শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

সোনারগাঁয়ে সফিয়ার সংসার আশ্রয়ণ প্রকল্পের নতুন ঘর পাওয়ার বাসনা

আশরাফুল আলম

প্রকাশিত: ৩১ জুলাই ২০২২  

 

শীত, গ্রীস্ম, বর্ষা সারা বছরই চিতৈই পিঠা  বিক্রিতেই চলে জীবন সংগ্রামী বিধবা নারী সফিয়ার (৫৫) একলা সংসার। বিয়ের প্রায় ৯ বছর পর তিন সন্তানের জনক সফিয়ার স্বামী আব্দুল খালেক মারা যায়। স্বামীর কোন ভিটে মাটি না থাকায় সোহরাব হোসেন, জোনাব মিয়া ও শরীফ হোসেন নামে ছোট ছোট তিনটি পুত্র সন্তান রেখে স্বামী মারা যাওয়ার পর সফিয়া বেগম একেবারেই অসহায় হয়ে পড়েন। 


সে সময় সফিয়ার নিকট আত্নীয় স্বজনের কিছুটা সহায়তা পেলেও কয়েক দিন পর তা বন্ধ হয়ে যায়। নিরুপায় মা সফিয়া বেগম ছোট ছোট তিন পুত্র সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে সোনারগাঁ উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের মঙ্গলেরগাঁও এলাকায় তার বাবা মৃত একরাম আলীর বাড়িতে ফিরে আসে। প্রথম প্রথম সফিয়ার দুই ভাই, সামর্থ অনুযায়ী বোন ভাগিনাদের লালন পালনের জন্য সহায়তার চেষ্টা করেন। এক সময় ভাইদের সংসারে অভাব অনটন থাকায় তাদের সহায়তা বন্ধ হয়ে যায়। পরে নিকট আত্নীয়সহ ও অন্য কারো সাহায্য সহায়তা না পেয়ে চার জনের সংসার চালাতে হিমসিম খেতে হয় মা সফিয়ার।

 

পরে ছোট্ট তিন পুত্র সন্তানের মুখে খাবার তুলে দিতে প্রত্রিক ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়া জীবনের শেষ সম্ভল মাত্র তিন শতাংশ জায়গা অন্যত্র বিক্রি করে দেন অসহায় এই নারী সফিয়া। দীর্ঘদিন অন্যের বাড়ীর আস্রীতা হয়ে সহায় সম্ভলহীন এই নারী মানুষের বাড়ীতে ঝিয়ের কাজ করে এক বেলা খেয়ে না খেয়ে সন্তানদের বড় করে তুলেন তিনি। সন্তানরা এখন বড় হয়ে মুন্সীগঞ্জের বিক্রমপুর এলাকায় কাজ কর্ম করে আলাদা সংসারে আয় উপার্জন করে অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হলেও মায়ের খবর কেউ রাখেনা। স্বামী ও সন্তানহারা সফিয়া বেগম এখনও পিঠা বিক্রি করে চালিয়ে যাচ্ছে তার জীবন সংগ্রাম।


দ্রব্য মূল্যের উর্ধগতির এই সময়ে প্রতিদিন সকাল বিকাল দুই বেলা উপজেলার মঙ্গলেরগাঁও বটতলা বাজারে পিঠা বিক্রি করে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা আয় করেন। প্রতিমাসে যে টাকা আয় হয় তা দিয়ে ভাড়া বাসায় থেকে কোন রকম চলে তার জীবন। দেশের প্রায় সব জেলা উপজেলায় মানণীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া আশ্রয়ন প্রকল্পের অধীনে ভূমিহীন অসহায় অনেক মানুষ জমিসহ নতুন ঘর পেলেও সফিয়ার ভাগ্যে জোটেনি আশ্রয়ন প্রকল্পের একটি ঘর। স্বামী, সন্তানহারা সফিয়া আক্ষেপ করে জানান, শুনেছি আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভূমিহীন, অসহায় গরীব মানুষকে জমি ও একটি করে নতুন পাকা ঘর দেয়। একটু জমি ও নতুন ঘরের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও নেতাকর্মীদের কাছে কাগজপত্র নিয়ে অনেক দৌড়ঝাপ করেছি। কিন্তু কেউ আমাকে একটি ঘরের ব্যবস্থা করেও দেয় নাই। জানিনা সরকারের দেয়া ঘর আমার ভাগ্যে আছে কিনা? সরকারের দেয়া একটু জায়গা ও একটি নতুন ঘর পেলে অনেক খুশি হইতাম।এমই/জেসি  
 

এই বিভাগের আরো খবর