বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

সাইনবোর্ডে স্ট্যান্ডে ‘কাইল্লা মাসুদের’ রমরমা চাঁদাবাজি

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৮ নভেম্বর ২০২২  


ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ শহরে প্রবেশ করতে হলে সাইনবোর্ড হয়ে প্রবেশ করতে হয়। তবে ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ চাষাড়া আসতে পাগলা সড়কও ব্যবহার করা হয়। অভিযোগ উঠেছে সাইনবোর্ড মোড়ে বিশাল একটি চক্র চাদাঁবাজিতে মেতে উঠেছে। সেই সাথে প্রভাবশালী মহলের শেল্টারে চক্রটি দিনকে দিন বাড়িয়ে যাচ্ছে তাদের চাদাঁবাজি। কিন্তু ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করার সাহসও পায়না।

 


যুগের চিন্তার অনুসন্ধানে এবার সাইনবোর্ড সিএনজি স্ট্যান্ড নিয়ে চাদাঁবাজদের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। এখান থেকে দৈনিক মোটা অংকের টাকা চাঁদা উঠে থাকে। কামাল হোসেন মাসুদ ওরফে কাইল্লা মাসুদের নেতৃত্বে এখানে বিশাল একটি চাঁদাবাজ চক্র গড়ে উঠেছে বলে জানান একাধিক দোকানদার।

 

 

দোকানপাট সরিয়ে সাইনবোর্ডে সিএনজি স্ট্যান্ড বানান একাধিক চাদাঁবাজ মামলার আসামী কাইল্লা মাসুদ। জানা যায়, প্রতিদিন সকাল থেকে ৭ টা থেকে ৮ টা পর্যন্ত চাঁদা তুলেন কামাল হোসেন মাসুদ। সাইনবোর্ড স্ট্যান্ডে চাদাবাজি নিয়ে  বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। তাছাড়া মাসুদসহ তার সহযোগীরা র‌্যাবের জালে একাধিকবার গ্রেপ্তার হন।  

 

 

একাধিক সিএনজি চালক জানান, দীর্ঘ দিন যাবত মাসুদের নেতৃত্বে এখানে চাদাঁবাজ চক্র গড়ে উঠেছে। সাইনবোর্ড থেকে ডগাইর রোডে ব্রীজের পাশেই সরকারী জায়গায় অবৈধ ভাবে বাজার স্থাপন করে চাঁদাবাজি করেন তারা। সেই সাথে চাঁদার টাকা কালেকশন করে মাসুদ, মন্জু। দৈনিক কারেন্ট বিল ২০০ টাকা, আর দোকান প্রতি এডভান্স ৪০ হাজার টাকা, সাইনবোর্ড -কোনাপাড়া অটোস্ট্যান্ড থেকে প্রতিদিন গাড়ি ৬০ টাকা করে চাঁদা নেন মাসুদ।

 

 

এছাড়া সিএনজি থেকে প্রতিদিন ১০০ টাকা করে নেন। আবর কারো কাছ থেকে ৫০ টাকা করেও চাঁদা নেন। এমনকি মাসে ১২০০ থেকে ১৫০০ করে চাঁদা তুলেন এখানকার চাঁদাবাজ চক্র।  চাদাঁবাজ মাসুদের সাথে সহযোগী হিসেবে রয়েছেন- কবির, রেজু, মঞ্জু, সেলিম ওরফে টোকাই সেলিম, লিটু। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে সরকারী খাস জায়গায় দখলেরও অভিযোগ রয়েছে।

 

 

এদিকে জানা যায়, গত বছরের কামাল হোসেন মাসুদ র‌্যাবের অভিযানে গ্রপ্তার হন। তিনি এর আগেও একাধিকবার র‌্যাবের জালে গ্রেপ্তার হয়। এছাড়া আরও অভিযোগ রয়েছে হাইওয়ে রোড হওয়ায় এখানে বসে মাদক কারবারি, ছিনতাইকারীদের শেল্টার দিয়ে নানা অপকর্ম করে থাকেন একাধিক চাদাঁবাজ মামলার আসামী মাসুদ। তবে তার দাবী তিনি ২০১৮ সনের আগ পর্যন্ত এখান থেকে চাদাঁবাজি করতেন। তিনি প্রশাসন এবং বিশেষ লোকদের টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে এই স্ট্যান্ডে চাদাঁবাজি করে আসছেন।

 

 

গত বছরের ৩ জুন চাঁদাবাজ দমনে র‌্যাব-১১ নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে; সাইনবোর্ড থেকে মাসুদসহ তার সহযোগী চাদাঁবাজদের গ্রেপ্তার করে। র‌্যাব-১১ এর একটি আভিযানিক দল নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন সাইনবোর্ড এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে পরিবহনে চাঁদাবাজি করার সময় ০২ জন চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা হলেন  মো. কামাল হোসেন ওরফে কাইল্লা মাসুদ (৪২), খ। মোঃ রাকিব হোসেন (২০।  

 

 

তখন প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়,একটি চাঁদাবাজ চক্র নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন সাইনবোর্ড এলাকায় ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে চলাচলরত পরিবহনের চালক ও হেলপারদের গুরুতর আঘাতের ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করে জোরপূর্বক পরিবহন প্রতি দৈনিক ৫০/- থেকে ১০০/- টাকা করে অবৈধভাবে চাঁদা আদায় করে আসছিল। তখন অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তরা করা হয়।

 

 

জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোনকল রিসিভ করেননি।

 

 

চিহ্নিত চাঁদাবাজ  মাসুদ জানান, ‘তিনি ২০১৮ সনের আগ পর্যন্ত এই চাদাঁবাজির সাথে জড়িত ছিলেন কিন্তু এখন নাই। তিনি প্রশাসন ও বিশেষ পেশার লোকদের ম্যানেজ করে এই অপকর্ম করে আসছেন। সেই সাথে এর আগে র‌্যাবের হাতে একাধিকবার গ্রেপ্তারও হন বলে নিজে স্বীকার করেন।’  এন.এইচ/জেসি

এই বিভাগের আরো খবর