শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

সোনারগাঁয়ে অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের পদায়নে ক্ষুব্ধ তৃণমূল

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১ জুন ২০২৩  

 

সারাদেশব্যাপী আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মোতাবেক ইউনিট কমিটি গঠনে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কঠোর নির্দেশনা চলমান। এমনকি চুলচেড়া বিশ্লেষণের মাধ্যমে হাইব্রিড শ্রেণির নেতাদের চিহ্নিত করণের মাধ্যমে তৃণমূলের নেতাদের মূল্যায়নের নির্দেশনা চলমান রয়েছে। সেখানে সোনারগাঁ থানা আওয়ামীলীগ তৃণমূলের প্রত্যাশাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বিতর্কিত অনুপ্রবেশকারী অরাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব ব্যবসায়ীকদেরকে এমনকি স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে থানা আওয়ামীলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে পদায়ন করা হয়েছে এমনও অভিযোগ রয়েছে।

 

মূলত সোনারগাঁ থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের পছন্দের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় জেলা আওয়ামীলীগের নিকট আজব কমিটি প্রস্তাবনা করা হয়েছে। তাদের এই আজব কমিটির বিরুদ্ধে তৃণমূল নিরুপায় হয়ে একের পর এক অভিযোগ নিয়ে জেলা আওয়ামীলীগের নিকট দ্বারস্ত হচ্ছে।

 

সূত্র বলছে, সোনারগাঁ থানা আওয়ামীলীগের প্রস্তাবিত কমিটি সর্বত্র আলোচিত হয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য এসরোটেক্স গ্রুপের কর্ণধার গার্মেন্টস ব্যবসায়ীকে সোনারগাঁ থানা আওয়ামীলীগের প্রস্তাবিত কমিটি কোষাধ্যক্ষ পদে ফারুক হোসেন ভূঁইয়াকে পদায়ন করায় সোনারগাঁ থানা আওয়ামীলীগের অনেক নেতারাই চোখ কপালে উঠেছে।

 

তবে সাবেক পূর্ণাঙ্গ কমিটির কোষাধ্যক্ষ পদে থাকা আওয়ামীলীগের ত্যাগী প্রবীণ নেতা রশিদ মোল্লাকে উক্ত পদে পদায়ন না করলেও কমিটির সম্মানজনক স্থানে পদায়ন করায় তীব্র ক্ষোভ চলমান রয়েছে। প্রস্তাবিত কমিটিতে কোষাধ্যক্ষ পদে থাকা ফারুক হোসেন নিয়ে রয়েছে বিতর্ক কখনো জাতীয় পার্টির সাথে কখনো আওয়ামীলীগের সখ্যতার মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি হওয়ার ডাল হিসেবে ব্যবহার করে থাকে।

 

এর আগে জেলা পরিষদের সদস্য থাকা অবস্থায় জাতীয় পার্টির সাংসদ লিয়াকত হোসেন খোকার সাথে সখ্যতা ছিল এবং সংসদ খোকার পত্নীকে সোনারগাঁ পৌরসভার মেয়র প্রার্থী হিসেবে নাগরিক কমিটি সমর্থনও দেন। কিন্তু সোনারগাঁও জি এর স্কুলের নামফলক ভাঙা নিয়ে বিরোধ বাজে সাংসদ খোকার সাথে। এই ঘটনার পর থেকেই গুঞ্জন শোনা যায় আগামী পৌরসভা নির্বাচনে ফারুক হোসেনও মেয়র হতে পারেন।

 

সোনারগাঁয়ের বেশকয়েকজন নেতার মতে সে মেয়র হওয়ার খায়েশ মেটাতেই মূলত বিশাল আঁকারে অর্থের বিনিময়ে আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করে আওয়ামী লীগকে ডাল হিসেবে ব্যবহার করতে চান এই ব্যবসায়ী। এছাড়া সোনারগাঁ থানা আওয়ামীলীগের প্রস্তাবিত কমিটিতে ফরিদপুরের সন্তান থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক কায়সার হাসনাতের আত্মীয় আব্দুল মতিন দুলালকে ৫নং সহ-সভাপতি পদে পদায়ন করা নিয়ে সোনারগাঁয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ চলমান রয়েছে।

 

কারণ তিনি স্থায়ী ভাবে নারায়ণগঞ্জে বসবাস করেন। সোনারগাঁয়ে একাধিক ত্যাগী প্রবীণ নেতা থাকা সত্ত্বেও অন্যত্র বসাবাসকারী নেতাকে মূল্যায়ন নিয়ে ক্ষোভের বহিঃবিকাশ বেড়েই চলছে। এছাড়া মূলত আব্দুল মতিন দুলাল কায়সার হাসনাতদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল ডাইংয়ের কর্মকর্তা ছিলেন। তারপরও নিজের পারাবারিক লোক দ্বারা গুরুত্বপূর্ণ পদ দখলের স্বার্থে ফরিদপুরের সন্তান ও নারায়ণগঞ্জের বর্তমান বাসিন্দাকে সোনারগাঁ থানা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি পদে আদিষ্ট করেছে থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক কায়সার।

 

অপরদিকে সোনারগাঁ আওয়ামীলীগের প্রস্তাবিত কমিটিতে সর্বত্র আলোচিত হয়েছে এবং তৃণমূলসহ সোনারগাঁয়ের আওয়ামীলীগ নেতারা অবাক হয়েছে ২৪-২৫ বছরের এক যুবক রাসেল উদ্দিন রাসেল নামে তাকে থানা আওয়ামীলীগের সদস্য করা হয়েছে। কারণ সে শম্ভুপুরা ইউনিয়নের পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী মরহুম নাসির উদ্দিনের ছেলে। নাসির উদ্দিন মাসেক খানেক আগে পরলোকগমন করেন তিনি ছিলেন থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক কায়সার হাসনাতের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠতম।

 

মূলত নাসির উদ্দিনের অবর্তমানে তার ছেলেকে রাজনৈতিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত করতেই থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক কায়সার হাসনাতের বদৌলতে রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত না থাকা এই যুবককে ছেলেকে থানা আওয়ামীলীগের সদস্য পদ ভাগিয়ে নেন। তবে সোনারগাঁ থানা আওয়ামীলীগের কমিটিতে একাধিক কেন্দ্রীয় নেতাকে রাখা হলেও তাদেরকে থানা আওয়ামীলীগের সদস্য পদে হিসেবে স্থান না দিয়ে উপদেষ্টা পদে রাখা করা হয়েছে। তাদের এমন কান্ড তৃণমূলের দৃষ্টিকুটু মনে হয়েছে।

 

কারণ সোনারগাঁয়ের কেন্দ্রীয় রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত নেতারা তরুন রাজনীতির সম্পৃক্ত তারপরও তাদের অজান্তেই উপদেষ্টা করা হয়েছে। এছাড়া সোনারগাঁ থানা আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে ত্যাগী সক্রিয় রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত নেতাদের মাইনাস করে অরাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব ব্যবসায়ীদের কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে স্থান করে দেয়া হয়েছে। অরাজনৈতিক ব্যাক্তিত্বদের পদায়নে সোনারগাঁয়ের তৃণমূল নেতারা বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছে।

 

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই বলেন, আমরা মিডিয়ার মাধ্যমে সকল কিছুই দেখতে পেরেছি। এগুলো নিয়ে আমরা বসব যাচাই বাছাই করব। এ সমস্ত অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নেতাদের রাখা হবে না তারা অবশ্যই বাদ যাবে।এস.এ/জেসি
 

এই বিভাগের আরো খবর