাবশালী। অন্যদের গাড়ি ধরলেও কেউ আমাদের গাড়ি কখনো ধরেনা।  প্রায় তিন বছর ধরে আমি এই গাড়ি চালাচ্ছি কেউ কখনো বাধা দেয়নি, আর দিবেও না। সায়মন সাংবাদিক এর প্রায় ৫০০ এর উপরে ষ্টিকারযুক্ত গাড়ি আছে। তিনি আরো ষ্টিকার বিতরণ করছেন। কেউ তার ষ্টিকার বিতরণে সক্ষম হলে তাকে কার্ড প্রতি ৫০ টাকা করে দেয়া হয়। 

 


এর ফলশ্রুতিতে বলা যায় শহরের নিয়ম-কানুন, আইনকে তোয়াক্কা না করে সে নিজের চাঁদাবাজির স্বার্থে শহরকে পরিপূর্ণ যানজটমুক্ত করতে ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্থ্  করছেন। শহরে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার অন্যতম অন্তরায় এই সাংবাদিক সায়মন। সাংবাদিক সায়মন এর নিকট এ চাঁদাবাজির ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি যুগের চিন্তাকে জানান, আমি শুধু The Dhaka BD.com এর না, আমি মানবকন্ঠেরও নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি। 

 


আমার কিছু পার্সোনাল গাড়ি আছে। এটা সবাই জানে। আমার পার্সোনাল গাড়ি তো আমার নামেই চলবে। আমার প্রায় ২০ টার মতো গাড়ি আছে। অর্থাৎ তিনি তার চাঁদাবাজির কথা স্বীকার করেছেন। যদিও সংখ্যা কমিয়ে বলেছেন। কারণ তারই ষ্টিকার সম্বলিত এক চালক জানান তিনি নিজেই প্রায় ৫০ টির মতো স্টিকার বিলিয়েছেন। 

 


সাংবাদিক সায়মন আরোও বলেন, আপনি যদি ব্যাবসা করতে চান তাহলে করতে পারেন না? এটা এমনি। আপনিও চাইলে করতে পারেন। অর্থাৎ  তিনি চাঁদাবাজিকে ব্যবসা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন এবং এই বিষয়ে উৎসাহিত করছেন। তিনি আরোও যুক্ত করেন, শহরে গাড়ি ঢোকানোর মতো ক্যাপাসিটি আমার নেই। যদি  প্রশাসন তাদের দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করে তাহলেই তো আর গাড়ি ঢুকতে পারবে না। অর্থাৎ তিনি সরাসরি প্রশাসনকে তাদের দায়িত্ব পালনে অবহেলা নিয়ে কাঠগড়ায় দাঁড় করান।

 

 
পুলিশের দায়িত্ব অবহেলার  ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) জাহেদ পারভেজ এর কাছে জানতে চাইলে  তিনি যুগের চিন্তাকে জানান, প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ যানবাহন চলাচল করছে শহরে অথচ পুরো জেলায়  ট্রাফিকের ট্রাফিকের দায়িত্বে আছে মাত্র ৮৫ জন ট্রাফিক। যা চাহিদার তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল। এছাড়াও রেকার আছে মাত্র ৫টি যেখানে ২০টি রেকার থাকলে সব অবৈধ গাড়ি আটক করতে পারতাম।  

 


এছাড়াও আমাদের কোনো ডাম্পিং জোন নেই। একটা দিয়েছে বিজিবির পাশে কিন্তুু সেখানে পানি জমে আছে। সেটা ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত নয়। এছাড়াও অন্যন্য সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভায় ইজিবাইক ও অটোরিক্সাকে লাইসেন্স দেয়। এখানে এটা দেয়া হয়না। তাহলে আমরা কিভাবে বুঝবো কোনটা বৈধ, কোনটা অবৈধ। এ ব্যাপারে সিটি কর্পোরেশন এর মেয়রকে আমরা রিকোয়েস্ট করেছি। তিনি এটা দেখতেছেন বলেছেন। 

 


তিনি আরোও যুক্ত করেন ইজিবাইক অবৈধ হলে সরকারের উচিৎ এটা আমদানি বন্ধ করে দেয়া। তবে প্রশাসনের দিকে যে আঙ্গুল তুলছে দায়িত্ব অবহেলা নিয়ে সেটা আমরা আমলে নিয়েছি। এসব ষ্টিকারযুক্ত গাড়ির অবৈধ প্রবেশ ঠেকাতে আমরা আরোও বেশি তৎপর এখন। এ তৎপরতা অব্যাহত থাকবে। এন.এইচ/জেসি

এই বিভাগের আরো খবর