Logo
Logo
×

রাজনীতি

সেলিম ওসমানকে নিয়ে দোটানায় আ.লীগ

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৮:০৩ পিএম

সেলিম ওসমানকে নিয়ে দোটানায় আ.লীগ
Swapno

 

# আমাদের করার কিছুই নেই : আবদুল হাই
# সেটা সময় আসলেই বলা যাবে : আনোয়ার হোসেন
# দলীয় প্রার্থী কিংবা বাধা না থাকায় তার পক্ষেই কাজ করব : কাজিমউদ্দিন
# সে বিষয়ে আমরা কোন সিদ্ধান্ত নেইনি : আলী রেজা উজ্জল

 

 

প্রায় ১০ বছর যাবৎ নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মাঠ পর্যায়ের নেতা, কর্মী ও সমর্থকগণ দাবি করে আসছে জাতীয় নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী দেওয়ার জন্য। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে আওয়ামী লীগের এসব অবহেলিত ও নির্যাতিত ভক্তগণ এই এলাকার আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অস্তিত্ব সংকটের বর্ণনা দিয়ে তা দলীয় প্রধানের দৃষ্টিগোচর করারও অনুরোধ জানান। তারা নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের কর্ণধারদের কাছেও ধর্ণা দিয়েছেন বহুবার।

 

এইবার তাদের সেই স্বপ্ন ও আশা বাস্তবে রূপ নিবে বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের প্রথম সারির নেতৃবৃন্দ। কেন্দ্র থেকেও শুনিয়েছিলেন আশার বাণী। আর তাদের সেই আশার বাণীতে এখানকার আওয়ামী লীগ ভক্তরা নতুন করে আবার দলকে সাজানোর স্বপ্ন বুনতে শুরু করে। কিন্তু শেষ মুহুর্তে সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন না হওয়ায় আশাহত হয়ে বিমর্ষ হয়ে পড়েন এখানকার তৃণমূল আওয়ামী লীগ।

 

তবে সারা দেশের ৩০০টি আসনের মধ্যে ২৯৮টি আসনে দলীয় প্রার্থী দিয়ে এই আসনে আওয়ামী লীগ তাদের দলীয় প্রার্থী না দেওয়ায় এখানকার আওয়ামী লীগ নেতা, কর্মী ও সমর্থকরা পড়েছেন বিপদে। একটি অংশ বলছেন যেহেতু নেত্রী ইচ্ছে করেই এই আসনে দলীয় প্রার্থী দেননি, তারমানে তিনিও চান এখান থেকে জাতীয় পার্টি-ই নির্বাচিত হোক। আরেকটি অংশ বলছেন আমাদের দলীয় প্রার্থী না দিলেও জাতীয় পার্টির জন্য কাজ করতেও দলীয় কোন নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।

 

তাই আমরা জাতীয় পার্টির হয়ে কাজ করতে বাধ্য নই। তবে দলীয় নির্দেশ আসলে সে অনুযায়ী কাজ করবো। আরেকটি অংশ বলছে, এখানকার জাতীয় পার্টির মাধ্যমে আমরা বহু নির্যাতিত হয়েছি। অথচ আমাদের প্রধান শত্রু বিএনপিও আমাদের ভোট দেয় কিন্তু এখানকার জাতীয় পার্টি আমাদের কখনও ভোট দেয়নি। বরং প্রকাশ্যে বিরোধিতা করেছে। তাই এই নির্বাচনে আমাদের কোন ভূমিকা থাকবে না।

 

অন্যদিকে এই নির্বাচনে দলীয় প্রধান থেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার জন্য আওয়ামী লীগের নেতাদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পথ উম্মুক্ত করে দিয়েছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা যায়। কিন্তু তারপরও স্বতন্ত্র হয়ে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে কোন আওয়ামী লীগের প্রার্থীতা না থাকায় অনেকটাই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীগণ। তাদের ধারণা নির্বাচনে হার-জিত থাকতেই পারে, কিন্তু হারার আগেই (ভোটের আগেই) হেরে গেছেন নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের নেতারা।

 

সব কিছু মিলিয়ে এবারের নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের আওয়ামী লীগের নেতা কর্মী ও সমর্থকদের কি ধরণের ভূমিকা থাকবে তা নিয়ে ছিল মিশ্র প্রতিক্রিয়া। নির্দিষ্ট কোন নির্দেশনা না থাকায় অনেকেই তাদের নিজেদের মতো করে পথ বেছে নিয়েছেন তারা। এবারের নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামী লীগের কি ভূমিকা থাকবে এবং জাতীয় পার্টির হয়ে কাজ করবে কি না, এ ধরণের প্রশ্ন জাগছে আওয়ামী লীগ ভক্তদের মনে।

 

নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমাদের নেত্রী আমাদের এখনও কোন নির্দেশনা দেননি। তিনি নির্দেশনা দিলে তখন বুঝা যাবে আমাদের কি ধরণের ভূমিকা হতে পারে। জাতীয় পার্টির প্রার্থী সেলিম ওসমানের লাঙ্গলের পক্ষে কাজ করবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা সময় আসলেই বলা যাবে। আমরা এই বিষয়ে এখনও কোন কিছু ভাবিনি।’

 

এই বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে আমরা যারা আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে চেয়েছিলাম নেত্রী আমাদের দেয়নি। তাই এই আসনে আমাদের করার কিছুই নেই। এই বিষয়ে কেন্দ্র থেকেও আমাদের জন্য কোন প্রকার নির্দেশনা আসেনি। যদি কেন্দ্র কোন নির্দেশনা দেয় তাহলে সেই অনুযায়ীই আমরা কাজ করবো।’

 

এই বিষয়ে জানতে চাইলে বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব কাজিম উদ্দিন প্রধান বলেন, ‘এই আসন থেকে অনেকেই এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচন করতে চেয়েছিল। কিন্তু নেত্রী ৩০০টি আসনের মধ্যে ২৯৮টি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করলেও আমাদের এই আসনটিতে কাউকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেননি। তাছাড়া এখান থেকে আওয়ামী লীগের কোন নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেও নির্বাচনে অংশ নেয়ার চেষ্টা করেননি।

 

তাই আমি মনে করি আমরা যারা বন্দরবাসী আছি তাদেরকে এই আসনে যিনি নির্বাচিত হবেন তাকে নিয়েই কাজ করতে হবে। তাছাড়া গত দুই দফা উনি (সেলিম ওসমান) এই আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। ওনার সাথে আমরা কাজ করে অভ্যস্থ, আমাদের দলীয় কোন প্রার্থী থাকলে বিষয়টি নিয়ে কথা থাকতো। দলীয় কোন নির্দেশনা না থাকায় অনেক ভেবে চিন্তে বন্দর আওয়ামী লীগের অনেক নেতা-কর্মী ও জনপ্রতিনিধিগণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নির্বাচনে সেলিম ওসমানের পক্ষে কাজ করবে।’


মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলী রেজা উজ্জল বলেন, ‘কেন্দ্র থেকে আমাদের যেভাবে নির্দেশনা দিবেন আমাদের সেভাবেই কাজ করতে হবে। আমরা এর বাইরে যেতে পারবো না। এই নির্বাচনে আমরা জাতীয় পার্টির হয়ে কাজ করবো কি না সে বিষয়ে আমরা কোন সিদ্ধান্ত নেইনি। আমাদের জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদের নিদের্শনার জন্য অপেক্ষায় আছি। কেন্দ্র তাদের কি ধরণের নির্দেশনা দেন আমরা সে অনুযায়ীই কাজ করবো।’ এস.এ/জেসি
 

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন