বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১১ ১৪৩১

সুতার সংকট, বিপাকে পোশাক খাত!

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ১৭ আগস্ট ২০২১  

আন্তর্জাতিক বাজারে তৈরী পোশাক রপ্তানিতে বহুদিন হলো শুল্কমুক্ত সুবিধা হারিয়েছে বাংলাদেশ।  তাই অতিরিক্ত শুল্কে পণ্য রপ্তানি করতে গিয়ে অনেকটা পিছিয়ে গেছে দেশের গার্মেন্টস শিল্প। তাছাড়া চলতি মাসের শুরুতে বাংলাদেশকে তৃতীয় স্থানে নামিয়ে পোশাক রপ্তানিতে দ্বিতীয় শীর্ষে উঠে আসে ভিয়েতনাম। এতে সারাদেশে সৃষ্টি হয়েছিলো নানান আলোচনা এবং সমালোচনার।

 

তবে সম্প্রিতি এ-খাতে প্রচুর ক্রয়াদেশ আসতে থাকায় আশার আলো দেখেছিলো দেশের গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা। কিন্তু এখন পর্যাপ্ত অর্ডার থাকলেও সুতার মূল্যবৃদ্ধি এবং সংকটের কারণে, চাহিদা মাফিক পোশাক তৈরী করতে পারছেনা কারখানা মালিকরা। এতে সামনে অনেক ক্রয়াদেশ বন্ধ হয়ে হয়ে যাবে বলেও অশংকা করছে রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠানগুলো। এদিকে, এই (সুতা) সংকটের ফলে গার্মেন্টস শিল্পের জন্য প্রসিদ্ধ অঞ্চল নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে বলে জানা গেছে।

 

ব্যবসায়ীদের দাবি, মূলত পোশাক রপ্তানিতে শীর্ষে থাকা চীন এবং বাংলাদেশের স্পিনিং মিলের মালিকদের জন্যই এই কৃত্রিম সুতার সংকট ও মূল্যবৃদ্ধি দেখা দিয়েছে। গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের সংগঠন বি.কে.এম.ই.এ’র প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হাতেম জানান, ‘আমাদের গার্মেন্টসগুলোতে যখন প্রচুর অর্ডার আসল, ঠিক তখই স্পিনিং মিলের মালিকরা কৃত্রিম ভাবে সুতার দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। পাশাপাশি চীনা ব্যবসায়ীরাও ভারত থেকে সকল (শতভাগ কটন) সুতা কিনে নিয়ে স্ট্রক করে ফেলেছে। তাই প্রচুর ক্রয়াদেশ আসার পর আমরা যেই সুযোগটা দেখেছিলাম সেটি এখন অনেকটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। কারণ আমরা সুতার অভাবে ঠিকমতো কাপড় তৈরী করতে পারছিনা। আর এর জন্য আমি সবচেয়ে বেশি স্থানীয় স্পিনিং মিলের মালিকদেরই দায়ী করবো। তাদের লোভের ফলে আমাদের বড় একটি সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে’।

 

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় (বিসিক) অবস্থিত এম.বি নিট ফ্যাশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ হাতেম আরো বলেন, ‘চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে আমার তিনটি অর্ডার শিপমেন্ট করার কথা। কিন্তু আমাদের এখানে সুতার সংকটের কারণে এই তিনটি শিপমেন্টের সবকটিই এখন অনিশ্চয়তায় আছে। আমার বায়ার (ক্রেতা) ইতিমধ্যেই আমার কাছে জানতে চেয়েছে যে, আমি সময় মতো পোশাক পাঠাতে পারবো কিনা; নইলে সে অর্ডার বাদ দিয়ে দেবে। আর এই অর্ডার যদি বাদ দিয়ে দেয়, তাহলে আমার প্রায় ৩ লাখ ২৭ হাজার ডলার আর্থিক ক্ষতি হয়ে যাবে। যা কাটিয়ে উঠতে অনেক সময় লাগবে।

 

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক্রোনী এপ্যারেলস লিমিটেডের এক কর্মকতাও জানান একই কথা। তিনি বলেন, আমাদের এখানে প্রতিদিন কাপড়ের প্রয়োজন প্রায় ১০০ টন। তবে সুতার অভাবে দেখা যাচ্ছে ১০ টন কাপড়ও তৈরী করতে পারছিনা। এতে শিপমেন্টে সমস্যা হওয়ার পাশাপাশি অনেক ক্রেতাদের ক্রয়াদেশও গ্রহন করতে পারছিনা। তবে সুতার সরবরাহ স্বাভাবিক হলে এবং দাম কমে গেলে আশাকরি এই সমস্যাটি সমাধান হয়ে যাবে। আর আমারা এ বিষয়ে বি.কে.এম.ই.এ কে বিষয়টি জানিয়েছি। তারা স্পিনিং মিলের মালিকদের সাথে বসে অবশ্যই বিষয়টি সমাধান করবে।  
 

এই বিভাগের আরো খবর